স্পাের্টস ডেস্ক : ফুটবল সুপার স্টাররাও কাঁদেন। যে ফুটবল তাদের দুনিয়া-সেরা বানিয়েছে, সেই ফুটবল তাদের কাঁদায়ও! ৫ বারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসিকে অঝোরে কাঁদতে দেখেছে ফুটবল দুনিয়া। একবার নয়। একাধিকবার। মেসির সেই কান্না ছিল শিরোপা জিততে না পারার হতাশা থেকে। ২০১৬ কোপা আমেরিকার শিরোপা জিততে না পারার পর কেঁদেছেন। কেঁদেছেন গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল থেকে বার্সেলোনার ছিটকে পড়ার পরও। মেসির সেই কান্নার সঙ্গে নেইমারের কান্নার কোনো যোগসূত্র নেই। তবে তিনিও কাঁদলেন। কাঁদলেন ফুটবলীয় সুত্রেই। সংবাদ সম্মেলনে ব্রাজিলিয়ান তারকা কাঁদলেন তাকে জড়িয়ে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া বিতর্ক-গুঞ্জনের হতাশা থেকে!
.
গত রাতে জাপানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল নেইমারদের ব্রাজিল। ফ্রান্সের লিলেতে ব্রাজিল ম্যাচটা জিতেছে ৩-১ গোলে। কিন্তু দলের জয়ের পরও ম্যাচ শেষেসব সতীর্থদের নিয়ে পিএসজিকে জয় এনে দিতেই অনুপ্রাণিত আমি।’
গত ৩ আগস্ট বার্সেলোনা ছেড়ে রেকর্ড ২২২ মিলিয়ন ইউরোতে পিএসজিতে পাড়ি জমিয়েছেন নেইমার। ব্রাজিল তারকা বললেন, কোচ উনাই আমরির অনুপ্রেরণাতেই পিএসজিতে এসেছেন তিনি, ‘যখন আমি আসি, তার আগেই আমরা বৈঠক করেছি। তিনি বলেছিলেন, মাঠে আমাকে সাহায্য করবেন। আমি জানি দলে আমার ভূমিকাটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এবং কোচ আমাকে যে নির্দেশ দেন, যা করতে বলেন, তার সবই আমি করি। সুতরাং এই গল্পগুলো আমাকে খুব কষ্ট দেয়।’
নেইমারের পাশে দাঁড়িয়ে ব্রাজিল কোচ বলেন, ‘যদি আপনারা অনুমতি দেন, আ
সংবাদ সম্মেলনে এসে অঝোরে কাঁদলেন ইতিহাসের সবচেয়ে দামী ফুটবলার। ব্রাজিল জাতীয় দল সূত্রে নয়, নেইমারের চোখের জল গড়িয়ে নামাল ক্লাব পিএসজিতে তাকে নিয়ে উঠা বিতর্কিত কথা বার্তা।
গত কিছুদিন ধরেই গণমাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে খবর বেরোচ্ছে, পিএসজিতে সুখে নেই নেইমার। এডিনসন কাভানি ও কোচ উনাই আমরির সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছেন। তাদের সেই দ্বন্দ্ব-তিক্ততায় পিএসজি শিবিরে নাকি দেখা দিয়েছে বিভক্তির দেয়াল। আর পিএসজির সেই অস্বস্তিরতার মূলে নেইমারই নাকি ‘প্রধান আসামি’! বিশেষ করে ফরাসি গণমাধ্যমের অভিযোগের অঙুলিটা নেইমারের দিকেই। নেইমারের উদ্ধতপূর্ণ আচরণের কারণেই নাকি পিএসজির ঘরে ‘অশান্তি’ প্রবেশ করেছে। পিএসজি থেকে নাকি তার মনটা উঠে গেছে।
গণমাধ্যমের একের পর এক নেতিবাচক খবরে হাপিয়ে উঠেছিলেন ব্রাজিল তারকা। মনের কোণে জমা হওয়া সেই ক্ষোভ, হতাশাই গলে জল হয়ে বেরোল সংবাদ সম্মেলনে। হাত দিয়ে চোখের জল মুছতে মুছতে বললেন, গণমাধ্যম অনেক রকম গল্পই তৈরি করতে পারে। কিন্তু তাকে নিয়ে যে গল্প ফরাসি গণমাধ্যম তৈরি করছে, তা সত্য নয়। কাভানি বা কোচের সঙ্গে তার কোনো দ্বন্দ্ব নেই। পিএসজিতে তিনি সুখেই আছেন!
মনের আকাশ ছেয়ে ফেলা এই হতাশা উগড়ে দিতেই হয়তো ব্রাজিল কোচ তিতের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন নেইমার। গণমাধ্যম তার কান্না জড়িত আকুতি ফরাসি গণমাধ্যম কতটা মূল্যায়ন করবে, বলবে সময়। তবে ক্ষোভ-হতাশা উগড়ে দিতে পারায় নেইমার হয়তো এখন অনেকটাই স্বস্তি পাচ্ছেন। ভেতরের সত্যটা তুলে ধরার স্বস্তি তো আছেই।
নেইমারকে স্বস্তি দিয়েছেন ব্রাজিল কোচও। সংবাদ সম্মেলনে তিতেও ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে যান নেইমারের পাশে। শিষ্যের পক্ষ নিয়ে গণমাধ্যমকে ব্রাজিল কোচ বোঝাতে চাইলেন, একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে মতবিরোধ হবেই। তার সঙ্গে সত্য-মিথ্যা মিশিয়ে কাউকে মানসিক কষ্ট দেওয়া ঠিক না।
ফরাসি গণমাধ্যমকে উদ্দেশ্য করে নেইমার বলেন, ‘তারা (গণমাধ্যম) অনেক গল্পই ফাঁদতে পারে। কিন্তু তা সত্য নয়। কোচ ও কাভানির সঙ্গে আমার কোনো সমস্যা নেই।’
পিএসজিতে সুখেই আছেন দাবি করে ২৫ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান তারকা বলেন, ‘প্যারিস দারুণ একটা শহর। এখানে আমি ভালো আছি, খুবই সুখে আছি। যারা মাঠে নেমে নিজেদের উজাড় করে দিতে প্রস্তুত, আমার সে
মি নেইমারের বিষয়ে কিছু কথা বলতে চাই। আমরা দেড় বছর ধরে এক সঙ্গে কাজ করছি। আমি এটা শুনতে শুনতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি যে, নেইমারের সঙ্গে আমার নাকি সমস্যা। হ্যাঁ, আমরা শতভাগ নিখূঁত নই। আমরাও মানুষ। আমরাও অনেক সময় ভুলভাবে প্রতিক্রিয়া জানাই। তাই বলে তা নিয়ে নানা রকম গল্প তৈরি করা ঠিক নয়।’ ব্রাজিল কোচের দাবি, যত বড় ফুটবলার, নেইমারের হৃদয়টাও ততটাই বড়।
আপনার মতামত লিখুন :