শিরোনাম
◈ তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকলে সন্ধ্যায় লোডশেডিং বাড়তে পারে ◈ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে আরও ৫০ বিজিপি সদস্যের অনুপ্রবেশ ◈ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ ◈ মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইনের খসড়া আজ মন্ত্রিসভায় উঠছে ◈ গাজীপুরে কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে চীনা নাগরিকের মৃত্যু ◈ প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব ও গাম্বিয়া সফর বাতিল ◈ এ বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫.৭%: আইএমএফ ◈ ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জের দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, ৪ পুলিশ সদস্যসহ আহত ২০ ◈ মার্চ মাসে সারাদেশে ৬২৪ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৫০, আহত ৬৮৪  ◈ ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ককে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যেতে হবে: হর্ষবর্ধন শ্রিংলা

প্রকাশিত : ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৬:০১ সকাল
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৬:০১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বসে রইলো অ্যাম্বুলেন্স, মেডিক্যাল সেন্টারেও পেলো না চিকিৎসা

ডেস্ক রিপোর্ট : মালয়েশিয়া থেকে রিজেন্ট এয়ারওয়েজে চড়ে ঢাকায় আসেন মো. সানাউল্লাহ। শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর ব্যাগেজ বেল্টে এসে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। কিন্তু চিকিৎসার জন্য বিমানবন্দরের মেডিক্যাল সেন্টারে ছিলেন না কোনও চিকিৎসক। হাসপাতালে নেওয়ার জন্য পাওয়া যায়নি কোনও অ্যাম্বুলেন্স। বিমানবন্দর থেকে গাড়িতে ওঠানোর পরই সানাউল্লাহ মৃত্যুবরণ করেন বলে জানান তার ভাগ্নে দীন মোহাম্মদ।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার মালয়েশিয়া থেকে রিজেন্ট এয়ারওয়েজের ফ্লাইটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে সকাল ৮টা ৮ মিনিটে। এর ৭ মিনিট পর যাত্রীদের উড়োজাহাজ থেকে নামার জন্য উড়োজাহাজের ডোর ওপেন হয়। ওই ফ্লাইটেই মালয়েশিয়া থেকে ঢাকায় আসেন মো. সানাউল্লাহ। তার পাসপোর্ট নম্বর বিসি ০৩৪৫৬২৪।

মেহের আলীর পুত্র সানাউল্লাহর গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে। তার বয়স ৩৪ বছর। বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কাউন্টারে এলে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সেখান থেকে ব্যাগেজ বেল্টে এসে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এ কারণে কর্তব্যরত আর্মড পুলিশ সদস্যরা বিমানবন্দরের মেডিক্যাল সেন্টারে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, কোনও চিকিৎসক সেখানে নেই। পরে মেডিক্যাল সেন্টারের নার্সরা এসে রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু তখন অ্যাম্বুলেন্সও পাওয়া যায়নি।

সানাউল্লার ভাগ্নে দীন ইসলাম জানান, তিন বছর ধরে তার মামা মালয়েশিয়ায় ছিলেন। তিনি যক্ষ্মা রোগে ভুগছিলেন। দীন বলেন, ‘আজ (শুক্রবার) সকালে ৮টা ২০ মিনিটের দিকে তিনি অন্য যাত্রীর ফোন থেকে কল করে আমাকে বলেন— ‘তুই কই, আমি আসছি।’ তাকে জানাই, বিমানবন্দরের বাইরে অপেক্ষা করছি। তখন মামা বলেন— ‘তুই থাক আমি আসছি।’ এরপর অনেক সময় পেরিয়ে গেলেও মামা না আসায় চিন্তিত হয়ে পড়ি।”

সকাল পৌনে ৯টার দিকে মামার কোনও খবর না্ পেয়ে ৩০০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে বিমানবন্দরের ভেতরে ঢোকেন দীন ইসলাম। এরপর সেখানেও তাকে খুঁজে না পেয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তারা জানান, ভেতরে মালয়েশিয়া থেকে আসা একজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনিই ওই ব্যক্তি কিনা দেখার জন্য বলেন।

দীন ইসলাম ঘটনার বিবরণে আরও বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি— মামার মুখ বেয়ে ফেনা পড়ছে। তিনি নিথর হয়ে আছেন। পরে সেখানকার লোকজন জানায়, ‘তিনি আর নেই। আপনারা তাকে বাড়িতে নিয়ে যান।’ তখন গাড়িতে করে মামাকে নিয়ে যাই। গাড়িতে ওঠানোর পর দেখি তার হাত-পা শক্ত হয়ে আছে, কোনও নড়চড়া নেই। পরে বাড়িতে এনে তার দাফন করা হয়।’

ক্ষোভ প্রকাশ করে সানাউল্লার ভাগ্নে বলেছেন, ‘এত বড় বিমানবন্দর, অথচ একজন অসুস্থ মানুষকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য কোনও চিকিৎসক নেই! কোনও অ্যাম্বুলেন্সও নেই। আজ মামাকে হাসপাতালে নিতে পারলে হয়তো বাঁচাতে পারতাম।’

আর্মড পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, যাত্রী সানাউল্লার অসুস্থ হওয়ার খবর পাওয়ার পর বারবার মেডিক্যাল সেন্টারে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু কোনও চিকিৎসক পাওয়া যায়নি। অনেকক্ষণ পরে নার্স আসেন। তাদেরকে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করতে বললেও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

শুধু এই ঘটনাই নয়, প্রায়ই অসুস্থ যাত্রীদের নিয়ে বিপদে পড়তে হয় বলে জানায় আর্মড পুলিশ। তাদের মন্তব্য— মেডিক্যাল সেন্টারে অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে সিএনজি বা অন্য কোনও গাড়ি দিয়ে রোগীকে হাসপাতালে পাঠাতে হয়।

সূত্রে জানা যায়, বিমানবন্দরের ফায়ার সার্ভিসে একটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে, যেটি শুধু দুর্ঘটনার কাছে ব্যবহৃত হয়। বিমানবন্দরের মেডিক্যাল সেন্টার পরিচালিত হয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের তত্ত্ববধানে। সেখানে একটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের পরিচালক কাজী ইকবাল করিম বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের তত্ত্ববধানে একটি মেডিক্যাল সেন্টার আছে বিমানবন্দরে। তাদের একটি অ্যাম্বুলেন্সও রয়েছে। কোনও যাত্রী অসুস্থ হলে তাদের খবর দেওয়া হয়। তবে তাদের অ্যাম্বুলেন্স কোনও কাজে আসছে না। তাদের কাছে এ বিষয়টি তুলে ধরা হয় বিভিন্ন সমন্বয় বৈঠকে।’

শাহজালাল বিমানবন্দরের পরিচালক আরও বলেন, ‘সিভিল এভিয়েশনের নিজস্ব মেডিক্যাল উইং থাকলে হয়ত জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যেতো। বিমানবন্দরে অনেক সংস্থা কাজ করে, তারা সিভিল এভিয়েশনের অধীনস্ত নয়। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা গেলে যাত্রী সেবা নিশ্চিত হবে।’ বাংলাট্রিবিউন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়