শিরোনাম
◈ এলডিসি উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পাওয়ার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত ◈ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ মুক্ত করার বিষয়ে  সরকার অনেক দূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ এসএসসি পরীক্ষায় আমূল পরিবর্তন, বদলে যেতে পারে পরীক্ষার নামও ◈ পঞ্চম দিনের মতো কর্মবিরতিতে ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ◈ অর্থাভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচনে লড়বেন না ভারতের অর্থমন্ত্রী ◈ কখন কাকে ধরে নিয়ে যায় কোনো নিশ্চয়তা নেই: ফখরুল ◈ জনপ্রিয়তায় ট্রাম্পের কাছাকাছি বাইডেন ◈ আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ৮ মে

প্রকাশিত : ১৯ নভেম্বর, ২০১৭, ১০:৫৩ দুপুর
আপডেট : ১৯ নভেম্বর, ২০১৭, ১০:৫৩ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সরকারি জায়গা দখল করে শ্রমিক লীগের অফিস

ডেস্ক রিপোর্ট : ‘আমাদের ভবন দরকার, আমরা করেছি। ইজারা আমরাই পাব।’এমন অবস্থান থেকে বরিশাল মহানগর শ্রমিক লীগ গণপূর্ত বিভাগের জমি দখল করে দাপ্তরিক পাকা ভবন নির্মাণ করেছে। শুধু তা-ই নয়, এ কার্যালয়ে যাতায়াত সহজ করতে ফোর লেন সড়কের মাঝখানে খুঁটি গেড়ে দিয়েছে। ফলে যান চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। নির্মাণে বাধা আসার পর মহানগর শ্রমিক লীগ গণপূর্ত বরাবর একটি আবেদন করে বলে, সংগঠনের অফিসের জন্য জায়গাটি তাদের লাগবে। গণপূর্ত আবদার নাকচ করে দেওয়ার পরও শ্রমিক লীগ দখল অভিযান বন্ধ করেনি।

বরিশাল সিটি করপোরেশন ও সড়ক বিভাগ যৌথভাবে ফোর লেন সড়কটি তৈরি করে উন্মুক্ত করে দিলে নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু হয়ে কাশিপুর বাজার পর্যন্ত চলাচলে বাড়তি স্বস্তি আসে। সড়ক ও জনপথের (সওজ) সড়কটি বাসস্ট্যান্ডের যে অংশ থেকে শুরু হয়েছে সেটি আটকে দেয় মহানগর শ্রমিক লীগ। নথুল্লাবাদ বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পাশে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে।

বরিশাল মহানগর শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. আফতাব হোসেন বলেছেন, ‘গণপূর্তের ওই জমিতে আমরা আমাদের সংগঠনের কার্যালয় করার জন্য ইজারা নিতে সম্প্রতি নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর লিখিত আবেদন করেছিলাম।

এর পরপরই আমরা আমাদের সংগঠনের কার্যালয় নির্মাণ করেছি। তবে এখনো অনুমতি পাওয়া যায়নি। ’ অনুমতি লাভের আগেই পাকা স্থাপনা নির্মাণের যুক্তি কী—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের ভবন দরকার, আমরা করেছি। এটা বেআইনি নয়। কারণ সময়মতো ওই জমির ইজারা আমরাই পাব। ’ তিনি আরো বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই মহানগর শ্রমিক লীগের কার্যালয় করার জন্য গণপূর্তের ওই জমিটি আমরা নির্ধারণ করেছিলাম। তবে অভ্যন্তরীণ কিছু জটিলতার কারণে তা আর হয়নি। ’

বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রিপন কুমার বলেন, ‘মহানগর শ্রমিক লীগের কার্যালয় করার জন্য আমাদের নথুল্লাবাদের জমি ইজারা পেতে একটি আবেদন করা হয়েছিল। আমরা আবেদনটি নাকচ করে দিয়েছি। ওই জমিতে কোনো স্থাপনা না করতে নির্দেশ দিয়ে আমরা বলি, ইজারা দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই, তা মন্ত্রণালয় দিতে পারে। আমাদের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তারা ভবন নির্মাণ করছে। আমরা বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছি। এখন নির্দেশনা পাওয়ার পরপরই আইনগত ব্যবস্থা নেব। ’ এক প্রশ্নের জবাবে রিপন কুমার রায় বলেন, ‘আমরা একজন উসহকারী প্রকৌশলী পাঠিয়েছিলাম। তিনি গিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে বলেছিলেন। শ্রমিক লীগের লোকজন তাঁর কথা শোনেনি। ’

সওজের স্থানে প্রতিবন্ধকতা তৈরির ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি সম্প্রতি শুনেছি। নথুল্লাবাদ এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আমরা চলতি সপ্তাহেই মাঠে নামব। তখন আমরা ওই ভবনের চারপাশে যে বাউন্ডারি দেওয়া হয়েছে, তা ভেঙে দেব। ’ আপনারা কাউকে পাঠিয়েছিলেন কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা তো অভিযান চালাবই। সে প্রস্তুতি রয়েছে। ’

বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পূর্ব পাশে তাদের প্রায় এক একর জমি রয়েছে। ওই জমির বেশির ভাগ অংশ দখল করে স্থানীয় শ্রমিক নেতারা স্টল নির্মাণ করেন। যতবার তা ভাঙা হয়েছে ততবারই ফের দখলে নিয়ে অস্থায়ী ঘর তৈরি করে দখল করা হয়েছে। এবার বরিশাল মহানগর শ্রমিক লীগের কার্যালয় নির্মাণের নাম করে বেশ কিছু জমি দখলে নেন এবং একপর্যায়ে পাকা ঘর নির্মাণ শুরু করেন। বাধা দেওয়ার পরই তাঁরা শ্রমিক লীগের পক্ষ থেকে একটি আবেদন করেন। এতে বলা হয়, তাঁরা যে প্রায় ৫ শতক জমি দখলে নিয়েছেন, যেন তা তাঁদের নামে লিজ দেওয়া হয়। ওই আবেদন নাকচ করে দিয়ে তাঁদের কাজ বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয় গণপূর্ত বিভাগ থেকে। এর পরও জোরপূর্বক জমি দখলে নিয়ে মহানগর শ্রমিক লীগের স্থায়ী কার্যালয় নির্মাণ অব্যাহত থাকে।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘সড়কের মধ্যে বা সড়কের পাশে কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি অবৈধভাবে কোনো স্থাপনা তৈরি করতে পারে না। আমরা নথুল্লাবাদ এলাকার সড়কের সঙ্গের অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করব। সড়ক বিভাগের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে। গণপূর্ত বিভাগের সঙ্গে শ্রমিক লীগের ওই কার্যালয়টির বিষয়ে কথা বলব। তারা সহযোগিতা করলে আমরা উচ্ছেদের ব্যবস্থা করব। কারণ নগরীর সৌন্দর্য বিনষ্ট হয় এমন কোনো স্থাপনা থাকবে না। ’

তথ্যসূত্র : কালের কণ্ঠ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়