প্রত্যাশা প্রমিতি সিদ্দিক: নাদিয়া মুরাদ, আইএস (ইসলামিক স্টেট) এর কাছ থেকে ফেরত আসা এক তরুণী। ২০১৪ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে অপহৃত ইয়াজিদী এই তরুণী উদ্ধারের পর তাঁর বন্দী থাকাকালীন সময়ের নির্যাতনের করুণ কাহিনীর বর্ণনা করেন বই ‘দ্য লাস্ট গার্ল: মাই স্টোরি অভ ক্যাপটিভিটি, এন্ড মাই ফ্লাইট এগেনিস্ট ইসলামিক স্টেট’। যেখানে উঠে এসেছে আইএসের বর্বতার চিত্র।
দক্ষিণ ইরাকের কোচো নামক গ্রাম থেকে অপহরণ করা হয় নাদিয়াকে। গ্রামটিতে আক্রমণের পর ইয়াজিদীরা ময়ূরের উপাসনা করায় সব পুরুষকে মেরে ফেলা হয়। তার ৬ ভাই ও মাকেও মেরে ফেলা হয়। এরপর গ্রামের সকল মেয়েদের সঙ্গে তাকেও যৌনদাসী হিসেবে মসুল ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।
টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে নাদিয়া বলেন, ‘বাসে উঠার পর থেকেই আমার উপর শুরু হয় অকথ্য নির্যাতন। আমি কাঁদছিলাম কিন্তু আমার প্রতি তাদের কোন করুণা হয় নি।
পরবর্তীতে তাকে দাসী হিসেবে এক বিচারকের বাসায় বিক্রি করে দেয়া হয়। সেখানে তাকে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ ও মারধর করা হত। মেহমানদের সামনে বিভিন্ন ধরণের পার্টি ড্রেস পরে তাকে আপ্যায়ন করতে হত, প্রচুর সাজগোজও করতে হত। আর ধর্ষণের সময় যদি ব্যথায় তার চোখ বন্ধ হয়ে যেত তাহলে তার উপর নেমে আসত ভয়ংকর অত্যাচার।
একদিন তিনি পালানোর চেষ্টা করলে তাকে শাস্তিস্বরুপ ৬ জন নিরাপত্তা কর্মী দিয়ে একের পর এক ধর্ষণ করানো হয়। নাদিয়া বলেন, যখনই দরজা খুলতাম কেউ না কেউ ধর্ষণ করতে আসত। প্রতিটা দিন ছিল জঘন্যতম।
এরপর একদিন নাদিয়া ডুহকে পালিয়ে এসে পশ্চিমা এক সাংবাদিকের সাথে পরিচিত হন। তিনি জার্মান সরকারের ১০০০ উদ্বাস্তু নারীর একজন নির্বাচিত হন। নৃশংস অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি তার বইতে লিখেছেন, আমিই যেন পুরো পৃথিবীর মধ্যে শেষ নারী হই যাকে এই ধরণের নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। বর্তমানে তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের মর্যাদাপূর্ণ ‘শাখরোভ’ পুরষ্কার পান। দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট
আপনার মতামত লিখুন :