শিরোনাম
◈ যুক্তরাষ্ট্র সরে এলে বিশ্বরাজনীতিতে নেতৃত্ব দেবে কে: বাইডেন ◈ মিয়ানমার সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠালো বিজিবি ◈ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ◈ বর্ধিত ভাড়ায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু ◈ বাড়ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি ◈ মা হিসেবে পূর্ণ অভিভাবকত্ব পেয়ে দেশের ইতিহাসে নাম লেখালেন অভিনেত্রী বাঁধন ◈ আরও তিন মামলায় জামিন পেলেন মামুনুল হক ◈ সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ ◈ তাপপ্রবাহে উচ্চ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিশুরা,  বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ ইউনিসেফের ◈ মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয়রা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ওবায়দুল কাদের 

প্রকাশিত : ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৯:২৭ সকাল
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৯:২৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সিটিং সার্ভিস নৈরাজ্য চলছেই

ডেস্ক রিপোর্ট : রাজধানীর আবদুল্লাহপুর থেকে খিলক্ষেত বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত দূরত্ব ৮ কিলোমিটার। এ দূরত্ব পর্যন্ত বাসে যেতে একজন যাত্রীকে গুনতে হয় ৩০ টাকা ভাড়া। একইভাবে মিরপুর-১২ নম্বর থেকে ইউসিবি চত্বরে নামলে দিতে হয় ২৫ টাকা। সরকারি হিসাবে এখানে ভাড়া হওয়ার কথা ৫ টাকা। কিন্তু সিটিং সার্ভিস নাম দিয়ে যাত্রীদের গলা কেটে আদায় করা হচ্ছে নির্ধারিত ভাড়ার পাঁচ গুণ। সিটিং সার্ভিস বাসের স্টপেজ কম হওয়ার কথা থাকলেও কার্যত এমন কোনো স্টপেজ নেই, যেখান থেকে যাত্রী ওঠানো-নামানো হয় না। একইভাবে সিটিং সার্ভিস বাসে প্রত্যেক যাত্রীর জন্য সিট থাকার কথা। কিন্তু প্রায়ই বাসের রড ধরে ঝুলে যাওয়া-আসা করতে দেখা যায় এসব রুটের যাত্রীদের। সিটিং সার্ভিস নাম দিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে গলা কাটা ভাড়া আদায় করা হলেও দেখার কেউ নেই। ফলে সিটিং সার্ভিস নৈরাজ্য চলছেই।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) গত ৩ মে সিটিং সার্ভিসের এই নৈরাজ্য নিরসনে ‘সিটিং সার্ভিসসহ সুষ্ঠু যাত্রীসেবা’ নামে আট সদস্যের একটি কমিটি করে দেয়।

বিআরটিএ পরিচালক শেখ মাহবুব ই রব্বানীকে প্রধান করে পেশাজীবীদের সমন্বয়ে এ কমিটি গঠিত হয়েছিল। সিটিং সার্ভিস থাকবে কিনা তা জানিয়ে গত জুলাইয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে কমিটিকে বলা হয়। নির্ধারিত সময় পার করে কয়েক দফা মেয়াদ বাড়িয়ে গত মাসে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি। পরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে কমিটি সুপারিশ করলেও তার বাস্তবায়নে নীতিমালা প্রণয়ন বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের দিকে নজর নেই কর্তৃপক্ষের। আর তাদের অবহেলার সুযোগ নিয়ে যাত্রীদের জিম্মি করে ব্যবসা করে চলেছেন সিটিং সার্ভিস নামধারী পরিবহন ব্যবসায়ীরা।

প্রতিবেদনের ব্যাপারে বিআরটিএ পরিচালক শেখ মাহবুব ই রব্বানী বলেন, ‘আমরা সিটিং সার্ভিস চালু রাখার সুপারিশ করেছি। তবে সিটিং ও নন সিটিং গাড়ির রং আলাদা করতে হবে। মানুষ যেন দূর থেকে দেখলেই বুঝতে পারে গাড়ি সিটিং কিনা। পাশাপাশি সিটিং সার্ভিসের ভাড়া ও রুট নির্ধারণ করতে হবে। ’ তিনি বলেন, গণপরিবহনের মালিকানা থাকবে চার-পাঁচটি কোম্পানির হাতে। ফলে বেপরোয়া গাড়ি চালানো এবং গাদাগাদি করে যাত্রী তোলার দৌরাত্ম্য কমবে। সিটিং সার্ভিসের স্টপেজ আলাদা থাকবে। নির্দিষ্ট স্টপেজ ছাড়া যাত্রী ওঠানো-নামানো যাবে না। এর সঙ্গে ট্রাভেল কার্ডের সুপারিশ করা হয়েছে। এতে যাত্রী কার্ড রিচার্জ করে বাসে যাতায়াত করতে পারবেন। তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোয় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগাতে হবে। এতে কেউ নিয়ম ভঙ্গ বা কোনো অপরাধ করলে তাকে শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনা যাবে। এ ছাড়া বিআরটিএর নতুন কিছু ডবল ডেকার নামানোর সুপারিশ করা হয়েছে। এতে কম গাড়িতে বেশি যাত্রী পরিবহন করা যাবে। পাশাপাশি প্রাইভেট গাড়ির সংখ্যা কমাতে মানুষকে গণপরিবহনে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হবে। তবে ভাড়া কোন রুটে কত হবে তা নির্ধারণ করবে বিআরটিএ।

পরিচালক বলেন, ‘বিআরটিএর কাছে আমরা সুপারিশ করেছি। কিন্তু সিদ্ধান্ত কবে নেওয়া হবে এবং কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তা বিআরটিএ ভালো বলতে পারবে। ’ সরেজমিন দেখা যায়, ‘সিটিং সার্ভিস’ লোগো লাগিয়ে এখন সব গাড়িই রাতারাতি সিটিং হয়ে গেছে। কিন্তু যাত্রীদের সেবার মানে আসেনি কোনো পরিবর্তন। গতকাল রাজধানীর নর্দ্দা থেকে অসুস্থ বাবাকে নিয়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে যাওয়ার জন্য ‘জাবালে নূর’ পরিবহনে ওঠেন আরিফ রহমান। তিনি ভাড়া কত দিতে হবে জানতে চাইলে বাসের হেলপার ৬০ টাকা দাবি করেন। কেন ৬০ টাকা দিতে হবে— এ নিয়ে তার বাকবিতণ্ডা হয় হেলপারের সঙ্গে। বাস হাসপাতাল আসার পর ৬০ টাকা না দিলে তাদের নামতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেন হেলপার। পরে অন্য যাত্রীদের সহযোগিতায় দুজনে ৩০ টাকা ভাড়া দিয়ে বাস থেকে নামেন। শুধু এই একটি রুট নয়, অধিকাংশ রুটেই সিটিং সার্ভিসের ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে হাতাহাতি এখন প্রতিদিনের চিত্র। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘রাজধানীর গণপরিবহনে নৈরাজ্য নিরসনে আশ্বাস অনেক শুনেছি। কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ এখনো চোখে পড়েনি। তাই কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান— গণপরিবহনের ভাড়া, রুট ও স্টপেজ নির্ধারণ করে যাত্রীদুর্ভোগ কমাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হোক। ’ বাংলাদেশ প্রতিদিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়