জুয়াইরিয়া ফৌজিয়া : একদিকে দেশে প্রবৃদ্ধি বাড়ছে অন্যদিকে ক্রমেই বেড়ে চলেছে ধনী-গরিবের বৈষম্য। শ্রমনির্ভর প্রবৃদ্ধি না হওয়ায় এমন বৈষম্য বেড়ে চলছে বলে মনে করছেন, অর্থনীতিবিদ ড. জায়েদ বখত। অন্যদিকে ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদের আশঙ্কা, ধনী-গরিবের বৈষম্য এইভাবে বাড়তে থাকলে সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। সূত্র- এনটিভি
পরিসংখ্যান ব্যুরোর একটি জরিপে দেখা যায়, দেশে ৬ বছর আগে ১০ শতাংশ গরিব মানুষ আয় করতেন মোট আয়ের ২ শতাংশ। আর বর্তমানে সেই ১০ শতাংশ গরিব মানুষ আয় করছে মোট আয়ের ১.০১ শতাংশ। অর্থাৎ গরীবের আয় কমেছে। অন্যদিকে ৬ বছর আগে ১০ শতাংশ ধনী মানুষ আয় করতেন মোট আয়ের ৩৫.৮৪ শতাংশ। আর বর্তমানে সেই ১০ শতাংশ ধনী মানুষ আয় করছেন মোট আয়ের ৩৮.১৬ শতাংশ।পাশাপাশি ৬ বছর আগে দেশে ৫ শতাংশ মানুষের হাতে সম্পদ ছিল ২৫ শতাংশ। আর বর্তমানে সেই ৫ শতাংশ মানুষের হাতে সম্পদ আছে ২৮ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, যারা আসলেই ধনীশ্রেণি তারা বৈধভাবে হোক আর অবৈধভাবে হোক জরিপে পুরাটা কেন এর ৬০ শতাংশও ধরা পরে না। আর এই জরিপগুলোতেই বৈষম্য ক্রমাগত বাড়ছে আর কতটুকু বাড়ছে সেটাও বলা যাচ্ছে না। কিন্তু অনুমান করা যাচ্ছে দ্রুতগতিতে বৈষম্য বাড়ছে।
এই বিষয়ে অর্থনীতিবিদ জায়েদ বখত বলেন, অর্থনীতি যখন দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন করে তখন আয় বৈষম্য বাড়ার একটা প্রবণতা থাকে। কারণ দ্রুত প্রবৃদ্ধির কারণে যে ফেক্টরগুলো কাজ করে যেমন: শিল্পায়ন। সেগুলো তুলনামূলভাবে কম শ্রমনির্ভর হয় এবং এটার আয় থেকে পুঁজিপতিরা যতটা লাভবান হয় শ্রমিক শ্রেণিরা ততটা লাভবান হয় না।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বিচ্ছন্ন কিছু কর্মসূচির মাধ্যমে ধনী-গরীবের বৈষম্য কমানো যাবে না বরং এ ব্যাপারে প্রয়োজন সামগ্রিকভাবে নীতির পরিবর্তন। ধনী-গরিবের বৈষম্য বাড়িয়ে উন্নয়ন যতই হক তাতে সাধারণ মানুষের প্রকৃত কল্যান হয় না।
বৈষম্যের শিকার হতে হতে এক সময় বাঙালি জাতি ঘুরে দাড়িয়ে ছিল এবং মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করেছিল। কিন্তু সেই স্বাধীন দেশে এতো বছর পরে এসেও যদি ধনী-গরিবের বৈষম্য বাড়তেই থাকে তাহলে সেটা কি মেনে নেওয়া যায়। তাই এখনই বিষয়ের নীতি নির্ধারকদের দ্রুত কোনো ব্যবস্থা নিতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :