শিরোনাম
◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ১৩ নভেম্বর, ২০১৭, ০৬:১১ সকাল
আপডেট : ১৩ নভেম্বর, ২০১৭, ০৬:১১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গণপরিবহন সংকটে সীমাহীন দুর্ভোগ

ডেস্ক রিপোর্ট : গণপরিবহন সংকটে গতকাল দিনভর চরম ভোগান্তিতে ছিলেন সাধারণ মানুষ। বিএনপির সমাবেশ ঘিরে রাজধানীর অভ্যন্তরীণ রুট এবং আশপাশের জেলা থেকে ঢাকায় আসা গণপরিবহন কম চলায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়। যানবাহন না পেয়ে দিনভর সাধারণ মানুষকে নানা বিকল্প যান ব্যবহার করতে দেখা যায়। অনেকে হেঁটে কর্মস্থলে যাওয়া আসা করেছেন। সমাবেশের কারণে কোনো কোনো সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি আর রিকশায় যানজট তৈরি হতে দেখা যায়। এদিকে পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে ঢাকামুখী যানবাহন প্রবেশে বাধা দেয়ায় অনেক মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
জরুরি প্রয়োজনে অনেকে বিকল্প ব্যবস্থায় ঢাকায় আসেন। এদিকে সকাল থেকে যেসব গণ পরিবহন চলেছে তাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তল্লাশি করতেও দেখা যায়। রাজধানীর বাইরে থেকে আসা দূরপাল্লার বাসের যাত্রীদের অনেককে ঢাকার প্রবেশমুখেই নামিয়ে দেয়া হয়েছে। বিএনপির সমাবেশে যোগ দিতে এসে গাড়ি না পেয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হেঁটেছেন দলটির নেতাকর্মী-সমর্থকরা। গতকালের পরিবহন সংকটের মূলে বিএনপির সমাবেশ উল্লেখ করে অনেকেই সরকারকে দায়ী করেছে। সরকার পক্ষের অঘোষিত হরতাল হিসেবে আখ্যায়িত করে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। অনেকে ক্ষোভ ঝেড়েছেন ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে। অন্যদিকে গণ পরিবহন বন্ধ থাকায় ইচ্ছামতো ভাড়া হাঁকিয়েছে সিএনজি অটোরিকশা ও রিকশার চালকরা।
বিএনপির সমাবেশের জন্য পুরান ঢাকায় ছিল গণ পরিবহনের চরম সংকট। যেখানে অন্যান্য দিনে যানবাহনের জন্য পা ফেলা যায় না- সেখানে গতকাল সদরঘাট ছিল একেবারেই যানবাহন মুক্ত। সকালে সীমিত সংখ্যক হলার ও টেম্পু চললেও দুপুরে তাও ছিল না। ফলে পুরান ঢাকার অফিসগামী ও আদালতে আসা লোকজনকে পড়তে হয়েছে নানা বিড়ম্বনায়। এমনই একজন সাভারের ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ রমজান আলী। মামলার হাজিরা দিতে সকালে আদালতে এসেছিলেন। দুপুরে বাড়ি ফিরতে সদরঘাট বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে ছিলেন দুই ঘণ্টা ধরে। কিন্তু দেখা মিলেনি সাভারগামী কোনো পরিবহনের। পরে বাধ্য হয়ে ১৫ টাকার বাস ভাড়া ২০০ টাকা দিয়ে রিকশায় ফার্মগেট যান। অপরদিকে উপায়ন্তর না পেয়ে অনেক নারী পুরুষকে গুলিস্তান, ফার্মগেট পর্যন্ত হাঁটতে হয়েছে। কথা হয় কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা মো. আলমগীর হোসেনের সঙ্গে। তিনি চাকরি করেন ফার্মগেটে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে। গাড়ি না পেয়ে পুরো রাস্তাই তাকে হাঁটতে হয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে মালামাল নিতে আসা ব্যাবসায়ীদের গাড়ির জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। সমাবেশ শেষ হওয়ার পর মিলেছে গাড়ি। