শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১২ নভেম্বর, ২০১৭, ০৭:৩২ সকাল
আপডেট : ১২ নভেম্বর, ২০১৭, ০৭:৩২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ প্রমাণের যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য উপাদান আছে

প্রিন্স মাহামুদ আজিম : মিয়ানমার সরকার কর্তৃক দীর্ঘদিন ধরে চালানো গণহত্যা-ধর্ষণ-নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য উপাদান আছে বলে আদেশ দিয়েছেন ‘এসসিএলএস স্টুডেন্টস ট্রাইবুনাল’। আন্তর্জাতিক অপরাধবিষয়ক আদালতের (আইসিসি) নিয়ম মেনেই ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের মামলা ট্রাইব্যুনালে পেশ করেন।

শনিবার এই বিচারিক কার্যক্রম চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। তিন বিচারক নিয়ে গঠিত প্যানেলে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্বাধীনতা ঘোষণাপত্রের রচয়িতা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমির-উল-ইসলাম, সঙ্গে ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এস এম মাসুম বিল্লাহ ও আইন বিষয়ক অনলাইন নিউজ পোর্টাল ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডট কমের সম্পাদক অ্যাডভোকেট ড. বদরুল হাসান কচি।

আদেশে আদালত বলেন, সাক্ষ্য ও যুক্তিতে প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে, মায়ানমার ঘটনায় গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের যথেষ্ট বিশ্বাসযোগ্য উপাদান আছে। একইসঙ্গে আদালত চূড়ান্ত বিচারিক সিদ্ধান্তের জন্য এ বিষয়ে আরও পূর্ণ অধ্যয়ন, মূল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন।

মিয়ানমারে গণহত্যা বিষয়ে দেশে এটা ছিল প্রথম প্রতীকী ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালে ২৪ জন সাক্ষ্য উপস্থাপন করেন মিয়ানমারের রাখাইনে গণহত্যা বিষয়ে। এতে জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গ সংস্থার প্রতিনিধি, বিভিন্ন গণমাধ্যম তথা বিবিসি, রয়টার্স, আল জাজিরা, প্রথম আলো, ডেইলি স্টার-এর প্রতিনিধি ও ভুক্তভোগী রোহিঙ্গারা মিয়ানমার সেনাদের বর্বরোচিত নির্যাতনের চিত্র ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা এসব সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করেন। ২৪ জনের সাক্ষ্যের ওপর ভিত্তি করে বাদীপক্ষের (প্রসিকিউশন) চারজন এবং বিবাদীপক্ষের (ডিফেন্স) চারজন যুক্তিতর্কে অংশ নেন।গতকাল বেলা ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত সাক্ষ্য গ্রহণ ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পর ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম রায় ঘোষণা করেন।

এর আগে বাদীপক্ষের চারজন কৌঁসুলি ট্রাইব্যুনালে বলেন, জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গ সংস্থা এবং গণমাধ্যমের যেসব প্রতিনিধি এই ট্রাইব্যুনালে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেছেন, তাতে রাখাইনে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে বলে প্রমাণিত হয়েছে।

বাদীপক্ষের কৌঁসুলিরা বলেন, জন্মগতভাবে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক। হাজার বছরে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বসবাস। কিন্তু ১৯৮২ সালে তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইন সমর্থন করে না। এ ছাড়া সেখানে রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরোচিত গণহত্যা চালাচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। রোহিঙ্গাদের নিজ জন্মভূমিতে ফিরিয়ে নেওয়া এই সমস্যার একমাত্র সমাধান।

যুক্তিতর্কে অংশ নিয়ে বিবাদীপক্ষের কৌঁসুলিরা বলেন, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক নয়। তাদের একটি অংশ আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্য, যারা মিয়ানমারের সেনা ও পুলিশ ছাউনিতে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। তাই মিয়ানমারের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মিয়ানমার সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। রোহিঙ্গাদের কী হচ্ছে, তা মিয়ানমার সরকারের দেখার বিষয় নয়।

ট্রাইব্যুনালে রায় ঘোষণার পর গতকাল সেখানে একটি মুক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভার প্রধান আলোচক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নৃ-বিজ্ঞানী রাহমান নাসির উদ্দিন বলেন,

“রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের আদিবাসী। হাজার বছর ধরে সেখানে এই নৃগোষ্ঠীর বসবাস। অথচ মিয়ানমার সরকার এই নৃগোষ্ঠীর অস্তিত্ব অস্বীকার করছে। তারা বলছে, চট্টগ্রামের ভাষার সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ভাষার মিল রয়েছে। মিয়ানমার সরকারের এই বক্তব্য সত্য নয়। রোহিঙ্গাদের ভাষার সঙ্গে চট্টগ্রামের চেয়ে মিয়ানমারের ভাষার মিল বেশি।”

এছাড়াও রোহিঙ্গা সংকটকে প্রতিপাদ্য করে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন ব্যারিস্টার এম আমির-উল-ইসলাম, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি রতন কুমার রায়, অধ্যাপক ড. রহমান নাছির উদ্দিন, কমোডোর এস এম মনির, মোঃ আমানুল্লাহ, অ্যাড. আবু তৈয়ব কিরণ, অ্যাড. সাকলান ইমন ও আইন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মাসুমা জামান প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়