রফিক আহমেদ : বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) কেন্দ্রীয় নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেছেন, ১৯৯০ সালে স্বৈর শাসক সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে তৎকালীন সময়ে প্রধান বিচারপতি সাহাব উদ্দিনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন। এতে এরশাদের পতন হলেও ২৭ বছর পর আজও দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বুধবার বাসদের নেতার সঙ্গে একান্ত আলাপকালে তিনি এ প্রতিবেদককে এসব কথা বলেন।
বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আনুষ্ঠানিক ক্ষমতা হস্তান্তরের দিন ছিল। কিন্তু ৪ ডিসেম্বর আন্দোলনের মুখে এরশাদ ক্ষমতা ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিল। বিরোধীদলের মতামত অনুযায়ী কার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে-এ কারণে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সাহাব উদ্দিনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন এরশাদ।
তবে ১৯৮২ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ৮ দলীয়, ৭ দলীয় ও ৫ দলীয় জোট এরশাদের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন করে। এই তিন জোটের রূপ রেখা অনুযায়ী গণতন্ত্র আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বরং স্বৈরাচারী ব্যবস্থা আরও পোক্ত হয়ে ফ্যাসীবাদীরূপ ধারণ করে।
তিনি বলেন- ছাত্র, শ্রমিক, আইনজীবী, কৃষক, শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের দাবি ও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ভাত, কাপড়, চিকিৎসা, শিক্ষা, বাসস্থান ও কাজ এ ছয়টি মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ছাড়া কোন দেশকে গণতান্ত্রিক দেশ বা সরকার বলা যায় না। তারপরও এসব বাদ দিলেও বুর্জুয়া সমাজে ৫ বছর পর পর ব্যালট পেপারে সিল মারাকে যে গণতন্ত্র বলে প্রচার করে- সেই ভোটের গণতন্ত্রও আজকে শাসক শ্রেণী হরণ করে নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে গণতন্ত্রের পরিবর্তে আজ চলছে লুটপাটতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্রের গনিভূতরূপ ফ্যাসিবাদী দু:শাসন, আইনের সুদূর পরাহত। বিচারের বাণী নির্বৃতে কাঁদে। ঘুম, খুন, ক্রসফায়ার, বিচার বর্হিভূত হত্যাকান্ড এবং নারী-শিশু নির্যাতন ক্রমাগত বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা লুটপাট, আত্মসাৎ ও পাচার অর্থনীতিকে ভঙ্গ করে ফেলেছে। ফলে ২৭ বছর পরে স্বৈরাচার পতন দিবসে দেশবাসীকে পুনরায় অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের শহীদ হন জয়নাল, জাফর, মোজাম্মেল, কাঞ্চন, দিপালী সাহা, সেলিম, দেলোয়ার, রউফুন বসুমিয়া, ময়েজ উদ্দিন, তাজুল, ডা. মিলন ও নূর হোসেনের রক্তের ঋন শোধ করতে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েমের সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :