শিরোনাম
◈ ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনা, সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন ◈ সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণেই সড়ক দুর্ঘটনার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে: মির্জা ফখরুল ◈ বাংলাদেশের রাজনীতির অবনতি দুঃখজনক: পিটার হাস ◈ সয়াবিন তেলের দাম লিটারে বাড়লো ১০ টাকা  ◈ নির্বাচনি ইশতেহারের আলোকে প্রণীত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের আহবান শিল্পমন্ত্রীর  ◈ প্রচণ্ড গরম থেকেই ঘটতে পারে মানবদেহের নানা রকম স্বাস্থ্য ঝুঁকি ◈ অবশেষে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি  ◈ ইসরায়েল পাল্টা হামলা করলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে জবাব দেবে ইরান: উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ মিয়ানমারের আরও ১৫ সেনা সদস্য বিজিবির আশ্রয়ে ◈ সয়াবিনের দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২০ নভেম্বর, ২০১৭, ১০:৩০ দুপুর
আপডেট : ২০ নভেম্বর, ২০১৭, ১০:৩০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জোট বাড়াতে তৎপর দু’দল

রাহাত : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দুই প্রধান দল জোটের পরিধি ও শক্তি বাড়াতে তৎপরতা শুরু করেছে। এ নিয়ে পর্দার আড়ালে নানামুখী সমীকরণ চলছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে।

তবে এ কথা সত্য, যে দলগুলোকে জোটে ভেড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে তাদের ভোটের হিসাব-নিকাশে তেমন কোনো প্রভাব বিস্তারের সক্ষমতা নেই। কিন্তু ভোটের মাঠে সাধারণ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে কিছু পরিচিত মুখকে তারা সামনে রাখতে চান। জোট ভারি করে বোঝাতে চান বেশিরভাগ দল তাদের সঙ্গে আছে।

সূত্র জানিয়েছে, এরকম একটি হিসাব-নিকাশ সামনে রেখে তৃণমূল বিএনপি ও ইসলামী ফ্রন্টের আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জোটে যোগ দেয়া প্রায় নিশ্চিত। চলছে হেফাজতের সঙ্গেও সমঝোতার উদ্যোগ। অপরদিকে ২০ দলীয় জোট অক্ষুন্ন রেখে এর পরিধি বাড়ানোর পক্ষে বিএনপি ও এর বেশিরভাগ শরীক। অন্ততপক্ষে যুগপৎ আন্দোলন ও সমঝোতার ভিত্তিতে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী দেয়ার চিন্তাভাবনা করছে বিএনপির হাইকমান্ড।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একজন নীতিনির্ধারকরা বলেন, সময় এলে অনেক চমক দেখা যাবে। যারা নির্বাচনী জোটে যুক্ত হবেন তারা সবাই ক্ষমতার সঙ্গী হতে চাইবেন। ফলে তারা জনসমর্থনের পাল্লা যেদিকে ভারি সেদিকেই ঝুঁকবেন। সেসব চমক নমিনেশন জমা দেয়ার আগের দিনও ঘটতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিষয়টি মনস্তাত্ত্বিক। মূলত ভাসমান ভোটারদের মন জয় করতে বড় দুটি দল গত দু’দশক থেকে জোটগত নির্বাচনের ফর্মুলা বেছে নিয়েছে। দল দুটির নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, সাধারণত ‘ভোট নষ্ট’ না করার উদ্দেশ্যে সম্ভাবনাময় জয়ী দলকে ভোট দিয়ে থাকেন এসব ভোটার। আর এটাও সত্য যে, জয়-পরাজয়ের প্রধান ফ্যাক্টর ভাসমান ভোট। যারা বাতাস বুঝে শেষ মুহূর্তে দল ও প্রার্থী নির্বাচন করে থাকেন। এসব কারণে ভাসমান বা ফ্লোটিং ভোটারদের লক্ষ্য করেই জোট সম্প্রসারণের কাজ চলছে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রোববার বলেন, ২০ দলীয় জোট অটুট রয়েছে। এখনও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়নি। তাই আগামী নির্বাচনে তারা আমাদের সঙ্গে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জোট-মহাজোটের বিষয়টি একটি রাজনৈতিক কৌশল। পরিস্থিতি বিবেচনা করেই এ কৌশল চূড়ান্ত করা হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী জোট সম্প্রাসারণের কোনো সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। তবে জোটের পরিধি যে আর বাড়বে না এটাও নিশ্চিত বলা যাবে না। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সামনে রাজনীতিতে নানা মেরুকরণ হতে পারে। তখন পরিস্থিতি বুঝেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ রোববার বলেন, এ মুহূর্তে আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধ অবস্থায় আছে এবং জোটের ঐক্য সূদৃঢ় করার ওপর জোর দিচ্ছে। আমরা আশা করি, আগামী নির্বাচনে জোট আরও শক্তিশালী করে নির্বাচনে অংশ নেব।

