শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ১২ নভেম্বর, ২০১৭, ০৫:৫৯ সকাল
আপডেট : ১২ নভেম্বর, ২০১৭, ০৫:৫৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘টিলো এক্সপ্রেস’

তুষার আবদুল্লাহ : উৎপল কি টিলো এক্সপ্রেস খেলতে গিয়ে হারিয়ে গেলেন? লুকোতে গিয়ে আর ফিরে আসার পথ খুঁজে পাচ্ছেন না? উত্তর জানা নেই। উৎপল নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তার পরিবার ও সহকর্মীরা এই তথ্য জানতে উৎকণ্ঠা নিয়ে বসে আছেন। কিন্তু কোথাও থেকে উৎপলের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। মাঝে তার ফিরে আসা বা তাকে খুঁজে পাওয়া গুজব আকারে প্রকাশ পেয়েছিল, কিন্তু উৎপল আজও নিখোঁজ। তিনি নিজেই হারিয়ে গেলেন নাকি কেউ তাকে লুকিয়ে রেখেছে, এই তথ্যটি জানা দরকার। যদি সত্যিই কারও প্রতি অভিমান করে উৎপল লুকিয়ে থাকেন, তাহলে তাকে খুঁজে বের করতে হবে এ জন্য যে, তার পরিবার, সহকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে যে সন্দেহগুলো উঁকি দিচ্ছে, সেগুলো মিথ্যা প্রমাণের স্বার্থে।

আবার যদি ঘটনা এমন হয়ে থাকে, উৎপলকে কোনও অপরাধী চক্র তুলে নিয়ে গেছে, তাহলে তাকে খুঁজে বের করতে হবে ওই অপরাধী চক্রের হদিস পেতে। না হলে ওই চক্রটি হয়তো উৎপলেই থেমে যাবে না। অন্যরাও তাদের শিকার হতে পারেন। ফলে সমাজে বিষয় নিয়ে উদ্বেগ ভারী হচ্ছে। এই উদ্বেগের প্রশমন দরকার। কেউ প্রশ্ন করছেন উৎপল কি কোনও অপরাধ করেছিলেন? তাই তাকে কেউ আটক করেছে? এই প্রশ্নেরও সুরাহা হওয়া প্রয়োজন। যদি তিনি অপরাধ করেই থাকেন, তাহলে দিনের আলোতেই তাকে সেই অপরাধের জন্য জিজ্ঞাসার মুখোমুখি করা যেতে পারে।

কল্যাণরাষ্ট্রে তাই প্রত্যাশিত। উৎপলের পর আরও অনেকের নিখোঁজ সংবাদ শুনতে পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে শোনা যাচ্ছে, কারও হারিয়ে যাওয়ার পেছনে পারিবারিক বিরোধ থাকার আশঙ্কা আছে, কারও নিখোঁজ হওয়ার পেছনে সম্পদ নিয়ে বিরোধ থাকতে পারে, আবার কেউ নানা অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক হতে পারেন বা হারিয়ে যেতে পারেন। এই পরিস্থিতি নাগরিক জীবনকে অস্বস্তিকর করে তোলে। নাগরিক জীবন ভয়ে কুঁকড়ে ওঠে। বিঘ্নিত হয় নাগরিকদের স্বাভাবিক জীবন যাপন। পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেছেন, গুম বা নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ব্রিটিশ যুগে থেকে সব কালেই ছিল। পেনাল কোডেও এই অপরাদের বিষয়টি উল্লেখ আছে। তারা সত্তর ভাগের সুরাহা করতে পারেন। ত্রিশ ভাগ পেরে ওঠেন না। অপরাধ বা প্রক্রিয়াটি ব্রিটিশ যুগে ছিল বলে, এখন তা নির্মূল করা যাবে না, এমন নয়। প্রযুক্তির উৎকর্ষের যুগে, কল্যাণরাষ্ট্রের ইশতেহারের কালে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি করার সক্ষমতা নিশ্চয়ই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর রয়েছে।

হারিয়ে যাওয়া, নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা গুলোর কারণ নানা রঙের কুয়াশার আড়ালে থাকছে। এ নিয়ে সংশয়ের গহ্বর তৈরি হচ্ছে। এই সংশয় সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়। সুযোগসন্ধানী নানা পক্ষ এই সময়গুলোতে সক্রিয় হয়ে ওঠে, তারা সময় ও সুযোগগুলোকে নিজেদের পক্ষে ব্যবহার করে। যার দায় নিতে হয় রাষ্ট্রকে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় গণতন্ত্রের রাজনৈতিক-প্রক্রিয়া। বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোকে সরাসরি এর মাশুল গুনতে হয়। কারণ ঘটনাগুলো ঘিরে ক্ষমতায় থাকা এবং ক্ষমতার বাইরে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর দিকেই সাধারণ নাগরিকেরা অবিশ্বাসের চোখে তাকায়। নাগরিকেরা তাদের নিরাপত্তার জন্য সর্বোপরি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিও নির্ভরশীল থাকে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাসের রাজনীতি বহাল থাকলে, নাগরিকেরাও নিরাপদবোধ করে। তাদের হারিয়ে যাওয়ার ভয় থাকে না। তারা তখন জানে, টিলো এক্সপ্রেস খেলতে গিয়ে যদি কেউ যদি কোথাও হারিয়েও যায়, কল্যাণমূলক ও গণতান্ত্রিক রাজনীতি তাকে নিশ্চিতে ঘরে ফেরার পথ দেখাবে।

লেখক: বার্তা প্রধান, সময় টিভি। বাংলাট্রিবিউন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়