শিরোনাম
◈ বাংলাদেশের রাজনীতির অবনতি দুঃখজনক: পিটার হাস ◈ সয়াবিন তেলের দাম লিটারে বাড়লো ১০ টাকা  ◈ নির্বাচনি ইশতেহারের আলোকে প্রণীত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের আহবান শিল্পমন্ত্রীর  ◈ প্রচণ্ড গরম থেকেই ঘটতে পারে মানবদেহের নানা রকম স্বাস্থ্য ঝুঁকি ◈ অবশেষে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি  ◈ ইসরায়েল পাল্টা হামলা করলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে জবাব দেবে ইরান: উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ মিয়ানমারের আরও ১৫ সেনা সদস্য বিজিবির আশ্রয়ে ◈ সয়াবিনের দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত বিএনপির ◈ কেউ যেন নিরাপত্তাহীনতায় না থাকি, আইনের শাসনে জীবনযাপন করি: ড. ইউনূস

প্রকাশিত : ১২ নভেম্বর, ২০১৭, ০২:৪০ রাত
আপডেট : ১২ নভেম্বর, ২০১৭, ০২:৪০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশ আজ

আনিস রহমান: প্রায় ১৮ মাস পর ঢাকার রাজপথে সমাবেশ করছে বিএনপি। এতদিন বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আজ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করবে দলটি। এতে ব্যাপক লোকসমাগমের প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি নয়া পল্টনে সমাবেশ করে দলটি। এরপর মে মাসে শ্রমিক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন খালেদা জিয়া।এদিকে বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে রাজধানীতে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে শতাধিক পদধারী নেতাকে।

বিএনপির আজকের সমাবেশে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ব্যাপক উপস্থিতির মাধ্যমে স্মরণকালের সব থেকে বড় সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সমাবেশে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন’ সম্পর্কে ‘গুরুত্বপূর্ণ বার্তা’ দেবেন বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সমাবেশ সফল এবং ব্যাপক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে দফায় দফায় বৈঠক করেছে বিএনপি। ঢাকা এবং আশপাশের জেলা নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জসহ ঢাকা বিভাগের নেতাদের নিয়ে যৌথসভাও করে দলটি। এ ছাড়া বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতারাও যৌথসভায় অংশ নেন।
‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে ৭ নভেম্বর এ সমাবেশ করতে চেয়েছিল বিএনপি। কিন্তু ঢাকায় সিপিএ সম্মেলনের কারণ দেখিয়ে তাদের অনুমতি দেয়নি পুলিশ। এর পর ৬ নভেম্বর চিঠি দিয়ে ১২ নভেম্বর সমাবেশ করতে চাওয়ার কথা ঢাকা মহানগর পুলিশকে জানায় দলটি। গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে বিএনপিকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। অবশ্য সমাবেশের জন্য ২৩টি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার আশরাফুজ্জামান স্বাক্ষরিত ২৩ শর্তের অনুমতির চিঠি গতকাল গ্রহণ করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম।

শহীদ উদ্দিন এ্যানী আমাদের সময়কে বলেন, বৃহৎ আকারে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। আশা করি, দেশের জনগণ এ সমাবেশে ব্যাপক উপস্থিতির মাধ্যমে সরকারের ওপর তাদের অনাস্থা দেখাবে।

যে ২৩ শর্তে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিকাল ৫টার মধ্যে সমাবেশ শেষ করতে হবে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আসেÑ এমন কোনো ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য দেওয়া বা প্রচার করা যাবে না। লাঠিসোটা, ব্যানার, ফেস্টুনের আড়ালে লাঠি-রড বহন করা যাবে না। মিছিল নিয়ে সমাবেশে আসা যাবে না। উসকানিমূলক কোনো বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না। রাষ্ট্রবিরোধী, আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী বা জননিরাপত্তাবিরোধী কার্যকলাপ চালানো যাবে না। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন সংলগ্ন স্থানে অনুষ্ঠানের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। সমাবেশের নির্ধারিত সময়ের আগে উদ্যান বা তার আশপাশের রাস্তা-ফুটপাথে সমবেত হওয়া যাবে না। যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়Ñ এমন কিছু করা যাবে না। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠানস্থলের অভ্যন্তরে ও বাইরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা রাখতে হবে। অনুমোদিত স্থানের বাইরে সাউন্ড বক্স ব্যবহার করা যাবে না।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, শুধু জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনই এ গণসমাবেশের মূল লক্ষ্য নয়; সেই সঙ্গে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য চলমান যে আন্দোলন, তাকে সুসংহত করার ক্ষেত্রে, জনগণের কাছে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যে মেসেজ... বা বাণী দেবেনÑ সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে সচেতন মানুষ মনে করে। আমরা মনে করি, এ গণসমাবেশ থেকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার কাছ থেকে জাতি যা পাবে, সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ হবে।
গ্রেপ্তার তল্লাশি মামলা