এদিকে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ছোট ছোট ইসলামী দল ও সংগঠন নিয়ে ইতিমধ্যে জোট গঠন করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এবারও তিনি সরকার গঠনের ট্রাম্পকার্ডে পরিণত হতে পারেন। মাঠের রাজনীতিতে সাংগঠনিকভাবে জাতীয় পার্টি আগের তুলনায় অনেক শক্তিশালী। তাই আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে কাছে টানতে দুই প্রধান দলের নানামুখী গোপন তৎপরতা যে থাকবে, সেটি নিশ্চিত বলা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় পার্টির একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, জাতীয় পার্টির সমর্থন ছাড়া কেউ সরকার গঠন করতে পারবে না। আগামী জাতীয় নির্বাচনে এটি আরও একবার প্রমাণিত হবে।

সূত্র জানায়, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে সামনে রেখে জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাসদসহ কয়েকটি দল মিলে তৃতীয় একটি জোট গঠনের তৎপরতা চালাচ্ছেন। তারা এ নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকও করেন। নতুন সম্ভাব্য এ জোটের দিকে তীক্ষ্ম নজর রাখছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। তাদের অনেকের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখছেন দল দুটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।

অপর দিকে রাজনৈতিক দল না হয়েও হেফাজতে ইসলামীসহ বেশ কিছু ইসলামী সংগঠনের সমর্থন পাওয়া নিয়ে অনেকটা আগেভাগে তৎপরতা শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বেশ কিছু পদক্ষেপ ছিল চোখে পড়ার মতো। ওদিকে বিএনপি বরাবরের মতো এবারো মনে করছে, হেফাজতসহ ইসলামী দলগুলো তাদের বড় ভোট ব্যাংক। বিদ্যমান প্রেক্ষাপট ও পরিস্থিতির কারণে অনেকে অনেক কথা বললেও শেষ পর্যন্ত এসব ভোট তাদের বাইরে অন্য কোথাও যাবে না।

কিন্তু কারণ যাই হোক, আওয়ামী লীগের কয়েকটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, আগামী নির্বাচনে হেফাজতের সমর্থন নৌকার পক্ষে আসবে। সময় এলে দেশবাসী এমন খবর প্রকাশ্যে জানতে পারবে। রাজনীতির মাঠে হেফাজতকে নিয়ে এই যখন অবস্থা, তখন ধর্মীয় এ সংগঠনটির নেতাদের রাজনৈতিক গুরুত্ব আগের তুলনায় অনেক বেশি।

সূত্র বলছে, এ সুযোগে পর্দার আড়ালে তাদের দরকষাকষির শক্ত অবস্থান আরও মজবুত হয়েছে।