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে দুপুর গড়িয়ে গেলেও বাস ছাড়েনি। ফলে যাত্রীদের জটলা বেঁধে যায় ওই এলাকায়। অনেকে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন আবার অনেকে হেঁটেই রওনা দিয়ে নিজ গন্তব্যে যান। দুপুরের পর দু’একটি গাড়ি চললেও যাত্রীদের ঠাসাঠাসিতে অনেকেই উঠতে পারেনি। বিশেষ করে অনেক নারী ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকলেও বাসে উঠতে পরেন নি। একই চিত্র ছিল গাবতলী ও মিরপুর থেকে মতিঝিলের দিকে আসা যানবাহনের ক্ষেত্রে। মিরপুর থেকে মতিঝিলমুখী অনেক বাস গতকাল চলেনি। কিছু বাস চলাচল করলেও তা ছিল যাত্রীতে ঠাসা। আবার কিছু বাস মিরপুর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত যাতায়াত করেছে। মিরপুর থেকে ১২নম্বর থেকে শেওড়া পাড়া পর্যন্ত প্রতিটি বাস স্টপেজে দিনভরই মানুষের জটলা দেখা যায়। এদিকে উত্তরা থেকে মহাখালী হয়ে চলাচল করা বাসের সংখ্যাও ছিল অনেক কম। এ সড়ক দিয়ে আসা দূর পাল্লার বাসের যাত্রীদের অনেককে গাজীপুরে নামিয়ে দেয়া হয়। আবার যেসব বাস ঢাকায় প্রবেশ করে ওইসব বাসের যাত্রীরা টার্মিনাল থেকে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে দুর্ভোগে পড়েন।
স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জে গতকাল অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট পালিত হয়েছে। শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে সকালে কোনো বাস ঢাকায় ছেড়ে যায়নি। বাস কাউন্টারগুলোও বন্ধ রাখা হয়। এতে হাজার হাজার যাত্রী সাধারণ চরম দুর্ভোগে পড়েন। নিরুপায় হয়ে অনেকে হেঁটে গন্তব্যে রওয়ানা দেন। অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বিএনপির লোকজন বাসযোগে যাতে ঢাকার সমাবেশে যেতে না পারে সেজন্য শনিবার রাতেই নারায়ণগঞ্জের পরিবহন মালিকদের নির্দেশনা দেন। তারা যেন রোববার বাস না চালায়। তবে জেলা বাস সার্ভিস মালিক সমিতির সভাপতি ও স্থানীয় এমপি শামীম ওসমানের অনুগত মোক্তার হোসেন জানান, বিএনপির সমাবেশে অংশ নেয়া উচ্ছৃঙ্খল কর্মীরা যানবাহনে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করতে পারে-এমন আশঙ্কায় বাস সার্ভিস বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে জেলা ট্রাফিক বিভাগ, কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের কোনো কর্মকর্তাই যানবাহন চলাচলের ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি। জানতে চাইলে তারা শুধু এতটুকুই বলেন, ‘যানবাহন বন্ধ কেন সেটা বলতে পারি না, এটা তো পরিবহন মালিকদের ব্যাপার।’ অন্যদিকে বাস না পেয়ে ট্রেনে ঢাকার পথ ধরেন অনেক যাত্রী। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে ট্রেনেও শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। নির্ধারিত সময়েরও অনেক দেরিতে প্রতিটি ট্রেন ছেড়ে যায়। সব পরিবহন বন্ধ থাকায় ট্রেনে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইফতেখার আলম ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ভার্সিটিতে যাবো বলে বাসা থেকে বের হয়েছি। কিন্তু টার্মিনালে এসে দেখি সব বন্ধ। গাড়ি ছাড়বে না। এর কোনো মানে হলো? সরকার একদিকে বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে আরেকদিকে বাস বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এতে তো আমাদের সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সরজমিনে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, টার্মিনালে বন্ধন, উৎসব ও আনন্দ পরিবহনের সারি সারি বাস পার্কিং করে রাখা হয়েছে। যেন বাস ধর্মঘট। ঢাকার উদ্দেশ্যে কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। নগরীর কালীরবাজারের মোড়ে আবদুল্লাহ শাহ’র মাজার থেকে বরাবর টানবাজারে সদর মডেল থানার গেট পর্যন্ত বিভিন্ন পরিবহনের বাস রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে লাইন করে রাখা হয়েছে। কিছু গাড়ির ভেতর কয়েকজন শ্রমিককে আড্ডা দিতে দেখা যায়। তাদের কাছে, বাস বন্ধের কারণ জানতে চাইলে চুপ করে থাকেন। কেন বন্ধ, কারা বন্ধ রাখতে বলেছে, কোনো উত্তর নেই। অদৃশ্য ইশারায় নিশ্চুপ তারা। তবে কয়েকজন শ্রমিক এই প্রতিবেদককে আড়ালে নিয়ে কথা বলেন। তাদের মধ্যে শ্রমিক সবুজ, মামুন ও রশিদ জানান, ‘ভাই কিয়ের লাইগা বন্ধ তা তো হগ্গলতেই জানে। আমরাতো গাড়ি চালানোর জন্য আইছি। সকাল থেইক্কা অপেক্ষা করতাছি। মালিকরা কাউন্টার বন্ধ রাখছে। চাবি ও টিকেট বই দেয় নাই।’ তারা আক্ষেপ করে বলেন, ‘ভাই আপনেরা মাইনষের দুর্ভোগ দেহেন। আমগোডা দেহেন না। আমাগো রোজ টেয়া দেয়। একদিন গাড়ি না চললে ইনকাম বন্ধ। আমরা তো গরিব মানুষ। দিন আনি দিন খাই। আমাগো ক্ষতি আপনেরা লেহেন না।’ এদিকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুন বলেন, একদিকে আওয়ামী লীগ ৩ বছর পর সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। অন্যদিকে সকাল থেকে কৃত্রিম পরিবহন সংকট তৈরি করে সমাবেশ পণ্ড করার পাঁয়তারা করছে। আমাদের কর্মীরা বিভিন্ন স্থানে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। তবুও তারা হেঁটে ও বিভিন্ন ছোট ছোট যানবাহনে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। এসব কার্যকলাপের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন দল হীনমন্যতারই পরিচয় দিয়েছে। তবে যত বাধাই দেয়া হোক আর পরিবহন বন্ধ রাখা হোক জিয়ার সৈনিকরা ঠিকই সমাবেশে পৌঁছাবে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, পরিবহন সংকট ক্ষমতাসীনদের পরিকল্পিত কারসাজি। এ কাজের মাধ্যমে তারা তাদের দুর্বলতার প্রকাশ ঘটাচ্ছে। তবুও সব বাধা অতিক্রম করে আমরা সমাবেশ স্থলে পৌঁছাবো। বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের জবাবে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল বলেন, বিএনপি বরাবরই মিথ্যার রাজনীতি করে। এটি তাদের এক ধরনের মিথ্যা অভিযোগের রাজনীতি। বিএনপি তাদের দলীয় দুর্বলতা এড়াতে পরিবহন সংকটের অজুহাত দিচ্ছেন। পরিবহন তো নানান সময়ে নানান কারণে অকার্যকর থাকতেই পারে। তারা কি চায়, আমরা তাদের রাস্তায় নেমে পাহারা দেবো, যাতে তাদের যাতায়াতে কোনো সমস্যা না হয়!
