সাইদুর রহমান : জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ সংস্থা হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া ১৯৮৭ সালের ন্যায় ইন্তিফাদার ডাক দিয়েছেন। খবর ইয়েনি সাফাক, আল-জাজিরা, আনাদোলু এজেন্সি
বৃহস্পতিবার গাজায় এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন। হামাস নেতা বলেন, ট্রাম্পের এই ঘোষণার মাধ্যমে ইসরাইল-ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা প্রচেষ্টার মৃত্যু ঘটেছে। আরব এবং মুসলিম বিশ্ব এখন একটি ঐতিহাসিক ‘টার্নিং পয়েন্ট’ এর সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
ইসমাইল হানিয়া বলেন, ‘ইহুদি শত্রুদের বিরুদ্ধে ইন্তিফাদা শুরু করতে আমাদের কাজ করা উচিত। জেরুজালেম, গোটা জেরুজালেম আমাদের।’
ট্রাম্পের এই স্বীকৃতিকে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে মন্তব্য করেন। এ ঘোষণার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনিদের তিনি আগামীকাল শুক্রবার রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে বুধবার রাতে এক ভাষণে ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করেন এবং তেলআবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমের সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের এই একতরফা ঘোষণার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশ্ব নেতারা। সেইসঙ্গে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
এ বিষয়ে হানিয়া বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত শান্তি প্রক্রিয়াকে হত্যা করেছে, অসলো চুক্তিকে হত্যা করেছে, হত্যা করেছে মীমাংসার প্রচেষ্টাকে।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণা একটি আগ্রাসন, বিশ্বে যে ফিলিস্তিন ও জেরুজালেম মুসলমান ও খ্রিস্টানদের বসবাসের সবচেয়ে ভাল স্থান, সেই স্থানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা।’
বুধবার রাতে ট্রাম্পের ওই ঘোষণার পরপরই গাজা ও বেথেলহেমে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ফিলিস্তিনিরা। এ সময় তারা ট্রাম্পের কুশপুত্তলিকা পোড়ান। এ সময় ইসরাইলিদের সাথে তাদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে, ট্রাম্পের ওই ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা ও ইস্তাম্বুলে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ জনতা। এ সময় ফিলিস্তিনকে মুক্ত করার দাবি জানিয়ে স্লোগান দেন তারা।
এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে আগামীকাল শুক্রবার বৈঠক আহ্বান করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। এ ছাড়া আরব লীগও বৈঠকের ডাক দিয়েছে।
ইসরায়েলের সাথে বিরোধে এর আগে ফিলিস্তিনিরা দুই বার ইন্তিফাদার ডাক দিয়েছিল। একটি হলো ১৯৮৭ সাল থেকে ১৯৯৩ সাল এবং অপরটি হলো ২০০০ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত। এতে দখলদার ইসরাইলের বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের নেমে পড়েন ফিলিস্তিনিরা। সূত্র : ইয়েনি সাফাক, আনাদোলু এজেন্সি, আল-জাজিরা
আপনার মতামত লিখুন :