শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৭:৩২ সকাল
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৭:৩২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সংবিধান ধর্মগ্রন্থ নয় তবে ক্ষমতার জন্যও নয়!

দীপক চৌধুরী : সংবিধান ধর্মগ্রন্থ নয়। তাই বদলানোও যায়। এটা সত্য। অবশ্যই, জনগণের স্বার্থে সংবিধান পরিবর্তন করে এরপর সংবিধান অনুসারে নির্বাচন হবে। আমার ভোটই যদি আমি দিতে না পারি, তবে কার অধীনে নির্বাচন হল সেটা দিয়ে কি হবে? কারণ, জনগণ সংবিধান এনেছে। সংবিধান প্রভু বা ঈশ^র বা আল্লাহ সৃষ্টি করেননি। কিন্তু বিএনপি অতীতে নিজের প্রয়োজনে সংবিধান ব্যবহার করেছে সব সময়ই। সংবিধান পরিবর্তন করে ৭১ -এর যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতিতে এনেছে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যাকারীরা রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হয়েছে, পদোন্নতি পেয়েছে, রাষ্ট্রদূত হয়েছে। বাংলাদেশে রাজনীতিতে সাম্প্রদায়িকতা পুনরুত্থান ঘটিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। কুখ্যাত-আইয়ুব-ইয়াহিয়া যা করতে সাহস করেনি তা জিয়াউর রহমান এদেশে সম্ভব করেছেন। শেখ হাসিনার শাসনামলে যেসব যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে তাদের জিয়াউর রহমান রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, নাগরিকত্ব দিয়েছেন আর খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হয়ে তাদের মন্ত্রী বানিয়েছিলেন।

আসলে, বিএনপি জামায়াত ২০০১ এর ন্যায় তাদের অনুগত একটা সরকার ক্ষমতায় দেখতে চায়, যারা একটি প্রহসনের নির্বাচন করে তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দিবে, যেমনটি ঘটেছিল ২০০১ সালে। বিএনপি-জামায়াত জোট কখনই নিরপেক্ষ সরকার চায় না, নিরপেক্ষ সরকারের আধীনে নির্বাচন হলে তাদের শোচনীয় পরাজয় বরণ করতে হয়, তার প্রমাণ ২০০৮ এর নির্বাচন। প্রকৃত অর্থেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বারোটা বাজিয়েছে বিএনপি। এছাড়া এরশাদের আমলের তিন জোটের রুপরেখার কথা কী বিএনপির নেতা-বুদ্ধিজীবীরা ভুলে গেছেন? ২০০৮ সালে ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে কী নির্বাচন হয়নি? তখন কী আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন দিয়েছিল? এ সরকার ক্ষমতাসীন হয়েছে ২০০৯ সালে। এরপর থেকে বাংলাদেশ উন্নতির দিকে উঠছে। এই উন্নতি কার জন্য হচ্ছে, কার নেতৃত্বে হচ্ছে? আজ তা প্রমাণিত।

এটি সম্ভব হচ্ছে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য। আমাদের কয়েকজন ‘সুশীলের’ বিবৃতি দেখে অবাক হতে হয়। দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এখন পর্যন্ত ৩৫টি উপাধি দেওয়া হয়েছে। তিনি বিশে^র সৎ নেত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সততা বাংলাদেশে সর্বজন স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত। বাংলাদেশের বাইরেও তার সততা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। সর্বশেষ ১৭৩টি দেশের মধ্যে সেরা সৎ ব্যক্তির মধ্যে শেখ হাসিনার নাম আসার পর থেকে এদেশের একটি মহলের গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেছে।
প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী তার দক্ষতা, মেধা দিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে একটি মর্যাদার আসনে নিয়ে গেছেন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে শেখ হাসিনা আজ মাদার অব হিউমিনিটিতে পরিণত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুরের আদালতে বিএনপির দুর্নীতির বিষয় প্রমাণিত হয়েছে, তারপরও তারা কোনো দিন কী বাংলাদেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়েছে? শেখ হাসিনা সরকারের কী কিছু করার উপায় ছিল? ইতোমধ্যে পাঁচটি দুর্নীতির মামলা ঝুলছে খালেদা জিয়ার ওপর। এগুলোর বাদি দুর্নীতি দমন কমিশন। শোনা যায়, আরও দুর্নীতির মামলা আসছে। এরই মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমান পলাতক।

তাকেও দেশে ফিরিয়ে আনতে চায় সরকার। সম্প্রতি ভোলার লালমনিরহাট গিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘লালমোহন ছিল সন্ত্রাসের জনপদ। গরুর খুঁটি দিয়ে এখানে মানুষের চোখ উপড়ে ফেলেছে বিএনপির নেতাকর্মী। শেখ হাসিনার রাজত্বে সবাই সমান। বিএনপি বোমা দিয়ে মসজিদের মানুষ মেরেছে। সবাই বলছে, আইএস এসব করেছে। কিন্তু কোনো আইএস দেখলাম না।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্য কী খ-ানোর উপায় আছে কারো? বাংলাদেশে রাজনীতির নামে ২০১৩ সালের শেষ দিকে ও ২০১৪ সালের শুরুতে কয়েকমাস যেভাবে বাস-ট্রাক-মাইক্রোবাসে পেট্রলবোমা ছুঁড়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছে, সেখানে কী কোনো বড় আওয়ামী লীগ নেতা ছিলেন? মন্ত্রী ছিলেন? না, নিরীহ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে বিনা কারণে, বিনা অপরাধে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করা হয়েছে। তারা দায়িত্বপালন করার কারণে প্রাণ দিয়েছে। কারণ, কর্তব্য পালন করাই দোষ। বিনা অপরাধে হত্যা করা হয়েছে শিশু, কিশোর, যুবক, স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রী। এখনো সেই দৃশ্য চোখের সামনে ভাসে। রাজনীতি মানুষের কল্যাণের জন্য নাকি ক্ষমতার জন্য, কোনটি? নির্বাচন কমিশন সংবিধানমতেই আগামী জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা করবে। কারণ, তাদেরও জবাদিহিতা আছে জনগণের কাছে? সংবিধান নয়, দেশ বড়।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গল্পকার
সম্পাদনা : আশিক রহমান ও মোহাম্মদ আবদুল অদুদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়