সমাবেশকে সামনে রেখে নেতাকর্র্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, গ্রেপ্তার ও বাসায় বাসায় তল্লাশির অভিযোগ পাওয়া গেছে। নতুন করে মামলা হয়েছে যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদল সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা জামাল রিয়াদ, সহসাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম রাহিমী, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ভিপি হানিফ, সাবেক কমিশনার আবদুল মজিদ, রমনা থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হক মাসুম, যুবদল নেতা শাহীন, টুটুল ও কাকনসহ বেশ কিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।

গত ৪৮ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার হন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি আতিক উল্লাহ আতিক, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের খাজা, ছাত্রদলের সহসভাপতি জাকির হোসেন মিন্টু, আশরাফুর রহমান বাবু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, মোহাম্মদপুর থানা বিএনপির সহসভাপতি মো. শুক্কুর আলী (কোম্পানি), দক্ষিণখান থানা বিএনপির সহসাধারণ সম্পাদক এসএম ইমরান হোসেন, যাত্রাবাড়ী থানা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আমির হোসেন, দক্ষিণ খান থানা বিএনপি নেতা হাজী আশরাফ উদ্দিন, যাত্রাবাড়ী থানা বিএনপি নেতা আবদুল কাদের, শাহবাগ থানা বিএনপি নেতা শামসুদ্দিন ভূঁইয়া, শ্যামপুর থানা বিএনপি সহসভাপতি মাইনুল ইসলাম মুক্তার, আদাবর থানা বিএনপি নেতা লুৎফর রহমান দীপ্তি, ছাত্রদল নেতা রবিউল ইসলাম রবি, ইয়াসির আরাফাত লিয়ন, চকবাজার থানা ছাত্রদল নেতা ইমরান খান, ঢাকা কলেজ ছাত্রদল নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন, কামরুল ইসলাম, সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদল নেতা রুবেল, আল আমিন, ইব্রাহিম, ওয়ারী থানা ছাত্রদল নেতা মো. রাব্বী, মো. রাসেল, নোয়াখালী জেলা ছাত্রদল নেতা মো. আবুল হাসান, রমনা থানা শ্রমিক দল নেতা মিজানুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দল নেতা হাবিব উল্লাহ মাহবুব, নিজাম উদ্দিন এবং ক্রীড়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুনীর হোসেন, গে-ারিয়া থানা বিএনপি নেতা বাবলু, বাসেদ, পল্টন থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি নাছির, শাজাহানপুর থানা যুবদল নেতা নাছিম, মো. সেলিম, পল্টন থানা যুবদল নেতা মাসুদ হোসেন, খিলগাঁও ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা বেলায়েত হোসেন, সবুজবাগ থানা বিএনপি নেতা লিটন খান, কামরুজ্জামান উৎপল, কলাবাগান বিএনপি নেতা নিজাম, মিজু, বিমানবন্দর থানা যুবদল নেতা বেলায়েত হোসেন ভূঁইয়া, মান্ডা ইউনিয়ন যুবদল নেতা নবী হোসেন, সূত্রাপুর থানা বিএনপি নেতা কাজী সালেহ উদ্দিন, যাত্রাবাড়ী থানা যুবদল নেতা আমির হোসেন, শ্যামপুর ইউনিয়ন যুবদল নেতা রহমত উল্লাহ ও ফয়সাল, যুবদল নেতা মানিক দত্ত, মজিবুর রহমান আনুর ছোট ভাই মুনির ও যুবদল নেতা ভিপি হানিফের ছোট ভাইকে।
এ ছাড়া শুক্রবার রাতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মান্নানের ধানম-ির বাসভবন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি ইউনুস মৃধা, নবী উল্লাহ নবী, সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, সাংগঠনিক সম্পাদক তানভীর আহমেদ রবিন, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা জামাল রিয়াদ, সহসাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম রাহিমী, কদমতলী থানা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি সুমন আহমেদ, সূত্রাপুর থানা বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান আনু, নুরুল ইসলাম সেন্টু, মান্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মো. আলমাস, কদমতলী ছাত্রদল নেতা রাকিব সরদার, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ভিপি হানিফসহ অসংখ্য নেতাকর্মীর বাসায় পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম কফিল উদ্দিনকে বাসায় না পেয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়