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর থেকে জানান, বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে গাজীপুরের বিএনপির নেতাকর্মীরা ট্রেনসহ বিভিন্ন যানবাহনে ঢাকায় পৌঁছেন। অনেকেই রাতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বলে দাবি স্থানীয় বিএনপির। তবে এ সমাবেশকে সামনে রেখে শনিবার রাতে বিভিন্ন অভিযোগে বিএনপির ৩৬ নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। সমাবেশকে সামনে রেখে চলে রাজপথে পুলিশের তল্লাসী। যানবাহনের সংকটে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। গতকাল দুুপুরের পর থেকে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ঢাকাগামী গাড়ি ঘুরিয়ে দেয় পুলিশ। এতে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে গণ পরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় বলে অভিযোগ বিএনপির। সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার খ্যাত চন্দ্রায় গণ পরিবহনের স্বল্পতা। ঢাকা টাঙ্গাইল ও ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে সীমিত পরিসরে যানবাহন চলাচল করছে। অন্যান্য দিনের মতো গণ পরিবহনের বাড়তি চাপ ছিল না। এ কারণে ঢাকাগামী যাত্রীদের দুর্ভোগ রয়েছে চরমে। এদিকে গাজীপুরের ৬টি থানা এলাকা থেকে বিভিন্ন অভিযোগে ৩৬জন বিএনপির নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। টঙ্গী থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার জানান, আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে শনিবার রাতে বিএনপির যুবদল নেতা আমজাদ হোসেন ঝুনাসহ সাত নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। কালিয়াকৈর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, শনিবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মৌচাক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কামরুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক মনির সিকদারসহ ১১ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। শ্রীপুর থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহ্‌জাহান ফকির এবং গাজীপুর জেলা শ্রমিক দলের কোষাধ্যক্ষ হারিছ মাঝিসহ পাঁচ জনকে গাড়ি পোড়ানো মামলায় আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া কাপাসিয়া, কালীগঞ্জ থেকে বাকি বিএনপি নেতাকর্মীদের আটক করে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ। গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন সাংবাদিকদের জানান, গাজীপুর থেকে ঢাকার দিকে কোনো গাড়ি চলতে দেয়া হয়নি। সমাবেশে যেন যেতে না পারে সেজন্য অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের নেতাকর্মীদের আটক করে ভয়ভীতি ছড়ায়।
স্টাফ রিপোর্টার, মানিকগঞ্জ থেকে জানান, ঢাকায় বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ সীমানায় দিনভর চলছে অঘোষিত অবরোধ। সকাল থেকে পাটুরিয়া-আরিচা ও মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রীবাহী যানবাহন গণ পরিবহন কার্যত চলাচল বন্ধ ছিল। এতে বিএনপি নেতাকর্মীদের পাশাপাশি ঢাকাগামী যাত্রীরা প্রত্যেকটি বাসস্ট্যান্ডে চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন।
গতকাল সকালে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকাগামী শতশত যাত্রী অপেক্ষায় থাকে গণ পরিবহনের জন্য। দুপুর পর্যন্ত কোনো যানবাহনই মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়নি। শুধুমাত্র লোকাল বাস, পিকআপ, ট্রাক, টেম্পো ও অটোরিকশাগুলো মানিকগঞ্জ থেকে গোলাড়া ও নয়াডাঙ্গি পর্যন্ত যাত্রী আনা নেয়া করছে।
ক্ষমতাসীন দলের জেলা শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন এলাকায় জোটবদ্ধ হয়ে মহড়া দিতে দেখা গেছে। জেলা শহর থেকে কোনো গণ পরিবহনকে মানিকগঞ্জ ছাড়তে দেয়নি তারা।
পথে ঘাটে শ্রমিক সংগঠনগুলোর বাধার মুখে পড়ছে যাত্রীবাহী বাসগুলো। আগেই বাস মালিকদের রোডে তাদের যানবাহনগুলো না বের করার জন্য বলা হয়েছে বলে বাস মালিকরা জানিয়েছে। যার কারণে বাস মালিকরা তাদের পরিবহনগুলো রোডে নামায়নি।
সকাল থেকে পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাট থেকে লোকাল বাস এবং পিকআপে যাত্রী আনা নেয়া হচ্ছে সর্বোচ্চ মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত। লোকাল ও খুদে যানবাহনগুলো এই সুযোগে ভাড়া হাঁকিয়েছে তিনগুণ বেশি।
ঘিওর উপজেলার তাড়াইল গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, সকাল ৬টা থেকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে বাসের অপেক্ষায় বসে আছি। শুনেছি ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ, তাই বাস চলছে না। যাবো গাজীপুরে। কিন্তু পারলাম না। বেলা ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষায় থেকে বাড়ি ফিরতে হয়েছে।
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে নারায়গঞ্জের রূপগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের লোকজন সকাল থেকেই বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়। সড়ক বন্ধ করে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এতে করে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা ও এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের কাঞ্চন সেতু এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা ১০টার দিকে ভোলানাথপুর এলাকায় ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকর্মীরা বিএনপির নেতাকর্মী বহনকারী ৫/৬টি যানবাহনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং ভুলতা ও গোলাকান্দাইল বাসস্ট্যান্ডে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা করে। এসব পৃথক হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হন। অপরদিকে, এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে শনিবার রাত থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪ বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মানবজমিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়