লিহান লিমা: শ্রীলঙ্কায় শনিবার বৌদ্ধ-মুসলমান সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ৮জন আহত হয়েছে ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ৯০টিরও বেশি বাড়ি ও গাড়ি উড়িয়ে দেয়া হয়েছে। দাঙ্গার ঘটনাটিকে ঘিরে সম্প্রদায় দুটির মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। শ্রীলঙ্কান সেনাবাহিনী গিনথোটা শহরে টহল দিচ্ছে।
পুলিশ জানায় গত শুক্রবার রাতে উপকূলীয় শহরটিতে সামাজিক গণমাধ্যমে একটি গুজব ও মিথ্যা সংবাদ ছড়িয়ে পড়ায় দাঙ্গার উৎপত্তি হয়। অঞ্চলটিতে আগে থেকেই বৌদ্ধ ও মুসলমানদের মধ্যে বৈরীভাব ছিল। পুরো অঞ্চলে অতিরিক্ত পুলিশ, দাঙ্গা পুলিশ ও স্পেশাল ফোর্স নিয়োগ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এক সিংহলিজ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীর মোটরসাইকেলের ধাক্কায় এক মুসলিম নারী আহত হয়। ওই দুর্ঘটনার জেরে সংঘাতের সূচনা হয়। পুলিশের মুখপাত্র রুয়ান গুনাসেকারা রয়টার্সকে বলেন, ‘একটি ছোট্ট ভুল বোঝাবুঝিকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠির মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এই সংঘাত দুই স¤প্রদায়ের কিছু উগ্রবাদীর সৃষ্ট। আটককৃত এক নারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুসলিমরা বৌদ্ধ মন্দিরে আক্রমণ করতে যাচ্ছে বলে ভুয়া পোস্ট করে।’
দেশটির আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মন্ত্রী সাগালা রত্নানায়েকে বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সংঘাত ছড়াতে ভুয়া ভিডিও ও সংবাদ এবং সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করা হচ্ছে। যারা বর্ণবাদী প্রচারণা চালাবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বৌদ্ধ অধ্যুষিত শ্রীলঙ্কায় ২ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ বৌদ্ধ, আর ৯ শতাংশ মুসলমান। বৌদ্ধ-মুসলমান দাঙ্গা, সংঘাত-সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় ও সংখ্যালঘূ মুসলমানদের পাশে দাঁড়াতে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট মাহেন্দ্র রাজা পাকশে ইতোমধ্যে অনেকবার মানবাধিকার সংস্থা ও কূটনীতিকদের দ্বারা সমালোচিত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত দুই মাসে মুসলিম দোকান ও মসজিদে পেট্রল বোমা হামলাসহ ২০টি হামলার ঘটনা ঘটে। এর আগে, ২০১৪ সালে বৌদ্ধ -মুসলিম সহিংসতায় হাজার হাজার মুসলিম নাগরিককে ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা হয়। রয়টার্স, এএফপি । সম্পাদনা: প্রত্যাশা প্রমিতি সিদ্দিক
আপনার মতামত লিখুন :