বিল্লাল হোসেন, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) : গাজীপুরের কালীগঞ্জে শ্বশুর বাড়িতে ডেকে নিয়ে গরু ব্যবসায়ী জামাতা মোশারফ হোসেনকে (৪৫) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ করেছে নিহতের পরিবার।
নিহত মোশারফ উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের বড়গাঁও পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত আয়েজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি স্থানীয়ভাবে গরু ব্যবসায়ী ছিলেন। এছাড়াও তিনি ওই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড যুবদলের সহ-সভাপতি ছিলেন বলেও জানান নিহতের পরিবার।
পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সোমবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলম চাঁদ।
নিহতের ভাই স্কুল শিক্ষক মো. মোফাজ্জল হোসেন জানান, মোশারফ তার ফুফু শ্বাশুড়ীর কাছে দেড় লক্ষ টাকা পেত। সেই টাকা থেকে তার স্ত্রী পারভিন আক্তার (৩২) তাকে না জানিয়ে ফুফু শ্বাশুড়ীর কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে নিয়ে খরচ করে ফেলে।
এ নিয়ে গত তিনদিন আগে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ফোনে কথা কাটাকাটি হয়। পরে তার স্ত্রী রাগ করে সন্তান নিয়ে একই ইউনিয়নের বড়গাঁও (রামুইড়া পাড়া) গ্রামে বাপের বাড়িতে চলে যায়।
গত রোববার শ্বশুরবাড়ি থেকে ফোন করা হয় তার সন্তান অসুস্থ্য। খবর পেয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় শ্বশুর বাড়িতে যায় সন্তানকে দেখতে। কিন্তু শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার সাথে সাথে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মোশারফের উপর হামলা চালায় ওই বাড়ির লোকজন। হামলার শিকার হয়ে এক পর্যায়ে সে পালানোর চেষ্টাও করে। কিন্তু তাকে দৌড়ে ধরে মারধর করে।
পরে তার অবস্থা খারাপ হয়ে গেলে স্থানীয় এক ডাক্তার নিয়ে আসে। ওই ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে শ্বশুর বাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়।
সেখান থেকে স্থানীয় এক গরু ব্যবসায়ী মোশারফের বাড়িতে ফোন করলে প্রথমে পরিবারের লোকজন আসে এবং পরে থানায় খবর দেওয়া হয়।
তিনি আরো জানান, অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবেই তার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। মরদেহ দাফনের পর তিনি নিজে বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করবেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে স্থানীয়রা জানায়, ২০১২ সালের ২৮ মে পুলিশের উপস্থিতিতে প্রতিপক্ষের হামলায় খুন হয় বড়গাঁও গ্রামের বালু ব্যবসায়ী মো. মামুন ভূঁইয়া। সেই খুনের মামলার ৩নং স্বাক্ষী ছিলেন মোশারফ হোসেন। সেই মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন। হতে পারে সেই মামলার তদন্ত কাজ ব্যাহত করতে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
আর মামুন হত্যা মামলার ২নং আসামি স্থানীয় হেকিম মেম্বার মোশারফের হত্যাকে ভিন্নখাতে নিয়ে তার পরিবারকে অপমৃত্যুর মামলা দায়েরের জন্য চাপ প্রয়োগ করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আলম চাঁদ জানান, হত্যার বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পেলে বিস্তারিত বলা যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে নিহতের শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
তাই ধারণা করা হচ্ছে তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। তবে নিহতের পরিবারের অভিযোগ পেলে মামলা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :