শিরোনাম
◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ০৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৫:২৭ সকাল
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৫:২৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আল্লাহর কাছে তওবাকারীর মর্যাদা

মুফতি আবদুল্লাহ তামিম: মানবজাতিকে আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীতে প্রতিনিধি হিসেবে প্রেরণ করেছেন। শক্তি দিয়েছেন ভালো ও মন্দ কাজের। তবে আল্লাহ যে কাজে সন্তুষ্ট এমন সব কর্ম করা আমাদের জন্য কর্তব্য। যদিও কোন মানুষই অপরাধ ও ত্রুটি মুক্ত নয়। সমস্ত আদম সন্তানই ভুলের মধ্যে নিমজ্জিত। আর উত্তম ভুলকারী সেই যে আল্লাহর কাছে তওবাকারী আর মহান আল্লাহ তায়ালা কুরআনের মাধ্যমে এবং মহানবী ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ হাদীসের মাধ্যমে গুনাহ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা ও তওবা করার প্রতি উৎসাহিত করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন যে,
হে রাসূল আপনি বলুন নিশ্চয় আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার নিকট প্রত্যাদেশ পাঠানো হয়। আর নিশ্চয়ই তোমাদের ইলাহ এমন মাত্র। তোমরা তার পথেই স্থির ও সুদৃঢ় থাক। তারই কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। (সূরা ফুসসিলাত-৬)
সূরা নূরের ৩১ নং আয়াতে আল্লাহ আরো বলেন, হে মুমিনগণ তোমরা সকলে মিলে আল্লাহর কাছে তওবা কর। আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হতে পারবে। (সূরা নূর ৩১)
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন, - ওহে যারা ঈমান এনেছ তোমরা তোমাদের রবের নিকটে একনিষ্ঠতার সাথে কবুলযোগ্য তওবা কর। আশা করা যায় তোমাদের রব তোমাদের থেকে সকল গুণাহ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার তলদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রাবাহিত হয়। (সূরা তাহরীম-৮) অন্য আয়াতে বলেন, -নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা তওবাকারীদেরকে ভালবাসেন এবং তিনি পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকেও ভালবাসেন। (বাক্বারা-২২২)
আম্মার বিন ইয়াসীর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, নবী করীম ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বলেন, হে মানবজাতি তোমরা আল্লাহর কাছে তওবা কর আমি প্রতি দিনে একশতবার তওবা করে থাকি। (মুসলিম) আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, আমি রাসূল -কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, নিশ্চয় আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তার কাছে দৈনিক সত্তরবারের বেশি তওবা করি। (বুখারী)
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূল ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম’ বলেছেন, আল্লাহ তার বান্দাহর তওবার কারণে খুব খুশি হন। যখন বান্দাহ তার কাছে তওবা করে তখন বান্দাহ যে অবস্থায় থাকুক না কেন আল্লাহ তাঁর ডাকে সাড়া দেন। আর আনাস এবং ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নিশ্চয় রাসূল ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম’ বলেন, যদি আদম সন্তানের জন্য স্বর্ণ দ্বারা নির্মিত উপত্যকাও হয় তার পরেও তার কাছে দুটি স্বর্ণের উপত্যকা হওয়া ভাল মনে করবে। তারপরও তার মুখ কখনো পূর্ণ হবেনা। তবে মাটি দ্বারা পূর্ণ হবে। আর আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক তওবাকারীকেই ক্ষমা করে দেন। (বুখারী ও মুসলিম)

অতঃপর তওবা হল আল্লাহর অবাধ্যচারণ থেকে ফিরে গিয়ে আল্লাহর আনুগত্য পথের দিকে ধাবিত হওয়া। কেননা আল্লাহ হলেন প্রকৃত ইবাদত পাবার যোগ্য। আর প্রকৃত ইবাদত হল মাবুদের জন্য তার প্রেম, ভালবাসায় ও মহত্বের বিনয়ী হওয়া।
আর দ্রুত তওবা করা আবশ্যক। বিলম্ব করা কোনক্রমেই ঠিক নয়। কেননা আল্লাহ তায়ালা এবং তার রাসূল ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ তওবা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আর তাই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সকল নির্দেশই দ্রুত দ্রুততার সাথে সাথে পালন করা উচিত। কেননা বান্দাহ জানেনা যে, বিলম্বে কোন কাজ করলে তা কি অর্জন করা যাবে কিনা? কেননা হঠাৎ তার মৃত্যু এসে পড়তে পারে। অতঃপর সে তওবা করার সুযোগ পাবে না। আর অন্যায় কাজ বারবার করার মাধ্যমে অন্তর কঠিন হয়ে যায় এবং আল্লাহর হুকুম পালনে দূরত্বে অবস্থান করে। আর তার ঈমান দুর্বল হয়ে যায়। কেননা ঈমান আল্লাহর আনুগত্যের মাধ্যমে বৃদ্ধি পায় এবং অন্যায় করার মাধ্যমে ঈমান কমে যায়। কেননা বারবার অপরাধ করার দ্বারা অপরাধ করার প্রতি মানসিকতা তৈরী হয়। আর যখন কোন আত্মা কোন বস্তুর প্রতি সীমালংঘন করে ফেলে তখন তার থেকে পৃথক হওয়া কঠিন হয়ে যায়। এবং তখন তার উপর শয়তান বিজয়ী হয়ে বসে। আর অন্যান্য অপরাধ করার প্রতি অনুপ্রেরণা যোগায়। এ জন্যইতো ওলামায়ে কেরাম বলে থাকেন যে, নিশ্চয় সকল ধরনের অপরাধ কুফুরী বৃদ্ধি করে। ফলে মানুষ ধাপে ধাপে একটি অপরাধ থেকে আরেকটি অপরাধে লিপ্ত হয়ে যায়। এমনকি সে দ্বীন থেকে দূরে সরে চলে যায়।

তওবা কবুল হওয়ার শর্ত পাঁচটি
এক. তওবা একনিষ্ঠতার সাথে হওয়া চাই আল্লাহর প্রতি ভালবাসা ও তার মহত্বের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা এবং তাঁর কাছে কল্যাণের আশা করে তাঁর শাস্তি থেকে ভয় পাওয়া। এ তওবা দ্বারা পার্থিব কোন বস্তু কামনা অথবা কোন সৃষ্টজীবের কাছে কিছু প্রার্থনা না করা চাই। আর যদি কেউ এমনটি করে তাহলে তার তওবা কবুল হবে না। কেননা সে অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে তওবা করেছে। সে আল্লাহর কাছে তওবা করেনি এবং সে একটা নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে তওবা করেছে।
দুই. তার পূর্বকৃত গুণাহর জন্য লজ্জিত ও হীন হওয়া চাই। সে এই আশা করবে যে তার এই তওবা কবুল না হলে সে কিছুই অর্জন করতে পারবে না। আর তার এই তওবা হবে আল্লাহর ডাকে সারা দেয়া এবং তার কৃত অপরাধের শাস্তির ভয় স্মরণ করা। তাহলে তার তওবা হবে একান্ত বিশ্বাসের সাথে এবং চাক্ষুষের সাথে।
তিন. অতি তাড়াতাড়ি গুণাহের কাজ থেকে দূরে সরে যাওয়া। কেননা নিষিদ্ধ কাজ দ্বারা যদি অপরাধ হয়ে যায় তাহলে সে উহার মধ্যে ধাবিত হবে। আর তার অপরাধ যদি কোন আবশ্যকীয় কাজ বর্জনের মাধ্যমে হয় তাহলে তা অবশ্যই সাথে সাথে করে নিবে। যতটুকু সম্ভব সাথে সাথে পূরণ করে নিবে। যেমন যাকাত ও হজ্ব।
আর কোন ব্যক্তি বারবার কোন অপরাধ করার দ্বারা তওবা করায় কোন লাভ নেই। ধরা যাক, কেউ সুদ খাওয়া থেকে তওবা করল অথচ সে সুদের কাজে কর্মে সর্বদা ব্যস্ত থাকে তাহলে তার এই ধরনের তওবা করার দ্বারা কোন লাভ হবে না। বরং তার তওবা হবে হাসি-ঠাট্টা ও বিদ্রুপ করার ন্যায়। এর দ্বারা সে আল্লাহ তার আয়াতসমূহের সাথে অবজ্ঞা আচরণ করল। এর দ্বারা তাকে আল্লাহর রহমত থেকে দূরে সরিয়ে দিবে। আবার যদি কেউ তওবা করে জামাতের সাথে নামায পড়া আর কখনো ত্যাগ করবে না, অথচ সর্বদা সে জামাতে নামায ত্যাগ করে চলে, তাহলে তার এই তওবা করার দ্বারা কোন লাভ হবে না।
আর যখন সৃষ্টজীবের অধিকারের সাথে সংশ্লিষ্ট কোন ব্যাপারে অপরাধ করে বসে তখন সৃষ্টজীবের অধিকার আদায় না করা পর্যন্ত তার তওবা সঠিক হবে না। কোন ব্যক্তি অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে হস্তগত করে অথবা কারো সম্পদ নিয়ে আবার অস্বীকার করে তাহলে উক্ত ব্যক্তির সম্পদ ফিরিয়ে না দেয়া পর্যন্ত তওবা সঠিক হবে না। যদি ইতিমধ্যে উক্ত সম্পদের মালিক আরো পায় তাহলে তার উত্তরাধিকারীদের কাছে ফিরিয়ে দিবে। আর যদি তার কোন উত্তরাধিকারী জীবিত না থাকে তাহলে বাইতুল মালে আদায় করে দিবে। আর যদি এমন হয় যে, কোন ব্যক্তি এই হস্তগত সম্পদের মালিক তাহলে উক্ত সম্পদশীল ব্যক্তির নামে সাদকাহ করে দিবে।
