ডেস্ক রিপোর্ট : রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিন মেয়রপ্রার্থীকে নিয়ে তাদের দলের মধ্যে চলছে ভোটের সংখ্যাতত্ত্বের হিসাব। আওয়ামী লীগ হিসাব কষছে হিন্দু ও অবাঙালি ভোটারদের ভোট নৌকার বাক্সে নেওয়া গেলে বিজয় হাতের মুঠোয়। জাতীয় পার্টি (জাপা) হিসাব করছে সিটি করপোরেশনের বর্ধিত যেসব এলাকা উন্নয়ন বঞ্চিত হয়েছে, সেই এলাকার ভোটারদের পে নিতে পারলে জয় সুনিশ্চিত। এ ছাড়া এটি লাঙ্গলের ঘাঁটিÑ এই তৃপ্তিও রয়েছে জাপা নেতাদের মধ্যে। অন্যদিকে বিএনপি মনে করছে জোটবন্ধু জামায়াতের ভোট টানতে পারলে জয়লাভ অসম্ভব নয়।
নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের গত ৪ ডিসেম্বর রংপুরে আসার কথা থাকলেও তারা এখনো আসেননি। ফলে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীই হতাশার দৃষ্টিতে চেয়ে রয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের দিকে। রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩ ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৯৩ হাজার। সূত্রমতে, এখানে সংখ্যালঘু হিন্দু ভোটার ৫৫-৬০ হাজার। অবাঙালি (বিহারি) ভোটার প্রায় ২৫ হাজার। এ ছাড়া বর্ধিত এলাকার ভোটার প্রায় দেড় লাখ। এই তিন মাত্রাকে মাথায় রেখে কাজ করছে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি। বিএনপি হিসাব করছে জোটের শরিকদের ভোট নিয়ে।
মাঠপর্যায়ে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতীকপ্রীতির কারণে হিন্দু ভোটাররা নৌকাকেই বেছে নেবেন। কারণ প্রায় ৪০ বছর থেকে রংপুর সদরের মানুষ নৌকা প্রতীক থেকে বঞ্চিত। ১৯৯০ সালের পর থেকে একচেটিয়া শাসন করছে লাঙ্গল প্রতীক। এবার এসব ভোটার নৌকা প্রতীক পেয়েছে। তাই এ সুযোগ তারা হাতছাড়া করবেন না বলে অনেকে মনে করছেন।
অন্যদিকে বিগত ২০১২ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টুর পে কাজ করেছিলেন অবাঙালি নেতারা। গতবারের অবস্থান এবারও ধরে রাখার চেষ্টা করছেন আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী। এই দুটি হিসাব নিজেদের পে নেওয়ার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ।
জাপা নেতারা মনে করছে, রংপুর তাদের ঘাঁটি। পাশাপাশি উন্নয়ন বঞ্চিত বর্ধিত এলাকার দিকে বেশি জোর দিচ্ছেন তারা। এসব এলাকার ভোটারদের মধ্যে কিছুটা ােভ রয়েছে। এই ােভকে কাজে লাগাতে চায় জাপা। ফলে এসব এলাকার ভোটারদের পে টানতে জাপার মেয়রপ্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। বর্ধিত এলাকার বেশিরভাগ ভোট লাঙ্গলের পে গেলে ফল অনেকটা অনুকূলে থাকবে বলে মনে করছেন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।
বিএনপি মেয়রপ্রার্থী কাওসার জামান বাবলা বিগত নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী না হয়েও ভোট পেয়েছিলেন ২১ হাজারের ওপর। বিএনপি নেতাদের মতে, নগরীতে জামায়াতের ভোট রয়েছে ৪০ হাজারের ওপর। তারা যদি এই ভোট নিজেদের পে নিতে পারেন, তা হলে ভোটের বাজারে তাদেরও একটি শক্ত অবস্থান থাকবে।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল জানান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একটি প্রতিনিধি দল রংপুরে আসার বিষয়টি নিশ্চিত। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তারা আসবেন এবং নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করার বিষয়ে তারা নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করবেন এবং জনগণের কাছে সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- তুলে ধরে নৌকা মার্কায় ভোট চাইবেন। দৈনিক আমাদের সময়
আপনার মতামত লিখুন :