মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান : রাজনীতি একটি সুমহান ব্রত। যারা সমাজ, রাষ্ট্র ও জনগণের জন্য কিছু করার আগ্রহ অন্তরে লালন করে তাদের জন্য রাজনীতিই হচ্ছে উত্তম ব্যবস্থা। মোট কথা জনগণ ও দেশের সেবক হতে চাইলে রাজনীতি একটি বড় মাধ্যম।
কিন্তু আজ দেশের রাজনীতির চিত্র ভিন্ন। এক সময় যারা রাজনীতি করত তাদের মূল দায়িত্বই ছিল জনগণের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করা। দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকার করা।
আজ দেশে ত্যাগের রাজনীতির পরিবর্তে ভোগের রাজনীতি চলছে।
আগের রাজনীতিবীদরা নিজেদের অর্থ দিয়ে দল পরিচালিত করত। আর এখন অতি তাড়াতাড়ি বড় লোক হওয়ার জন্য রাজনীতি করা হয়। রাজনীতির মতো একটি মহান সেবা মূলক প্রতিষ্ঠানকে আজ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটে পরিণত করে ফেলা হয়েছে।
দেশের রাজনীতি এখন আর রাজনীতিবীদদের হাতে নেই, তা চলে গেছে ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে।আজ সুস্থ রাজনীতি অসুস্থ রাজনীতিতে রূপান্তরিত হওয়ার মূল কারণ হলো আজকের ব্যবসায়ীমহল রাজনীতিবীদ হতে চায়, আর রাজনীতিবীদরা ব্যবসায়ী হতে চায়। যার জন্য যে যার মতো করে চলছে, কারও কাছে কারও কোনো জবাবদিহীতা নেই।
রাজনৈতিক দল সমূহের কর্ণধারদের মনে রাখা উচিত, যারা ব্যবসার জন্য রাজনীতিতে আসে তারা ব্যবসা করে চলে যাবে। দল যখন কোনো বিপদের সম্মুখীন হয় এই ব্যবসায়ীরা তখন হয়তো বিদেশ চলে যায় নতুবা অন্য কোনো অজুহাত দেখিয়ে সে দল থেকে অনেক দূরে চলে যায়।
যারা নিজেদের ঘাম অর্থ খরচ করে দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে দলকে ভালবেসে সে দলের সাথে জনগণকে সম্পৃক্ত করে তাদের মূল্যায়ন করা উচিত।
কিন্তু দঃখের বিষয় হলো ঐ সমন্ত ব্যবসায়ী চক্র রাজনৈতিক দলগুলোতে এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে রেখেছে যার কারণে ঐ কমিটি যে দলের জন্য রাতদুপুর নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়ে কঠোর পরিশ্রম করে দলকে প্রতিষ্ঠিত করেছে সে আর দলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ছায়ায় ও ঘেষতে পারে না।
যার কারণে সেই কর্মিটি একদিন দল থেকে হারিয়ে যায়, আর তখন ঐ ব্যবসাদার যারা নিজেদের আখের গোছাতে রাজনীতিতে এসেছে রাজনীতিকে যারা পেশা বানিয়ে ফেলেছে সে ঐ জায়গাটুকু আরও পাকাপোক্ত করে দখল করে নেই।
এখনো সময় আছে, যারা দেশ, জাতীর কল্যাণে রাজনীতি করেন তারা যদি সুস্থ রাজনীতির ধারা ফিরিয়ে আনতে ব্যার্থতার পরিচয় দেয় তাহলে বাংলাদেশে রাজনীতি বলতে কিছু ই থাকবে না।
লেখক : সাংগঠনিক সম্পাদক, ইসলামী ঐক্যজোট, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
আপনার মতামত লিখুন :