হুমায়ুন আইয়ুব : তাবলীগ জামায়াত নিয়ে ৫ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের আলেম উলামা ও তাবলীগ জামায়াতের মজলিসে শুরা।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় রাজধানীর জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ি মাদরাসায় তাবলীগ জামাতের মারকাজ কাকরাইলের শুরার ১০ সদস্য এবং আলেমদের ৫ জন প্রতিনিধি এ সিদ্ধান্ত নেন।
বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনা-পর্যালোচনার পর তাবলীগের চলমান সংকট নিরসনে উপস্থিত সকলের সম্মতিক্রমে ৬টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে উপনীত হন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, কওমি মাদরাসা সমূহের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রকারী সংস্থা আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের কো-চেয়ারম্যান আল্লামা আশরাফ আলী, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানিয়া, যাত্রাবাড়ির মুহতামিম, গুলশান সেন্ট্রাল (আজাদ) মসজিদের খতিব, আল্লামা মাহমূদুল হাসান, কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, আল্লামা আব্দুল কুদ্দুছ, শোলাকিয়া ঈদগাহের খতিব, আল্লামা ফরীদ উদ্দিন মাসউদের প্রতিনিধি মুফতি মুহাম্মদ আলী, মারকাজুদ দাওয়াহ বাংলাদেশের আমিনুত তালীম, মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক এবং তাবলীগ জামাতের মারকাজ কাকরাইলের শুরার ১০জন সদস্য। তারা হলেন, মাওলানা জুবায়ের আহমদ, মাওলানা রবিউল হক, মাওলানা মোহাম্মদ হোছাইন, মাওলানা ফারুক, ভাই ওয়াসিফুল ইসলাম, খান শাহাবউদ্দীন নাসিম, মাওলানা ওমর ফারুক, মাওলানা মোশাররফ হোসেন, মুহাম্মাদ ইউনুছ শিকদার, শেখ নূর মুহাম্মদ।
উল্লেখ্য, গত ২৯ নভেম্বর বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধানমন্ডির বাসায় অনুষ্ঠিত সিদ্ধান্তক্রমে আজকের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকের পাঁচ সিদ্ধান্ত হলো, এক. রাজধানী কাকরাইল মারকাজের সকল বিষয়ে যথারীতি আগের মতোই শুরার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
দুই. দৈনন্দিন সাধারণ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়ে আগের মতোই মুকিমরাও (কাকরাইলে স্থায়ীভাবে অবস্থানরত) শুরার বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারবেন।
তিন. বিশেষ তিনটি বিষয়ে :
(ক) কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে পরামর্শ
(খ) অর্থনৈতিক বিষয়ক পরামর্শ
(গ) সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ ও আলোচনা সংক্রান্ত পরামর্শ অথবা এ ধরনের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল সাময়িক বিষয়ে পরামর্শের সময় শুরার সদস্যগণ ব্যতীত মুকিম বা অন্য কেউ উপস্থিত থাকতে পারবেন না।
চার. আজকের এই সভায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এই যে, কাকরাইলে আহলে শুরা এই বিষয়ে সর্বাত্মকভাবে একমত হয়েছেন যে, তারা নিচে উল্লেখিত ৫জন আলেমকে নিজেদের পৃষ্ঠপোষক ও উপদেষ্টা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। যখনই প্রয়োজন অনুভ‚ত হবে অথবা উলামায়ে কেরাম প্রয়োজন মনে করবেন, তখন জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ এই উলামা কমিটির সামনে পেশ করবেন এবং তাদের ফয়সালাও মেনে নিবেন। এই ৫জন আলেম হলেন, কওমি মাদরাসা সমূহের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রকারী সংস্থা আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের কো-চেয়ারম্যান আল্লামা আশরাফ আলী, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানিয়া, যাত্রাবাড়ির মুহতামিম, গুলশান সেন্ট্রাল (আজাদ) মসজিদের খতিব, আল্লামা মাহমূদুল হাসান, কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, আল্লামা আব্দুল কুদ্দুছ, শোলাকিয়া ঈদগাহের খতিব, আল্লামা ফরীদ উদ্দিন মাসউদ, মারকাজুদ দাওয়াহ বাংলাদেশের আমীনুত তালীম, মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক।
পাঁচ. আলহামদুলিল্লাহ, হযরত উলামায়ে কেরাম ও আহলে শুরার মধ্যে আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্ক যথারীতি কায়েম থাকবে। আসা-যাওয়া থাকবে। মহব্বত ও সৌহার্দ্য বজায় এবং মতবিনিময়ের ধারা অব্যহত থাকবে।
উলামায়ে কেরামের এই উদ্যোগ গ্রহণের কারণে কাকরাইল মারকাজের আহলে শুরা খুশি প্রকাশ করেন। তারা আলেমদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও মোবারকবাদ জ্ঞাপন করেন। একই সঙ্গে উপস্থিত সকল উলামায়ে কেরামও কাকরাইলের সম্মানিত মুরুব্বিদের প্রতি আস্থা এবং কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন। বৈঠক শেষে উপস্থিত উলামায়ে কেরাম, সংবাদকর্মী ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনি এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থার ব্যক্তিদের কাছে সিদ্ধান্তসমূহ পাঠ করে শুনিয়েছেন আল্লামা মাহমূদুল হাসান।
আপনার মতামত লিখুন :