জোট সম্প্রসারণে আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি : বিভিন্ন দলের সঙ্গে ঐক্যের মাধ্যমে জোটগতভাবে আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ ক্ষেত্রে আদর্শিক জোট ১৪ দলকে অক্ষুণœ রেখে নির্বাচনী জোটের কলেবর বৃদ্ধি করা হবে। গত দুই নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে (এরশাদ) সঙ্গে নিয়ে ভোট করেছে আওয়ামী লীগ, যা মহাজোট নামে পরিচিত। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এই জোটে নাজমুল হুদার নেতৃত্বাধীন তৃণমূল বিএনপি এবং ইসলামিক ফ্রন্টের যোগদানের বিষয়টি ইতিমধ্যে নিশ্চিত। এ ছাড়া বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের যোগদানের সম্ভাবনা রয়েছে। আর হেফাজতে ইসলাম রাজনৈতিক দল হিসেবে আবির্ভূত না হতে পারলেও আওয়ামী লীগের সমর্থনে কাজ করবে বলে আশা করছেন দলটির শীর্ষমহল। তা ছাড়া জাতীয় পার্টি (এরশাদ) নেতৃত্বাধীন যে জোটটি রয়েছে সেটাকেও সঙ্গে রাখতে জোর তৎপরতা চালাবে ক্ষমতাসীনরা।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলছেন, আগামী নির্বাচন হবে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। তারা জোটগত ঐক্য অক্ষুণœ রেখেই এ নির্বাচনী যুদ্ধে অবতীর্ণ হবেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একজন নেতা জানান, বিভিন্ন সময় নানা ইস্যুতে অনেকের সঙ্গেই আলোচনা হয়েছে। এখনও আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। যেহেতু নির্বাচনের এখনও এক বছর বাকি, তাই এখন চূড়ান্ত করে বলা যাচ্ছে না- কোন কোন দল নির্বাচনী জোটে থাকবে। তবে জোটের ঐক্য অটুট রাখা এবং পরিধি বাড়ানোর মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন তারা। আর এসবের মাধ্যমে অন্যদের এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক বার্তাও দিতে চায় তার দল।

এমন মন্তব্যের বিষয়ে প্রমাণও মিলেছে। ১৪ দলের শরিক জাসদ একাংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু সম্প্রতি কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগ শরিকদের ছাড়া ক্ষমতায় আসতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ে এই বক্তব্যের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া শোনা গেলেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, অভিমান থেকে ইনু এমন কিছু বলে থাকতে পারেন, যা দল ও জোটে আলোচনা করে সমাধান করা হবে। আর ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এই মুহূর্তে কারোই এমন কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না- যা জোটের ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এখন দ্বন্দ্বের সময় নয় ঐক্য সুদৃঢ় করার সময়।

সূত্র জানায়, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর জোটে যোগ দেয়া নিয়ে দলের শীর্ষ মহলে আলোচনা হয়েছে। আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী প্রেসিডিয়াম সদস্যের সঙ্গে বঙ্গবীরের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। সময় হলে তাকে ১৪ দল এবং নির্বাচনী জোটে যোগ দেয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হবে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে রোববার যুগান্তরের পক্ষ থেকে কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

এদিকে তৃণমূল বিএনপি এবং ইসলামী ফ্রন্ট দুটি দলেরই ১৪ দলে যোগ দেয়া নিয়ে আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে। এর আগে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ২০১৬ তে জোটের একটি বৈঠকেও অংশ নিয়েছিলেন। একইভাবে ২০১৭ এর জুন মাসে জোটের বৈঠকে যোগ দেয়ার জন্য উপস্থিত হয়েছিলেন ইসলামী ফ্রন্টের নেতারাও। কিন্তু এ দুটি দলের গঠনতন্ত্রের সঙ্গে ১৪ দলের মূল চেতনার মিল না থাকায় এরা জোটের শরিক হতে পারেনি। পরবর্তীতে দুটি দলকেই নির্বাচনী জোটে শরিক করার বিষয়ে নিশ্চিত করা হয়।

তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা রোববার বলেন, নির্বাচনী জোটে যোগ দেয়া নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ১৪ দলের সঙ্গে তার আলোচনা হয়েছে। তার নির্বাচনী জোটে যোগ দেয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তাকে ঢাকার গুলশান-বনানীর নির্বাচনী আসনে (ঢাকা-১৭) কাজ করতে বলেছেন।

ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সৈয়দ বাহাদুর শাহ মুজাদ্দেদী বলেন, তাদের ১৪ দলে যোগ দেয়ার আলোচনা বহুদূর এগিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এ আলোচনা চূড়ান্ত রূপ নেয়নি। আগামীতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে নির্বাচনী জোট হলে তার দল তাতে অংশ নিতে পারে বলে ১৪ দলীয় জোটের সিদ্ধান্ত তাকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, ২০০৭ সালে নির্বাচনের যে তারিখ ঘোষিত হয়েছিল তখন তাকে চাঁদপুর-৫ আসন থেকে মনোনয়নও দেয়া হয়। কিন্তু সে নির্বাচন হয়নি। আগামীতে তিনি ঐ আসনটিই চাইবেন।

