শিরোনাম
◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

প্রকাশিত : ১২ নভেম্বর, ২০১৭, ০৯:০৫ সকাল
আপডেট : ১২ নভেম্বর, ২০১৭, ০৯:০৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাতের আঁধারে নিম্নমানের কাগজে ছাপা হচ্ছে পাঠ্যপুস্তক

ডেস্ক রিপোর্ট : নির্ধারিত সময়ে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহের লক্ষ্যে রাতদিন চলছে মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের কাজ। তার পরও নির্ধারিত সময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে কিছু বই তুলে দেওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়ে গেছে। তবে শেষ সময়ে এসে কিছু কিছু ছাপাখানা মালিক নিম্নমানের কাগজে বই ছাপছেন। তড়িঘড়ি করে বই ছাপতে গিয়ে রাতের আঁধারে তারা এ কাজ করছেন। এদিকে মান রক্ষা নাকি নির্ধারিত সময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যপুস্তক পৌঁছে দেবে, তা নিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জে পড়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এ নিয়ে লেজেগোবরে অবস্থা এনসিটিবির।এর মধ্যেই কয়েকটি বিষয়ের পাঠ্যবইয়ের কার্যাদেশ দেওয়ার প্রক্রিয়া এখনো হয়ে ওঠেনি। এসব বই জানুয়ারি মাসে সরবরাহ দেওয়া যাবে কিনা তারও নিশ্চয়তা নেই। অবশ্য এনসিটিবির কর্মকর্তারা আশাবাদী যথাসময়ে পাঠ্যপুস্তকের সরবরাহের কাজ শেষ হবে। তবে ১ জানুয়ারি পাঠ্যপুস্তক উৎসব উদ্যাপনের দিন কতটি বই পাবে শিক্ষার্থীরা, তা দেখার বিষয়। প্রতিবছর বই উদযাপনে শুভঙ্করের ফাঁকি দেয় এনসিটিবি। উৎসবের দিনে শিক্ষার্থীপ্রতি মাত্র এক-দুইটি করে বই দিয়ে প্রচার করা হয় ৩৪-৩৫ কোটি পাঠ্যপুস্তক তুলে দিয়েছে। বিভিন্ন শ্রেণির সব পাঠ্যবই পেতে শিক্ষার্থীদের মাচ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। ২০১৮ সালে তাতেও অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কিছু কর্মকর্তার কারণে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক নিম্নমানের কাগজে ছাপানোর কারণে সম্প্রতি বলাকা প্রিন্টার্সের ১১০ টন; লেটার অ্যান্ড কালারে ১৪০ টন; লেখন আট প্রেস ৫০ টন; এস আর প্রিন্টার্সে ৬০ টন; প্রিয়াংকা ৫০ টন; জুপিটার ও সীমান্ত প্রিন্টার্সের আলাদা ১০০ টন; সাগরিকা ১৯০ টন; পিএ প্রিন্টার্স ২০ টন; পেপার প্রেসেসের ৪৯০ টন কাগজ জব্দ করা হয়। এ নিয়ে তোলপাড় অবস্থা সৃষ্টি হয় এনসিটিবি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে।

প্রাথমিকের পাঠ্যপুস্তক ছাপার কার্যক্রম তদারক করার দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান কন্টিনেন্টাল বিডির এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, টেন্ডারের শর্তানুযায়ী কাগজের মান পরীক্ষা করা হয়। যদি ঘাটতি থাকে সেগুলো বাতিল করা হয়। এমনকি ছাপা হওয়া কাগজ দেখে নিম্নমানের প্রমাণিত হলে এসব কাগজে লাল কালি দিয়ে বাতিলের সিল দেওয়া হয়, যাতে ওইসব কাগজ আর পাঠ্যবইয়ে ব্যবহার না হয়। শুরু থেকেই নিম্নমানের কাগজের ব্যাপারে শক্ত অবস্থানে ছিলেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।প্রাথমিক স্তরে ছাপা হচ্ছে ১০ কোটি ৩৬ লাখ বই। এর মধ্যে ৭ কোটি ৮০ লাখ ৪০ হাজারের বেশি ছাপা সম্পন্ন হয়েছে, যা মোট বইয়ের ৭৫ শতাংশ। বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় পৌঁছানোর জন্য প্রায় ৬ কোটি ৪৮ লাখের বেশি বইয়ের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। কার্যাদেশ অনুযায়ী ৫০৮টি উপজেলার মধ্যে ৪২৫টি উপজেলার বই পৌঁছেছে।

