মাহফুজ উদ্দিন খান : হিন্দুদের গ্রামে হামলার ঘটনায় দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ বাদী হয়ে কোতোয়ালি ও গঙ্গাচড়া উপজেলার থানায় মামলা দু’টি দায়ের করেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন একথা জানিয়েছেন।
শুক্রবার রংপুরের সদর উপজেলার পাগলাপীর ঠাকুরবাড়ি গ্রামে আগুন দিয়ে লুটপাট হয়েছে হিন্দুদের বাড়িতে। পাগলাপীর ঠাকুরবাড়ি গ্রামটি রংপুর সদর, গঙ্গাচড়া ও তারাগঞ্জসহ ওই তিনটি উপজেলার মধ্যবর্তী জায়গায় অবস্থিত।
হামলার ঘটনা তদন্ত করতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষ। শনিবার থেকে এ কমিটি কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুজ্জামান।
তিনি বলেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু রাফা মোহাম্মদ আরিফকে প্রধান করে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রংপুর সদরের ঠাকুরবাড়ি গ্রামে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। রংপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আজ শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
প্রসঙ্গত, রংপুরের পাগলাপীর শলেয়া শাহ এলাকার খগেন চন্দ্র রায়ের ছেলে টিটুল চন্দ্র রায় (৪০) রোববার ইসলাম ধর্ম ও নবীকে নিয়ে ‘ফেসবুকে’ কটূক্তি করে প্রচার চালায়। এ নিয়ে এলাকায় মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনের মাঝে ক্ষোভ দেখা দেয়। ফেসবুকে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করার প্রতিবাদে সদর উপজেলার খলেয়া ইউনিয়নের শলেয়া শাহ বাজারে শুক্রবার দুপুরে মুসল্লিরা সমাবেশ করার পর হিন্দুপাড়ায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অর্ধশতাধিক টিয়ার শেল ও ৩০ রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে।
এ সময় পুলিশের সঙ্গে জনতার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষে ও গুলিতে দুইজন নিহত হয়েছেন। পুলিশ ও মুসল্লিদের সংঘর্ষের সময় হাবিবুর রহমান (২৬) ও সিএনজি চালক হামিদুল ইসলাম (৩০) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। সূত্র বলছে গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন ৩০ জন। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে এখনও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
আপনার মতামত লিখুন :