হ্যাপী আক্তার: বাংলাদেশের যেসব নারী শ্রমিকরা মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে কাজ করতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হন এবং নানা কারণে যারা দেশে ফিরে আসতে পারেন না তাদের দুর্ভোগের কথা শুনতে আজ (শনিবার/১৮ অক্টোবর) ঢাকায় গণশুনানির আয়োজন করেছে ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং বাংলাদেশ (ওবিআর)। গণশুনানিতে কয়েকজন সাবেক বিচারক ও মানবাধিকার কর্মী উপস্থিত থাকবেন। সূত্র- বিবিসি বাংলা
নারী শ্রমিকদের নির্যাতন বিষয়ে মানবাধিকার কর্মী খুশি কবীর বলেন, বিদেশী মুদ্রা আয়ের দিক থেকে নারী শ্রমিকদের বিশেষভাবে বিবেচনা করা হলেও বিদেশে গিয়ে তাদের শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। তাদের কাজের ক্ষেত্রে সময় নির্ধারণ থাকে না। আবার তাদের পারিশ্রমিক হিসেবে যে বেতন দেওয়ার কথা তাও তারা পায় না। পাশাপাশি তাদের যৌন নিপীড়নের শিকার হতে হয়। এমনকি নারী শ্রমিকদের অন্যকোথাও বিক্রি করে দেয়ার ঘটনাও দেখা গেছে।
যেসব নারী শ্রমিকরা বিদেশে আছে, ফিরতে পারছেন না- তাদের কীভাবে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব তা জানতে চাইলে খুশি কবীর বলেন, বাংলাদেশ থেকে যারা কাজের উদ্দেশে বিদেশে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে সব শ্রমিকের অবস্থা একরকম না। বিদেশে কয়েশ নারী শ্রমিক আটকে আছেন যারা বাংলাদেশে ফিরে আসতে পারছেন না। তার কারণ হিসেবে খুশি বলেন, তাদের হয়তো অনেকের আকামা নেই, কাগজপত্র বা পাসপোর্ট আটকে রাখা হয়েছে। আবার অনেকের দেশে ফেরার মতো টাকাও নেই।
নারী শ্রমিকদের বিদেশে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে, এ ব্যাপারে সরকারি বা কূটনৈতিক উদ্যোগ খু্ব কম বলে মনে করেন খুশি কবীর। তিনি বলেন, একটি পত্রিকার খবরে দেখেছিলাম- লেবানন থেকে একজন নারী শ্রমিক দেশে ফিরে আসতে চেয়েছিলো। কিন্তু অসুস্থতার কারণে তার নিজের জমানো টাকা খরচ হয়ে যায়।পরে সে যতবার এম্বাসিতে যায় সেখানে তার জন্য কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। পরে অন্য শ্রমিকদের সহযোগিতায় টাকা সংগ্রহ করে দেশে ফেরার ব্যবস্থা করা হলেও ততক্ষণে সে নারী শ্রমিক মারা যায়। তার দেশে ফেরা হয় না।
খুশি আরো বলেন, প্রত্যেক এম্বাসিতে যে সকল জায়গায় আমাদের নারী শ্রমিকদের পাঠানো হচ্ছে তাদের দেখাশোনার জন্য সেখানে একজন শ্রমিক কাউন্সিলর আছে। অথচ সে কাউন্সিলর শ্রমিকদরে গেটের ভেতরেও ঢুকতে দেয় না। এমনকি শ্রমিকদের সমস্যার সমাধান করা তো দূরের কথা তাদরে মানুষ হিসেবেও গণ্য করেন না।
আজকের গণশুনানিতে বিদেশে নারী শ্রমিকদের ওপরে যে নির্যাতন হয় তা কীভাবে রোধ করা সম্ভব এবং এ বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে, এ বিষয়ে সরকারে পদক্ষেপ কী হতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা হবে বলেও জানান খুশি কবীর।
আপনার মতামত লিখুন :