রাশিদ রিয়াজ : ডা. ল্যারি নাসার যিনি মার্কিন নারী জিমন্যাস্ট জাতীয় দলে দশকের পর দশক ধরে চিকিৎসকের দায়িত্ব পালন করেছেন, তার বিরুদ্ধে এন্তার যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন তারই শিষ্যরা। এদের মধ্যে অন্যতম অভিযোগকারী হচ্ছেন ৬ বার অলিম্পিক পদক প্রাপ্ত জিমন্যাস্ট এ্যালি রেইসম্যান। অকপটে এ্যালি বলেছেন, ডা. ল্যারির হাতে তিনি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ল্যারি রেইসম্যান একজন ইহুদি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সর্বাধিক দক্ষ একজন জিমন্যাস্ট ফিজিশিয়ান বিশেষজ্ঞ। রোববার সিবিএস টেলিভিশনে ‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানে এক সাক্ষাতকারে ও তার নতুন বই ‘ফিয়্যাসে’ বিষয়টির অবতারণা করেছেন এ্যালি রেইসম্যান। টাইমস অব ইসরায়েল
২০১২ সালে অলিম্পিকে এ্যালি হচ্ছেন দ্বিতীয় স্বর্ণ পদক বিজয়ী জিমন্যাস্ট যিনি ডা. ল্যারির বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আনলেন। শুক্রবার টাইম ম্যাগাজিন অনলাইনে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় অলিম্পিক জিমন্যাস্ট দলের এধরনের অভিযোগ নিয়ে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। গত অক্টোবরে এ্যালির সহযোগী জিমন্যাস্ট ম্যাককায়লা মারোনি টুইটারে ডা. ল্যারির বিরুদ্ধে তাকে বছরের পর বছর ধরে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেন। মাত্র ১৩ বছরেই তার ওপর ডা. ল্যারি যৌন নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগ করেন মারোনি। ডা. ল্যারি বর্তমানে কারাগারে আছেন। মিশিগানে শিশু পর্নগ্রাফির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তার কারাদ- হয়।
এ্যালির বয়স এখন ২৩ বছর। স্পোর্টস ইলাস্ট্রেড সাময়িকী বলছে ১৫ বছর বয়সে তিনি চিকিৎসার জন্যে ডা. ল্যারির শরণাপন্ন হন। আগামী সপ্তাহে এ্যালির বায়োগ্রাফি প্রকাশে এসব বিস্তারিত অভিযোগ উঠে আসবে বলে বলা হয়েছে। ডা. ল্যারির বিরুদ্ধে নারী জিমন্যাস্টদের যৌন নির্যাতন নিয়ে শতাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় জিমন্যাস্ট দল ও মিশিগান স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যে তিনি পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন। এসব মামলায় চিকিৎসার নামে ডা. ল্যারি নারী জিমন্যাস্টদের ওপর যৌন নির্যাতন চালাতেন। ২০১৫ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় জিমন্যাস্ট দল থেকে পদত্যাগ করেন।
সাক্ষাতকারে এ্যালি রেইজম্যান বলেন, এফবিআই তদন্ত দলের সদস্যদের কাছে ২০১৬ সালে রিও ডি জেনিরিও অলিম্পিকে ল্যারির যৌন নির্যাতনের কথা জানানো হয়। মার্কিন জিমন্যাস্ট দলের নীতি অনুযায়ী ভিকটিম বা অভিভাবকের পক্ষ থেকে এধরনের নির্যাতনের বিরুদ্ধে মামলা না করা পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কথা বলা বারণ।
এ্যালি রেইসম্যান ২০১২ ও ২০১৬ সালে অলিম্পিকে স্বর্ণ পদক পাওয়ার পর মার্কিন জিমন্যাস্টিকসের জন্যে তার মেধা নিয়োজিত করেন। পরবর্তী জিমন্যাস্ট নির্বাচন ও দল গঠনেও তার ভূমিকা অপরিসীম। সিবিএস টেলিভিশনে ‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে এ্যালি বলেন, এধরনের যৌন নির্যাতনে আমি ক্ষুব্ধ ও ক্ষিপ্ত। আমি চাই এধরনের নির্যাতন যাতে আর না হয়। দলে পরিবেশের পরিবর্তন আসে। কারো ওপর যেন কখনোই এধরনের যৌন নির্যাতন আর না ঘটে।
এদিকে এক বিবৃতিতে ইউএসএ জিমন্যাস্টিকস’এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যাতে কোনো নারী জিমন্যাস্টিকস আর যৌন নির্যাতনের শিকার না হয় সেজন্যে নীতি পরিবর্তন করা হয়েছে এবং কোনো জিমন্যাস্ট এধরনের নির্যাতনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকলে সে জন্যে দুঃখ প্রকাশ করা হচ্ছে। আমরা এ্যালির সঙ্গে কাজ করতে এবং জিমন্যাস্টিকসে এ্যাথলেটদের নিরাপদ রাখতে চাই।
আপনার মতামত লিখুন :