চার. এ ধরনের সুদৃঢ় সিদ্ধান্ত নেয় যে, এই ধরনের অপরাধ ভবিষ্যতে আর কখনো করবে না। কেননা ইহা তাওবার ফল এবং তওবাকারীর জন্য একটা সত্যতার দলিল। যদি কেউ বলে যে, নিশ্চয় সে তওবা করছে এবং সুদৃঢ় সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর কখনো করবে না অথবা তওবা করেছে এই নিয়তে যে সে বারবার এই কাজ করবে আবার তওবা করবে তাহলে তার তওবা কবূলযোগ্য হবে না। কেননা তাহলে তার এই তওবা হবে অনর্থক যা দ্বারা তার কোন প্রকার দ্বীন ও দুনিয়ার উপকার আসবে না।
পাঁচ. তওবা কবূলের সময় শেষ হবার পর আর কখনো গুণাহর কাজ করবে না। কেননা যদি তওবা কবূলের সময় শেষ হবার পর আবারও উক্ত গুণাহ করে তবে তার তওবা কবূল করা হবে না। আর তওবা কবূলের সময় শেষ হওয়া দু-ধরনের। একটি হলো ব্যাপকভাবে প্রত্যেকের জন্য। আর দ্বিতীয়টি হল প্রত্যেকটি ব্যক্তির নিজস্বতার জন্য। সাধারণভাবেঃ আর উহা হল পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদয় হওয়া। আর পশ্চিম দিকে সূর্য যখন উদিত হবে তখন আর তওবাহ করার দ্বারা কোন উপকার হবে না। এ ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেন-
তখন আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেকটি অন্তকরণে মোহর মেরে দিবেন এবং মানুষের আমল করার সুযোগ শেষ হয়ে যাবে। (আনআমÑ১৫৮)
নবী করমি ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ আরো বলেন-
যে ব্যক্তি সূর্য পশ্চিম দিক উদয় হবার পূর্ব সময় পর্যন্ত তওবা করবে তার তওবা আল্লাহ কবুল করবেন। (মুসলিম)
বিশেষভাবেঃ প্রত্যেকটি ব্যক্তির মৃত্যুর সময় উপস্থিত হলে। কেননা মৃত্যুর সময় হাযির হয়ে গেলে তার আর তওবা কবুলের সময় থাকে না। ফলে তওবা করলেও কোন লাভ হবে না। কেননা আল্লাহ তায়ালা বলেন আর তাদের তওবা কোন কাজে আসবে না যারা খারাপ আমল করে যতক্ষণ না তাদের নিকট মৃত্যু উপস্থিত হয়। আর মৃত্যু কালিন সময়ে বলে যে, আমি এখন তওবা করলাম। ( সূরা নিসা-১৮) আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন যে, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা বান্দাহর তওবা কবুল করে থাকেন যতক্ষণ না তার রুহ অবশিষ্ট থাকে। (তিরমিযী) আর যখনই সব শর্তানুযায়ী তওবা করা হয় তখন তওবা কবূল করা হয় এবং আল্লাহ তাআলা এর দ্বারা বঙ ধরনের অপরাধও ক্ষমা করে দিবেন। এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন, হে রাসূল আপনি বলে দিন হে আমার বান্দাহরা যারা নিজেদের আত্মার উপর অত্যাচার করেছ তোমরা কখনোই আল্লাহর রহমত হতে হতাশ হয়ে যেওনা। নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা সব গুণাহকে ক্ষমা করে দিবেন। কেননা তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল ও দয়ালু। (সূরা যুমার-৫৩) এই আয়াতটি আল্লাহর দিকে সাক্ষ্যদানকারী ও তওবাকারী ব্যক্তিদেরকে মুসলিম বলে প্রমাণ করে। যেমন মহান আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি কোন খারাপ আমল করে অথবা নিজের প্রতি অত্যাচার করে এরপর ক্ষমা প্রার্থনা করে না। এর পরেও সে আল্লাহকে অতিশয় ক্ষমাশীল ও দয়ালু হিসেবে পাবে।

অতএব, তোমরা অতি দ্রুত তওবা কর। আল্লাহতাআলা তোমাদের উপর অনুগ্রহ করবেন এবং তোমাদের মৃত্যু আসার পূর্ব পর্যন্ত তোমাদের প্রতি কবুলযোগ্য তওবার মাধ্যমে তোমাদেরকে অনগ্রহ করবেন। এ ছাড়া তোমরা গুনাহ মুক্ত হতে পারবে না।
হে আল্লাহ কবূলযোগ্য তওবা করার জন্য আমাদেরকে তাওফীক দাও। এমন তওবা যা দ্বারা আমাদের পূর্ববর্তী সব গুনাহ ক্ষমা হয়ে যায়। আমাদের জন্য সব কাজকর্ম সহজ করে দাও। কাজ কর্মে কাঠিন্যতা দূর কর। হে আল্লাহ আমাদেরকে, আমাদের মাতা-পিতাদেরকে এবং সব মুমিনকে ইহ্কালে ও পরকালে ক্ষমা করে দাও। যারা মৃত্যুবরণ করেছে তাদের কবর জান্নাতের বাগান বানিয়ে দাও।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়