ডেস্ক রিপোর্ট: শনিবার ঐতিহাসিক বেতিয়ারা শহীদ দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বেতিয়ারায় বিশেষ গেরিলা বাহিনীর মো. সিরাজুম মুনীর জাহাঙ্গীর, বশিরুল ইসলাম মাস্টার, নিজাম উদ্দিন আজাদ, শহীদুল্লাহ সাউদ, আওলাদ হোসেন, দুদু মিয়া, আবদুল কাইয়ুম, আবদুল কাদের ও মোহাম্মদ শফিউল্লাহ শহীদ হন। এই বাহিনী ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে গঠিত হয়েছিল।
যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির উপদেষ্টা মনজুরুল আহসান খানসহ ৭৮জন গেরিলা সদস্য ভারতের বিভিন্ন ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। পরে তারা যুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য ভারতের বাইকোয়া বেইজ ক্যাম্প থেকে ১০নভেম্বর রাত ৮টায় চৌদ্দগ্রাম সীমান্তবর্তী ভৈরবনগর সাব-ক্যাম্পে (চৌত্তাখোলা ক্যাম্পের শাখা) পৌঁছান। ওই ক্যাম্পের মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের বিএসসি ও সামসুল আলম ১১ নভেম্বর রাতেই গেরিলা বাহিনীর ওই দলটির বাংলাদেশে প্রবেশের নকশা তৈরি করেন। সে অনুযায়ী সাব ক্যাম্পের ৩৮জন গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাকে দুই ভাগে বিভক্ত করে বেতিয়ারা চৌধুরী বাড়ির দুই পাশে অ্যামবুশ পাতা হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক শত্রুমুক্ত কিনা পরীক্ষা করার জন্য স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা আবদুল কাদের ও আবদুল মন্নানকে ওই সড়কে পঠানো হয়।
বেতিয়ারা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পাক-বাহিনীর নজরদারি ছিল বেশি। চৌদ্দগ্রামের জগন্নাথ দিঘিতে তাদের একটি শক্তিশালী ক্যাম্পও ছিল। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদেরের পর্যবেক্ষণে সড়ক পারাপার নিরাপদ নিশ্চিত ভেবে শহীদ নিজাম উদ্দিন আজাদের নেতৃত্ব ৩৮জন মুক্তিযোদ্ধার প্রথম দলটি বাক্সবন্দি ভারী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রোড অতিক্রমের জন্য এগিয়ে আসেন।
সড়কের উত্তর পার্শ্বের গাছের আড়ালে এ সময় স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পূর্ব পরিকল্পনানুযায়ী ওৎ পেতে থাকা পাক হানাদার বাহিনীর অ্যামবুশের মুখোমুখি হয়ে পড়েন তারা। পরিস্থিতি বুঝে ওঠার আগেই পাক হানাদেরদের ব্রাশ ফায়ারে ৭৮জনের মধ্যে ৯জন শহীদ হন। বাকি যোদ্ধাগণ প্রাণপনে যুদ্ধ করে সেদিন ফিরেছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :