শিরোনাম
◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও

প্রকাশিত : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:৫২ দুপুর
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:৫২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পাকিস্তানের কারাগারে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর প্রতিষ্ঠার আলোচনায় ভাটা

ডেস্ক রিপোর্ট : একাত্তরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানের কারাগারে আটকে রেখে বিচারের যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল সে সংক্রান্ত নথিপত্র (ডকুমেন্ট) চাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল বাংলাদেশ। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত ওই কারাগারে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার দাবি জানানোর পরিকল্পনা ছিল সরকারের।

২০১২ সালে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া অনুবিভাগের মহাপরিচালক পর্যায়ে সম্ভাব্য বৈঠককে সামনে রেখে অন্য ইস্যুগুলোর পাশাপাশি এ দুটি বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু এরপর কেটে গেছে পাঁচটি বছর। উদ্যোগ নেওয়া সেই মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দলটি এখনো রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্বে। কিন্তু সেই মহৎ উদ্যোগটির অগ্রগতি হয়নি। কোনো এক অজানা কারণে এতে ভাটা পড়ে গেছে।

পাকিস্তানের নতুন সরকার গঠন বিষয়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনীতিবিদ জুলফিকার আলী ভুট্টোর সঙ্গে শেখ মুজিবের আলোচনা বিফলে যাওয়ার পর ১৯৭১ সালের মার্চ ২৫ মধ্যরাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঢাকা নগরীতে গণহত্যা পরিচালনা করে। ওই রাতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরবর্তীকালে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। এমনকি পাকিস্তানের রহিমুদ্দিন খান সামরিক আদালতে বঙ্গবন্ধুকে মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া হয়। যদিও তা কার্যকর হয়নি। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নামে স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা হয়। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন।

জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে ঢাকায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া অনুবিভাগের মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে প্রস্তুতি হিসেবে অন্য ইস্যুগুলোর পাশাপাশি এই দুটি বিষয় আলোচ্যসূচীতে রাখার প্রস্তাব আসে। সরকারের কয়েকটি পর্যায়ে আলোচনার পর এ বিষয়ে মত দেয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ, সম্পদ বণ্টন, আটকেপড়া পাকিস্তানিদের ফিরিয়ে নেওয়া এবং একাত্তরে গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাওয়ার দাবি তোলারও অনুরোধ জানায় মন্ত্রণালয়। পরে মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠককে সামনে রেখে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে সম্ভাব্য ইস্যুগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে পাঁচটি ইস্যুর কথা বলা হয়। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধুকে একাত্তরে পাকিস্তানে আটক রাখার সময়ের ডকুমেন্ট চাওয়ার বিষয়টিও ছিল।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বাংলাদেশে গণহত্যা শুরুর পরপরই শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পিএএফ সি-১৩০ বিমানযোগে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। পাকিস্তানে তাকে আটক রাখা হয় ফয়সালাবাদের কাছে সুরক্ষিত কারাগারে। এরপর সামরিক আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলায় সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় পাকিস্তানের জেনারেল রহিম উদ্দিন খানকে। ওই মামলার বিবরণী আজও জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি।

বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে আজ ৪৬ বছর হলো। বাঙালি জাতির জনকের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তান যে ন্যাক্কারজনক মামলা পরিচালনা করেছিল, তার বিবরণ প্রকাশ করা প্রয়োজন বলে ইতিহাসবিদরা মন্তব্য করেছেন।

ইতিহাসবিদ ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং বঙ্গবন্ধু দুটো বিষয় একে অপরের পরিপূরক। স্বাধীনতার এতো বছরে আমরা মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস রচনা করতে পারিনি, যুদ্ধকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধুর বন্দি হওয়া এবং বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে পাকিস্তানের নির্লজ্জ কর্মকাণ্ডের কোনো তথ্য-উপাত্ত আমরা সংগ্রহ করতেও পারিনি, জাতির সামনে তুলে ধরতেও পারিনি। এটি জাতি হিসেবে আমাদের জন্য লজ্জারই বটে।’

তিনি বলেন, ‘জাতির জনকের জীবন, কর্ম ও নীতি নিয়ে যে পরিমাণ গবেষণা হওয়ার প্রয়োজন ছিল তা খুব একটা হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তো নয়ই। ৪৬ বছরে আমরা একটি নির্ভরযোগ্য মুক্তিযোদ্ধা তালিকা পেলাম না।’

এসব বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগর) মাহবুব উজ জামান বলেন, ‘প্রতিবেশী অন্য দেশগুলোর তুলনায় পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে স্থবিরতা চলছে। এজন্য মূলত দায়ী চারটি ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এগুলো হলো, একাত্তরে গণহত্যার জন্য বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থণা, উত্তরসূরি রাষ্ট্র হিসেবে অবিভাজিত সম্পদে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা প্রদান, আটকেপড়া পাকিস্তানিদের স্বদেশে প্রত্যাবাসন এবং বাংলাদেশকে যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ প্রদান।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ তার দাবিতে অনড়। তবে পাকিস্তানের দিক থেকে এ ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ে কোনো সফর বিনিময়ও হয়নি। তাই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা এগুচ্ছে না।’

কূটনৈতিক সূত্র জানায়, ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠনের পর ফেব্রুয়ারি মাসে নতুন নেতৃত্বকে শুভেচ্ছা জানাতে বাংলাদেশ সফরে আসেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত জিয়া এম ইস্পাহানি। সফরের অংশ হিসেবে তিনি সাক্ষাৎ করতে এলে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবির কথা উল্লেখ করেন। পরে পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় অন্য বৈঠকগুলোতেও এ নিয়ে আলোচনা হয়। ২০১০ সালের নভেম্বর মাসে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে বাংলাদেশ সুদৃঢ় অবস্থান তুলে ধরে। এছাড়া দীর্ঘ অমীমাংসিত গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ইস্যুগুলো সমাধানের দাবি জানায় ঢাকা।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় জানা যায়, বাংলাদেশ নিয়ে পাকিস্তানের বর্তমান প্রজন্মের মনোভাব ইতিবাচক। প্রাক্তণ ক্রিকেটার ও বর্তমানে রাজনীতিক ইমরান খানের মতো নেতারা বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়ার পক্ষে। এরই মধ্যে স্বল্প পরিসরে হলেও পাকিস্তানেই দাবি উঠেছে ‘পাকিস্তান সরকারকে বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করতে হবে।’

তবে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কে ইতিবাচক অনেক দিকও আছে। ২০১১ সালে পাকিস্তানের বন্যাদুর্গত জনগণের সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশ করে বাংলাদেশ ২০ লাখ ডলার মূল্যমানের ত্রাণ সহায়তা এবং জীবনরক্ষাকারী জরুরি ওষুধের চালানসহ ৩৯ সদস্যের চিকিৎসক দল পাঠায়। বন্যা-পরবর্তী সময়ে ইউরোপের বাজারে পাকিস্তানি নির্দিষ্ট কয়েকটি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার বিষয়ক প্রস্তাবে বাংলাদেশ ভেটো দেয়নি। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস ও নিরাপত্তা বিষয়ে দুই দেশ পরস্পরকে সহযোগিতা করতেও রাজি হয়েছে। শুধু গত  দু’এক বছরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ইস্যুতে পাকিস্তান ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ দেখায়।

যদিও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর জন্য মোটাদাগের কূটনৈতিক বিষয়গুলোতে কোনো প্রভাব পড়ার কথা নয়। সেক্ষেত্রে পাকিস্তানের যে কারাগারে বঙ্গবন্ধু বন্দি ছিলেন, সেখানে বঙ্গবন্ধুর জন্য জাদুঘর প্রতিষ্ঠার দাবি বাংলাদেশ করতেই পারে। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত মামলার বিবরণ দেখারও অধিকার রয়েছে বাংলাদেশের। এখন শুধু প্রয়োজন কূটনৈতিক তৎপরতা এবং আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়।

পাকিস্তানের কারাগারে কেমন ছিল বন্দি মুজিবের দিনগুলো :

মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ইতিহাস থেকে জানা যায়, নৈতিকভাবে দূর্বল করার জন্য বঙ্গবন্ধুকে দেখিয়ে দেখিয়েই জেলখানায় সেলের পাশেই খোঁড়া হয় তার কবর। কিন্তু তিনি ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় হিমালয়ের মত অটল। প্রবল আন্তর্জাতিক চাপে শেষপর্যন্ত বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তানের সামরিক জান্তা।

