শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ১৯ নভেম্বর, ২০১৭, ০৪:৫৫ সকাল
আপডেট : ১৯ নভেম্বর, ২০১৭, ০৪:৫৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যানজটে জবাবদিহিহীন ট্রাফিক ব্যবস্থা

ডা. জাকির হোসেন : নানা সমস্যার ভারে জর্জরিত ঢাকা শহর। সব সমস্যাকে ছাড়িয়ে গেছে ঢাকার ভয়াবহ যানজট। নগরজীবন নিয়ে যে কোনো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ঢাকাবাসীর হাহাকার যানজট নিয়ে। মগবাজার মৌচাক ফ্লাইওভার উদ্বোধন হওয়ার পর নগরবাসীর আশা ছিল যানজট সহনীয় মাত্রায় নেমে আসবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে তার উল্টো চিত্র। এর মধ্যে আরেক খারাপ নিউজ হলো, মৌচাক মগবাজার নকশার ত্রুটির জন্য এখন ফ্লাইওভারের উপরে ট্রাফিক সিগনাল বসাতে হয়েছে। সব মিলিয়ে যানজট সহনীয় মাত্রায় নেমে আসার আশা এখন দূরাশায় পরিণত হয়েছে। তবে কি এই দুঃসহ যানজট থেকে নগরবাসীর পরিত্রাণের কোনো পথ খোলা নেই।

 

পথ অবশ্যই আছে। অনেকগুলো স্বল্প মেয়াদী প্রকল্প গ্রহণ করে নগরবাসীকে স্বস্তি দেওয়ার পথ খোলা আছে। কিন্তু সেটা বাস্তবায়নের জন্য যেন কারো কোনো আগ্রহ নেই। যানজট নিরসনে আমাদের ট্রাফিক সিস্টেম সম্পূর্ণ টাফিক পুলিশের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এখানে অটোমেটেড সিগনাল লাইটগুলোর ব্যবহার একবারেই বন্ধ। কিন্তু তারপরও প্রতিবছর এই সকল লাইট বসানোর নামে হাজার হাজার টাকার প্রকল্প গ্রহণ করে এই সকল নামী-দামী সিগনাল লাইট এবং নিয়ন সাইন ক্রয় করে ঢাকার ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ। কিছুদিন এই লাইটগুলোর আলো ঢাকা শহরের শোভাবর্ধন ছাড়া যানজট নিরসনে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে কি-না, তার জবাব ট্রাফিক বিভাগই ভাল দিতে পারবে।

 

সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক হলো, ট্রাফিক বিভাগের জনবল সবাই মানুষ কিন্তু তারা যেন কাজ করছে রোবটিক ট্রাফিক সিস্টেমের মতো। ট্রাফিক বিভাগের প্রত্যেক সার্জেন্ট পদবী থেকে সবাই আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার যন্ত্রে সুসজ্জিত। তাদের হাতে ওযারলেস সেট মোবাইল ফোন সব কিছু আছে। কিন্তু কোনো রাস্তায় সাময়িক কোনো অসুবিধার সৃষ্টি হলে তারা এই রাস্তার সামনে পিছনের দায়িত্বরত তার সহকর্মীর সাথে যোগাযোগ করে দ্রুত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তারা স্বাভাবিক পক্রিয়ায় প্রতিটি সিগনাল ম্যানেজ করে। তাদের এই রোবটিক ব্যবস্থাপনার ফলে পুরো শহর জুড়ে তৈরি হয় অচলাবস্থার। একই স্থানে একটি গাড়ি দুই ঘণ্টা বসে থাকার রেকর্ড বাংলাদেশের এই ঢাকা শহরেই সম্ভব। এজন্য সেখানে দায়িত্বরত ট্রাফিকদের কোনো জবাবদিহিতা আছে কিনা ভুক্তভোগী শহরবাসীর জানা নেই।

 

আজকাল কেনো সমস্যার সমাধানই যেন প্রধানমন্ত্রীর কান পর্যন্ত না পৌঁছালে ঐ সমস্যার সমাধান হয় না। শাহবাগ মোড়, মৎস্য ভবন সিগন্যাল, শেরাটন সিগন্যাল, বাংলা মোটর ও কারওয়ান বাজার সিগনালে আজকাল মানুষের ভোগান্তি কি পরিমাণ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে তা যদি সিসিটিভির ফুটেজ প্রধানমন্ত্রীকে দেখানো যেত, তাহলে হয়তো নগরবাসী অতি দ্রুত এই সমস্যা থেকে কিছুটা পরিত্রাণ পেত। এই খামখেয়ালীপনা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা আদৌ প্রযোজন আছে কি-না, ভেবে দেখতে হবে। খামখেয়ালীপনা বলার যথেষ্ট যৌক্তিকতা আছে। মৎস্য ভবন সিগন্যাল থেকে কারওয়ান বাজার সিগনাল পর্যন্ত এক কিলোমিটারের মতো রাস্তা পাড়ি দিতে আজকাল দুই ঘণ্টার চেয়েও বেশি সময়ের প্রযোজন হচ্ছে। ট্রাফিক সিস্টেমের এহেন কার্যক্রম নিয়ে সাধারণ জনগণের মনেও এখন সন্দেহ তৈরি হচ্ছে।

 

তাছাড়া তাদের গাড়ি থামিয়ে টাকা আদায়ের ব্যাপারগুলো এখন যেন অতি সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এখন মৎস্য ভবন থেকে কাওরান বাজার পর্যন্ত উভয় পাশের রাস্তা রাত অবধি পর্যন্ত যানজটে অকেজো হয়ে থাকে। যানজট নিরসনে অতি দ্রুত একটি সহনীয় এবং বহনীয় ভবিষ্যৎ চিন্তা করা জরুরি। সেই সাথে এই জবাবদিহিহীন ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে জবাবদিহির আওতায় আনা জরুরি।

 

লেখক : চিকিৎসক ও কলামিস্ট
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়