অধ্যাপিকা অপু উকিল : প্রধান বিচারপতি অবসরে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ভীষণভাবে হতাশ হয়েছেন। রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ দেউলিয়া হয়ে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তিনি দেশদ্রোহী, দেশ ধ্বংসাতœক, চক্রান্তমূলক এবং ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। লক্ষ্য করলে দেখা যায়, বেগম জিয়ার পুরনো স্বভাব অনুযায়ী তার বক্তব্যের পুরোটা জুড়ে উগ্রতা ছিল।
বেগম খালেদা জিয়া প্রধান বিচারপতিকে দিয়ে চিফ জুডিশিয়াল কু করার চক্রান্ত করেছিলেন। তিনি জুডিশিয়াল চক্রান্ত করে ক্ষমতায় যাওয়ার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সে স্বপ্ন সফল হয় নি। কেন সফল হয় নি? কারণ, খালেদা জিয়া এবং এস কে সিনহার চক্রান্ত দেশের জনগণ ধরে ফেলেছে। এস কে সিনহা বেগম জিয়ার হাত থেকে ফসকে যাওয়ার কারণে হতাশ হয়ে তিনি ‘লোক পাঠিয়ে প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে’ এমন ধরনের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিচ্ছেন। কিন্তু আসল সত্য হচ্ছে- প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠায় অ্যাপিলেড ডিভিশনের পাঁচ জন বিচারপতি এস কে সিনহাকে কারণ দর্শাতে বলেন। সন্তোষজনক জবাব না পাওয়া পর্যন্ত ঐ বিচারপতিরা প্রধান বিচারপতির সঙ্গে একই বেঞ্চে বসতে অস্বীকৃতি জানায়। কিন্তু তিনি নিশ্চুপ থাকায় ওই পাঁচ জন বিচারপতি এস কে সিনহাকে প্রত্যাখ্যান করে।
পাশাপাশি সাবেক প্রধান বিচারপতি শপথ বিরোধী বক্তব্য দিয়ে বার বার সমালোচনার তুঙ্গে ছিলেন। সবশেষে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান, আইন সভা ইত্যাদি স্পর্শকাতর বিষয়ে বির্তকিত মন্তব্য করায় এস কে সিনহাকে নিয়ে পূণরায় গোটা দেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ঠিক সেই সময়ে সদ্য অবসরে যাওয়া প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নিজের ভুল বুঝতে পেরে তিনি নিজেই সতর্ক হয়েছেন। যে কারণে তিনি বিদেশে চিকিৎসা করাতে গিয়ে সেখান থেকেই পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। কারণ, তিনি জানেন, তার নামে দূর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয়ে কারণ দর্শাতে তিনি ব্যর্থ হবেন। প্রধান বিচারপতি ছিলেন বেগম জিয়ার থলের বিড়াল। সেই বিড়াল বেরিয়ে আসায় খালেদা জিয়া এবং এস কে সিনহার মুখোশ উন্মোচন হয়ে গেছে। যে কারণে খালেদা জিয়া প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ মেনে নিতে পারছেন না। তিনি আরও একটি অসংলগ্ন কথা বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমা করে দিতে চান। তিনি কি ক্ষমা করবেন? খালেদা জিয়া বারবার শেখ হাসিনাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছেন কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিহিংসা পরায়ণ না হয়ে খালেদা জিয়াকে ক্ষমা করে দিয়েছেন এবং এখনো করছেন।
বেগম জিয়া আন্দোলনের নামে পেট্রোল বোমা মেরে নিরীহ জনগণকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছেন, জাতীয় সম্পদ ধ্বংস করেছেন, সেজন্য প্রথমেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে বেগম জিয়ার দেশের সকল জনগণের কাছে আগে ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তিনি তা করেননি। জনগণ যদি উনাকে ক্ষমা করে তাহলেই বেগম খালেদা জিয়া আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাহস করে ভোটে আসতে পারেন।
পরিচিতি : সাধারণ সম্পাদক, যুব মহিলা লীগ ও সাবেক সংসদ সদস্য
মতামত গ্রহণ : লিয়ন মীর
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
আপনার মতামত লিখুন :