এনসিটিবির একটি নির্ভরশীল সূত্র জানিয়েছে, মাধ্যমিক স্তরের সংশোধিত (সুখপাঠ্য) পাঠ্যবই ছাপার কাজ শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। ৬০টির অধিক প্রতিষ্ঠানকে ১০২ লটে প্রায় পৌনে ২ কোটি পাঠ্যবইয়ের কার্যাদেশ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আরও ৭-৮ দিন লাগবে এ প্রক্রিয়া শেষ হতে। তবে গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ নিয়ে ছাপানোর কাজ শুরু করেছে।একটি ছাপাখানার ব্যবস্থাপক এ বিষয়ে জানান, ছাপা সম্পন্ন, বাঁধাই এবং জেলা-উপজেলায় পৌঁছাতে কার্যাদেশ দেওয়ার পর কমপক্ষে ৫৫ দিন সময় দিতে হবে। এর পরও জরিমানা দিয়ে আরও ২৮ দিন পর্যন্ত বই ছাপাতে পারবে ছাপাখানাগুলো। এ হিসাবে এসব পাঠ্যবই ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানো অনিশ্চিত।এনসিটিবির এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, মাধ্যমিকের সুখপাঠ্য বইয়ের পা-ুলিপি তৈরিতে দেরি হওয়ায় দরপত্র আহ্বানেও বিলম্ব হয়।

গত সপ্তাহে কিছু প্রতিষ্ঠান স্বল্প পরিসরে বই ছাপার কাজ শুরু হয়েছে। এসব পাঠ্যবই ছাপার তদারকির জন্য ১৮টি মনিটরিং টিম কাজ করবে। এ ছাড়া মাধ্যমিক স্তরের অন্য পাঠ্যবই ছাপানোর অগ্রগতি খুবই সন্তোষজনক বলেও জানান এই কর্মকর্তা।একটি সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবই ছাপানোর কার্যাদেশ পাওয়া বেশ কয়েকটি ছাপাখানা রাতের আঁধারে নিম্নমানের কাগজে বই ছাপছে। পরিদর্শক টিম প্রায় ১০ থেকে ১২টি ছাপাখানা থেকে ৪০০ টনের বেশি নিম্নমানের কাগজ জব্দ করে।জানা গেছে, মান রক্ষা করবে নাকি কোনোরকম পাঠ্যপুস্তকে তৈরি করে নির্ধারিত সময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে এনসিটিবিÑ এবারের পাঠ্যপুস্তক নিয়ে এমনই লেজেগোবরে অবস্থা। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ প্যারিস থেকে দেশে ফেরার পর এ নিয়ে বসবেন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে। এ ব্যাপারে এনসিটিবির চেয়ারম্যান প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, যেসব ছাপাখানায় নিম্নমানের কাগজ চিহ্নিত করা হয়েছে, তারা অবশ্যই শাস্তির আওতায় আসবে। টেন্ডারের নিয়ম অনুযায়ী কোন অনিয়মের কী শাস্তিÑ সবই সুনির্দিষ্ট করা আছে। কেউ অনিয়ম করে ছাড় পাবে না। মানসম্মত পাঠ্যবই দেওয়ার ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। আশা করি সব পাঠ্যবই যথাসময়ে পৌঁছে যাবে। সুখপাঠ্য বই নিয়ে একটু জটিলতা ছিল, এটাও থাকবে না। সূত্র : আমাদের সময়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়