ডেস্ক রিপোর্ট :একটি রাষ্ট্রের নাগরিকের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদ নেই। তাই নাগরিকরা সচেতন, সংগঠিত ও সোচ্চার হলে দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাব অডিটরিয়ামে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। সংগঠনটির ঢাকা জেলা ও মহানগর কেন্দ্রীয় কমিটি এ সভা আয়োজন করে। সভায় প্রধান আলোচক সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সুজন সচেতন নাগরিকদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা একটি নাগরিক সংগঠন। দেশের গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নাগরিক সংগঠনটি জন্মলগ্ন থেকেই বিভিন্নমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এছাড়া, ২০০২ সালে সুজনের প্রতিষ্ঠাকালীন নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে পরিচ্ছন্ন রাখা, নির্বাচনী আচরণবিধিতে পরিবর্তন আনা, সংস্কার প্রস্তাব উত্থাপন, ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন, তথ্য অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নির্বাচন কমিশনের জন্য সচিবালয় প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি ক্ষেত্রে সুজন-এর বিভিন্ন অর্জন তুলে ধরেন সুজন সম্পাদক।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশনকে কেবল নির্বাচন অনুষ্ঠিত করলে হবে না। বরং দেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন উপহার দিতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারের সহায়তা ছাড়া সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন বদিউল আলম মজুমদার। সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনে থাকাবস্থায় নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য সুজন বেশকিছু সংস্কার প্রস্তাব উত্থাপন করে। এর বেশিরভাগ প্রস্তাবই কমিশন গ্রহণ করেছিল। নির্বাচনে প্রার্থী প্রদত্ত হলফনামার বিধানটি আইনে পরিণত করার ক্ষেত্রে সুজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এছাড়াও ভবিষ্যতে নির্বাচনে ‘না ভোটের’ বিধানটি ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সুজন আইনি লড়াই পরিচালনা করতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সুজনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। এ নিয়েও কাজ করা দরকার। নির্বাচনের মানে বর্তমানে অবনতি ঘটেছে। হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা হয় না। শুধু ভালো সংবিধান আর আইন থাকলেই হয় না, নাগরিকরা সোচ্চার হলেই দেশে সুশাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালিকুজ্জামান বলেন, আজকে জনগণকে ক্ষমতাহীন করে ফেলা হচ্ছে। টপ-ডাউন অ্যাপ্রোচে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, যা কারো কাম্য হতে পারে না। রাজনীতি আজ দুর্বৃত্তদের হাতে চলে গেছে। তাই সত্যিকারের রাজনীতি চাই, পরিশুদ্ধ রাজনীতি চাই। সুজন সহ-সভাপতি বিচারপতি কাজী এবাদুল হক বলেন, সুজন-এর প্রতিষ্ঠা হয়েছিল দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। তবে সুজন-এর বেশিরভাগ কাজ পরিচালিত হয় নির্বাচনকেন্দ্রিক।
তাই দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে সুজনকে আরো কাজ করতে হবে। আলোচনা সভায় উপস্থিতদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন ড. হামিদা হোসেন, প্রকৌশলী মুসবাহ আলীম, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সহ-সভাপতি রেখা চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এসএম আকরাম, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি এবং এম এন ইসলাম চৌধুরী তপন প্রমুখ। আলোচনা সভা শুরুর আগে সকাল ৯টায় রংপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার প্রতিবাদে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। মানবজমিন
আপনার মতামত লিখুন :