শিরোনাম
◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো

প্রকাশিত : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১০:০৭ দুপুর
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১০:০৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সংলাপের ৯৪ শতাংশ প্রস্তাবই গৃহীত হয়নি

ডেস্ক রিপোর্ট : বিতর্কিত ও স্পর্শকাতর বিষয়গুলোকে জিইয়ে রেখেই একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরই মধ্যে ইসির আইন সংস্কার কমিটি তাদের পর্যালোচনা শেষ করে প্রস্তাবিত সুপারিশমালা কমিশনে জমা দিয়েছে। চলতি মাসেই তাদের প্রস্তাবনা খসড়া আইনে রূপ নেবে।

আরপিওর প্রস্তাবিত সুপারিশমালায় সেনাবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সংযোজন না রাখা, নির্বাচনে যন্ত্রের ব্যবহারের সুযোগ রাখতে আইনে ইভিএম-ডিভিএম যুক্ত করা, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সমর্থকসূচক ভোটারের হার নিদিষ্ট করা, ঋণ খেলাপিদের ক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র দাখিলের একদিন আগে ঋণ পরিশোধের সুযোগ রাখার বিধানসহ নানা বিতর্কিত বিষয় রয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপে আসা প্রস্তাবের ৯৪ শতাংশই আমলে নেয়া হয়নি বলেও জানান তারা।

সূত্রমতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নিবন্ধিত ৪০ রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন নাগরিক সমাজের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপে প্রায় ৪০০ সুপারিশ পায় নির্বাচন কমিশন। সেখান থেকে তারা (ইসি) আমলযোগ্য ২৫টি সুপারিশ পৃথক করে। পরে ওইসব সুপারিশ পর্যালোচনা করা হয় আইন সংস্কার কমিটির বৈঠকে। এখন ওই সুপারিশগুলো প্রস্তাবাকারে চূড়ান্ত করে অনুমোদন দেবে নির্বাচন কমিশন। তাদের অনুমোদন মিললে আইনে রূপ দিতে সরকারের কাছে পাঠাবে কমিশন।

তথ্যমতে, শুধু প্রার্থী বা তাদের সমর্থকরাই নন, স্বয়ং নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারাও জড়িয়েছেন অনিয়মের সঙ্গে। এমন অভিযোগ ছিল বিগত কয়েকটি নির্বাচনেই। এক্ষেত্রে শুধু তাদের প্রত্যাহার করে নেয়ার ক্ষমতা ছিল কমিশনের। এবার আইনে যুক্ত করা হচ্ছে তাৎক্ষণিকভাবে বদলি করে দেয়ার বিধানও। পাশাপাশি নিয়োগ করা হচ্ছে নীরব পর্যবেক্ষক বা তৃতীয় চোখ। যারা পরিচয় গোপন করে মনিটরিং করবেন ভোটগ্রহণ কার্যক্রম। এছাড়া মাত্র এক হজারের ভোটারের সমর্থন নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবেন।

আরপিও সংশোধনের সুপারিশে আরো রয়েছে- সংসদ নির্বাচনে একাধিক প্রার্থী সমান ভোট পেলে লটারির পরিবর্তে পুনরায় নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কমিশন। পাশাপাশি নির্বাচনী কর্মকর্তারা অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে বদলি করার বিধানও যোগ হচ্ছে আরপিওতে। এছাড়া আইসিটি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র অনলাইনে জমার বিধান সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনে অবৈধ টাকার প্রভাব ও প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয়সীমা নির্দিষ্ট রাখতে ব্যয় মনিটরিং কমিটি ও অডিটের নিমিত্তে আলাদা কমিটি গঠন, নির্বাচনে অভিযোগ দাখিল ও তা দ্রুত সময়ে নিষ্পত্তি হলে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ফেরাতে এ বিধান সংযোজন, প্রার্থীদের জামানত ফি বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা এবং তা অফেরতযোগ্য বিধান যুক্ত করা, প্রার্থীদের হলফনামায় মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সার্টিফিকেটের পাশাপাশি মার্কশিট সংযোজনের বিধান সংযোজন, সংসদ নির্বাচনে বড় জেলায় দুইজন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের ফলে জটিলতা তৈরি হয়, তাই এটা নিরসনে জেলার পাশাপাশি আসন শব্দটি যোগ করা এবং নির্বাচনে বড় ধরনের অনিয়ম রোধে নিজস্ব কর্মকর্তাদের স্থায়ী দায়িত্ব পালনের বিধান যুক্ত করার সুপারিশ থাকছে সংশোধনীতে।

এ বিষয়ে ইসির আইন সংস্কার কমিটির সভাপতি নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, সংলাপে আমরা অনেক সুপারিশ পেয়েছি। কিছু আলাদাও করেছি। সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করেছি। নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য এগুলো আরপিওর কোথায় সংযোজন করতে হবে, সে বিষয়েও কাজ করা হয়েছে।

ইসির দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা বলেন, যেসব অনুষঙ্গগুলো গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে, তাদের সংশ্লিষ্টতা রাখতে সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু কমিটির আহ্বায়ক নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম, বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল, কমিশনের মাঠ কর্মকর্তা এবং অংশীজনদের করা বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনীকে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ওই কমিশনারের যুক্তি হচ্ছে, কোনো অবস্থায়ই বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে বিশেষ এ বাহিনীকে নির্বাচনে নামানো সমীচীন নয়। কারণ বিদ্যমান আইনে সেনাবাহিনীকে নির্বাচনী কাজে যুক্ত করার জন্য যে ধরনের বিধান যুক্ত রয়েছে তার বাইরে যাওয়া যাবে না।

উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা না করা নিয়ে সর্বদা বিতর্ক চলে আসছে। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করাকে ঘিরে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়। পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) খান মো. নুরুল হুদা নিজে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এ বিতর্কের অবসান ঘটান। অন্যদিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যন্ত্রের ব্যবহার অপব্যবহার হতে পারে, এ কারণে ইভিএম কিংবা ডিভিএম না রাখার পক্ষে ছিলেন ইসির সংলাপে অংশ নেয়া দু-একজন বাদে অধিকাংশ অংশীজন। কিন্তু বিতর্কিত এ বিষয়টি ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়াকে সহজতর করার লক্ষ্যে আরপিওতে সংযোজনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিটি।

সূত্র : মানবকণ্ঠ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়