তারেক : বাংলাদেশ ব্যাংকের আন্তর্জাতিক লেনদেনের সার্ভারে যদি দেশিয় কোম্পানির তৈরি করা সফটওয়্যার ব্যবহার করা হতো, তাহলে রিজার্ভ চুরির মতো কোন ঘটনা ঘটতো না বলে মন্তব্য করেছেন প্রযুক্তিবিদ ও বেসিসের সভাপতি মোস্তফা জব্বার। তিনি বলেন: বিদেশি কোম্পানির সফটওয়্যার ব্যবহারের কারণে এত বড় ঘটনা ঘটেছে। এখনও বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা নিশ্চিত নয়।
শুক্রবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড মেলায় তথ্য প্রযুক্তিখাত থেকে ‘৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি’ আয় শীর্ষক সেমিনারে যোগ দেন মোস্তফা জব্বার। তিনি ছাড়াও এই সেমিনারে ছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান, নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোকনুজ্জামান, ড্রিম ৭১ বাংলাদেশ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদ কবির, জাপানের ড্রিমইনপকেট এর সিওও শিন শাতেক প্রমুখ।
এসময় মোস্তফা জব্বার বলেন: আইটি খাতে দক্ষ জনশক্তি ও সফটওয়ারের অভাবে রিজার্ভ চুরির ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক যদি অটোমেশনে দেশিয় সফটওয়্যার ব্যবহার করতো তাহলে রিজার্ভ চুরির মতো এত বড় ঘটনা ঘটতো না।‘বাংলাদেশের সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো দেশের সন্তান। এসব সন্তান যদি বাংলাদেশ ব্যাংকের সেই দায়িত্বে থাকতো, আর তাদের দূর্বলতার কারণে যদি রিজার্ভ চুরি হতো তাহলে আজ তাদের আইনের আওতায় আানা যেত’, বলেন মোস্তফা জব্বার।
তিনি বলেন: বেশিরভাগ প্রযুক্তি পণ্যই বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। বিদেশি কোম্পানি বাংলাদেশে ব্যাপকহারে ব্যবসার প্রসার ঘটাচ্ছে। অথচ দেশের মানুষের কোন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না। অথচ দেশে আইটি খাতে দক্ষ জনবল তৈরি, সব ধরনের আর্থিক ও সেবামূলক সহায়তা পাওয়া গেলে ২০২১ সালের মধ্যে ১০ বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব হবে।
মোস্তফা জব্বারের বক্তব্যের পর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান।
তিনি বলেন: রপ্তানি আয় বাড়াতে এবং এই আয় বৈধভাবে দেশে আনতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে রপ্তানি আয় যেন হুন্ডিতে না আনতে হয় সে জন্য পদক্ষেপ নেয়া হবে।তবে রিজার্ভ চুরি নিয়ে মোস্তফা জব্বারের বক্তব্যের বিষয়ে কিছু বলেননি রাজী হাসান।
অনুষ্ঠান শেষে এ বিষয়ে জানতে চাইলে চ্যানেল আই অনলাইনকে আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন: এখানে সুইফট (আর্থিক লেনদেনের বার্তা আদান-প্রদানের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক) ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমের বিষয়টি সম্পৃক্ত। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক এই দুইটি সংস্থার মাধ্যমেই লেনদেন করে থাকে।
‘রিজার্ভ চুরির বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন। তদন্ত শেষ হলে বলা যাবে এই বিষয়ে সুইফট, ফেডারেল রিজার্ভ নাকি বাংলাদেশ ব্যাংকের ত্রুটি ছিল। অতএব এখনই এ বিষয়ে মন্তব্য করা যাবে না। কারণ এখনও বাংলাদেশ ব্যাংক লেনদেনের ক্ষেত্রে সুইফট ও ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমকে ব্যবহার করছে’, বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের এই ডেপুটি গভর্নর।
উৎসঃ channelionline
আপনার মতামত লিখুন :