শিরোনাম
◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে

প্রকাশিত : ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৮:৫৩ সকাল
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৮:৫৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিজয় দিবসের করণীয়

মুফতি আখতার ফয়জী : আজ ১৬ই ডিসেম্বর। জাতীয় বিজয় দিবস। বাংলাদেশের মানুষের জন্য আনন্দের দিন। আমাদের মহান স্বাধীনতার বিজয় দিবস। মুসলিম রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব হল, তার ভূখন্ড ও মাতৃভূমিকে ভালবাসা। এটাই প্রিয় নবীজীর সা.-এর উত্তম আদর্শ। মহানবী সা. যখন স্বীয় মাতৃভূমি মক্কা নগরী ত্যাগ করে পাড়ি জমাচ্ছিলেন ইয়াছরিবের (মদীনার ) প্রতি, তখন তাঁর চোখ থেকে অশ্রুর বন্যা বয়ে যাচ্ছিল এবং মনে মনে বলেছিলেন, হে মক্কা! আমি তোমাকে ভালবাসি। কাফেররা নির্যাতন করে যদি আমাকে বের করে না দিত, কখনো আমি তোমাকে ত্যাগ করতাম না। (তাফসীরে ইবনে কাসীর, ৩য় খ-, ৪০৪ পৃষ্ঠা)

হাদীস শরীফে রয়েছে, নবীজী সা. মদিনা নগরীকে খুব ভালবাসতেন। কোন সফর থেকে প্রত্যাবর্তনকালে মদীনার সীমান্তে উহুদ পাহাড় চোখে পড়লে নবীজীর চেহারাতে আনন্দের আভা ফুটে উঠত এবং তিনি বলতেন, এই উহুদ পাহাড় আমাদেরকে ভালবাসে এবং আমরাও উহুদ পাহাড়কে ভালবাসি। (সহীহ বুখারী, ২য় খ-, ৫৩৯ পৃষ্ঠা/ সহীহ মুসলিম, ২য় খ-, ৯৯৩ পৃষ্ঠা)

সুতরাং দেশপ্রেম ও মাতৃভূমির প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা হচ্ছে ইসলামসম্মত বিশেষ সহজাত গুণ। সুতরাং দেশের বিজয় দিবস আমাদের গৌরব, অহংকার। এখন জানার বিষয় হলো, বছরের চাকা ঘুরে যখন ১৬ই ডিসেম্বর, ২৬ মার্চ আসবে, তখন সে দিনগুলোতে কুরআন ও সুন্নাহর দৃষ্টিতে আমাদের করণীয় কী ? বিজয় সম্পর্কে কুরআনের দু’টি সুরা আমাদের সামনে রয়েছে। একটি সুরাহ ফাতহ (বিজয়) এবং অপরটি সুরাহ নাসর (সাহায্য)। সুরা নাসর-এ মহান আল্লাহ বলেন, “যখন আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য ও বিজয় আসবে এবং দলে দলে লোকদেরকে ইসলামে প্রবেশ করতে দেখবেন, তখন স্বীয় পরওয়ারদেগারের প্রশংসার সাথে তাসবীহ পড়ুন এবং আল্লাহর নিকট ইস্তিগফার করুন। এখানে তিনটি কর্তব্যের কথা বর্ণনা করা হয়েছে : ১. এই দিনে বিজয়ের জন্য আল্লাহর মহ্ত্ত্ব, পবিত্রতা ও বড়ত্ব বর্ণনা করা। ২. আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা। ৩. মহান আল্লাহর দরবারে কায়মনোবাক্যে আত্মনিবেদন ও ইস্তিগফার করা। যে মক্কা নগরী থেকে আল্লাহর নবী বিতাড়িত হলেন, ১০ বছর পর শত-সহ¯্র সাহাবায়ে কেরামের বিশাল বহর নিয়ে যখন পবিত্র মক্কা নগরীতে প্রবেশ করলেন, তখন তিনি বিজয় মিছিল-শোভাযাত্রা কিছুই করেননি। গর্ব-অহংকার করেননি। বাদ্য-বাজনা বাজাননি। নবীজীর অবস্থা কি ছিল? আল্লাহর নবী একটি উষ্ট্রীর উপর আরোহণাবস্থায় ছিলেন, তাঁর চেহারা ছিল নিম্নগামী। অর্থাৎ বিনয়ের সাথে তিনি মক্কায় প্রবেশ করেন। এরপর সর্বপ্রথম তিনি উম্মে হানীর ঘরে প্রবেশ করেন। সেখানে আট রাকাত নফল নামায আদায় করেন। এই নামাযকে বলা হয় ‘বিজয়ের নামায’। এতে বিজয় দিবসে মহান আল্লাহর দরবারে শুকর আদায়ে এভাবে নফল নামায পড়া ইসলামের শিক্ষা বলে পরিগণিত হয়।

এরপর নবীজী সা. হারাম শরিফে এসে সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে বয়ান প্রদান করেন। তিনি বলেন, হে মক্কার কাফের সম্প্রদায় ! তের বছর ধরে আমার উপর, আমার পরিবারের উপর, আমার সাহাবাদের উপর নির্যাতনের যে স্টিম রোলার চালিয়েছ, এর বিপরীতে আজকে তোমাদের কি মনে হয়, তোমাদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করব? তারা বলল, হ্যাঁ, আমরা কঠিন অপরাধী। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস, আপনি আমাদের উদার ভাই, উদার সন্তান, আমাদের সাথে উদারতা, মহানুভবতা প্রদর্শন করবেন।

এটাই আমরা প্রত্যাশা করি। তখন আল্লাহর নবী সা. বললেন— হ্যাঁ, আমি আজ তোমাদের সকলের জন্য হযরত ইউসুফ আ.-এর মত সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করলাম। যাও তোমাদের প্রতি আজ কোন অভিযোগ নেই। তোমাদের থেকে কোন প্রতিশোধ নেয়া হবেনা। (সুনানে বাইহাকী, ৯ম খ-, ১১৮ পৃষ্ঠা) প্রধান মুফতি, জামিয়া মাদানিয়া রওজাতুল উলুম কুমিল্লা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়