এদিকে হেফাজতে ইসলামের সঙ্গেও সরকারের এক ধরনের সমাঝোতা রয়েছে বলে একটি সূত্র জানায়। সূত্রমতে, সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে হেফাজতের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা অব্যাহত আছে। এমনকি সম্প্রতি হেফাজতের ইসলামের নায়েবে আমীরের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে হেফাজত এবং তাদের অনুসারী আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দল এবং সংগঠন সরকারের সঙ্গে থাকতে পারে। অবশ্য ইতিমধ্যেই ২০টি আসনে সরকারের সহযেগিতা চেয়ে খসড়া চিঠি প্রস্তুত করেছে ইসলামী ঐক্যজোট। প্রসঙ্গত, ইসলামী ঐক্যজোট হেফাজত সংশ্লিস্ট নিবন্ধিত একটি রাজনৈতিক দল। এছাড়াও খেলাফত আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও খেলাফত মজলিসের মতো নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে হেফাজতের অংশীদারিত্ব রয়েছে। তবে ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও খেলাফত মজলিস বিএনপি জোটের শরিক।

বিএনপি জোট : জোটের পরিধি বাড়ানোর চিন্তাভাবনা চলছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে। সরাসরি বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটে যোগ না দিলেও অন্ততপক্ষে যুগপৎ আন্দোলন ও সমঝোতার ভিত্তিতে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী দেয়ার চিন্তাভাবনা করছে দলটি। তবে পরিধি বাড়ানোর আগে বর্তমান জোটের ঐক্যের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। জোটের শরিক দলগুলোকে সরিয়ে নিতে সরকারের নানা তৎপরতার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই তারা এমন সিদ্ধান্ত নেন। সম্প্রতি জোটের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে স্পষ্টত তিনি জানিয়ে দেন, আগে জোটের ঐক্য অটুট রাখতে হবে। তিনি জোট নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের জোট থেকে বের করে নিতে নাকি সরকার নানা অফার দিচ্ছে।’ সরকারের এসব টোপে পা না দিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

সূত্র জানায়, ২০ দলীয় জোটের কয়েকটি শরিক দলের মধ্যে চলছে নানা অস্থিরতা। জোটের প্রধান শরিক জামায়াতে ইসলামী। বিএনপির ওপর জামায়াত ছাড়ার প্রবল চাপ অনেক আগে থেকে থাকলেও বাস্তবে তেমন কোনো প্রতিফলন নেই। এছাড়া ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশ সম্প্রতি জোট থেকে বেরিয়ে যায়। সর্বশেষ লেবার পার্টিও দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। জোটের মধ্যে এসব অস্থিরতা কাটিয়ে কীভাবে ঐক্য আরও অটুট রাখা যায় সে ব্যাপারে সতর্ক বিএনপির হাইকমান্ড।

সূত্র জানায়, ২০ দলীয় জোটের পরিধি বাড়ানোর চেয়ে সরকারবিরোধী ও সমমনা দল নিয়ে নির্বাচনী জোট করার পক্ষেই বেশি জোর দিচ্ছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। জোটের অন্য শরিক দলগুলোর মনোভাবও প্রায় এরকম। এমন পরিস্থিতিতে সমমনা ও সরকারবিরোধী হিসেবে পরিচিত দল ও সংগঠনের সমর্থন আদায়ে নানা পরিকল্পনা নিচ্ছে বিএনপির হাইকমান্ড। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের দায়িত্বশীল সিনিয়র কয়েক নেতা আওয়ামী লীগ জোটের বাইরে থাকা অন্য দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। বিভিন্ন সময়ে ওইসব নেতার সঙ্গে একাধিক বৈঠকও করেছেন তারা। বিশেষ করে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম, বি চৌধুরীর বিকল্পধারা, আ স ম আবদুর রবের জেএসডি, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্যসহ কয়েকটি বাম দলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। এসব দলের সঙ্গে নির্বাচনী জোট বাড়াতে চায় দলটি। প্রয়োজনে এদের মধ্যে কোনো দল জোটে আসতে চাইলেও কোনো আপত্তি থাকবে না। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দলগুলোর সঙ্গে ভিতরে ভিতরে আলোচনাও চলছে বিএনপির। ভোটে ‘সরকারবিরোধী ঐক্য’ হলে বেশ কয়েকটি আসনও ছাড় দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। যুগান্তর

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়