পাকিস্তানের ২৪ বছরের ইতিহাসে ১৪ বছরই কারাগারে কাটিয়েছেন শেখ মুজিব। কিন্ত ২৫ মার্চের কাল রাতে ঢাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা শুরুর পাশাপাশি তাকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়াটা ছিল চূড়ান্ত শঙ্কার।

পাকিস্তান থেকে লন্ডন এবং ভারত হয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি ঢাকায় ফিরে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে লাখ লাখ মানুষের জমায়েতে তিনি তার গ্রেপ্তার, বন্দিদশা এবং মুক্তির কিছুটা বর্ণনা দেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পশ্চিম পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে বন্দি হওয়ার ঘটনার খানিকটা বর্ণনা তার ভাষণেও আছে। বঙ্গবন্ধু ইচ্ছে করলে আত্মগোপনে চলে যেতে পারতেন, কিন্তু তিনি যাননি। কারণ, তিনি জানতেন, তাকে না পেলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বরতার মাত্রা আরো বেড়ে যাবে।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ভাষণে বঙ্গবন্ধু তাঁর গ্রেপ্তার বিষয়ে বলেছেন, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত্রে পশ্চিম পাকিস্তানি  সৈন্যদের হাতে বন্দি হওয়ার পূর্বে আমার সহকর্মীরা আমাকে চলে যেতে অনুরোধ করেন। আমি তখন বলেছিলাম, বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষকে বিপদের মুখে রেখে আমি যাব না। মরতে হলে আমি এখানেই মরব। বাংলা আমার প্রাণের চেয়েও প্রিয়। তাজুদ্দিন এবং আমার অন্যান্য সহকর্মী তখন কাঁদতে শুরু করেন।’

বঙ্গবন্ধু ভাষণে আরো বলেন, ‘ইয়াহিয়া খার কারাগারে আমি প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর প্রতীক্ষা করেছি। মৃত্যুর জন্য আমি প্রস্তুতও ছিলাম। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ যে মুক্ত হবে, সে বিষয়ে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ ছিলনা, এই মুক্তির জন্য যে মূল্য দিতে হল, তা কল্পনারও অতীত। পাকিস্তানের কারাগারে বন্দিদশায় থেকে আমি জানতাম, তারা আমাকে হত্যা করবে। কিন্তু তাদের কাছে আমার অনুরোধ ছিল, আমার লাশটা যেন তারা বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়, বাংলার পবিত্র মাটি যেন আমি পাই। আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলাম, তাদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে বাংলার মানুষদের মাথা নিচু করব না।’

শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক চাপে বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান সরকার। তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা করেছে বঙ্গবন্ধুকে বিভ্রান্ত করতে। বঙ্গবন্ধু যেন কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠ থেকেও বাংলার মানুষের মনোভাব বুঝতে পারতেন। তিনি পাকিস্তানি শাসকদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন, দেশে না ফেরা পর্যন্ত তিনি কিছু বলবেন না।

এ বিষয়ে তিনি ভাষণে বলেছিলেন ‘পাকিস্তানের কারাগার থেকে আমি যখন মুক্ত হই, তখন জনাব ভুট্টো আমাকে অনুরোধ করেছিলেন, সম্ভব হলে আমি যেন দুদেশের মধ্যে একটা শিথিল সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করি। আমি তাকে বলেছিলাম, আমার জনগণের নিকট ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত আমি আপনাকে এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারিনা। এখন আমি বলতে চাই, ভুট্টো সাহেব আপনারা শান্তিতে থাকুন। বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এখন যদি কেউ বাংলাদেশের স্বাধীনতা হরণ করতে চায় তাহলে সে স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য মুজিব সর্বপ্রথম তার প্রাণ দেবে।’

বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে আরো জানান, ইন্দিরা গান্ধী ব্যক্তিগতভাবে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য বিশ্বের সকল দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন, তারা যেন তাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য ইয়াহিয়া খানকে অনুরোধ জানান। বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমি তার নিকট চিরদিন কৃতজ্ঞ থাকব।’

সূত্র : রাইজিংবিডি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়