মে. জে. আব্দুর রশীদ (অব.) : সৌদি আরব একটি স্থিতিশীল মুসলিম দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল মধ্যপ্রাচ্য এবং মুসলিম বিশ্বে। কিন্তু দেশটির বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত অস্বাভাবিক বলে মনে হচ্ছে। সৌদি আরবের এখনকার যে নীতিনির্ধারণী বিষয় রয়েছে, সেখানে বর্তমান বাদশাহ, তার পুত্র ক্রাউন প্রিন্স এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানকেই দেখছি। সৌদি আরবের নেতৃত্ব এখন নতুন ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মাঠে নেমেছেন। দেশটি তার চিরাচরিত নিয়ম থেকে অনেকটাই দূরে সরে এসেছে। সেক্ষেত্রে তাদের এই নতুন নীতির সঙ্গে সৌদি রাজ পরিবারের অনেকেই একমত নন। সহমত পোষণ না করার কারণেই বর্তমান বাদশাহ এবং ক্রাউন প্রিন্সের বিরুদ্ধে অনেকেই কথা বলছেন বা রুখে দাঁড়িয়েছেন, তার চিহ্ন অনেক আগে থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল। বর্তমান পরিস্তিতি দেখে মনে হচ্ছে, এটি তারই একটি বহিঃপ্রকাশ।
সৌদি আরবের রাজ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের দুর্নীতি শক্ত হাতে দমন, বাদশাহ এবং তার পুত্র মোহাম্মদ বিন সালমান নিজেদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতেই তাদের এই হার্ডলাইন। সেখান থেকেই মূলত এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতির শুরু।

সৌদি আরবের দুর্নীতি দমন কমিটিকে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন করে তা ব্যবহার করছে রাজ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ওপর। যার ফলে পরিস্থিতি অনেকটাই অস্থিতিশীল হয়েছে। প্রিন্স ওয়ালিদ বিন তালাল এবং যে সব মন্ত্রী গ্রেপ্তার হয়েছেন তারা কাতার সম্পর্কে সৌদি আরবের যে অবস্থান ছিল সে বিষয়ে অনেকেই একমত ছিলেন না। এছাড়া বর্তমানে সৌদি আরবে একটি আদর্শগত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমরা দেখছি, সৌদি আরব কট্টর মুসলিম দেশ থেকে সরে গিয়ে একটি লিবারেল মুসলিম দেশে পরিণত হতে চাচ্ছে। এ কারণে হয়তো দেশের ভেতর থেকে ভিন্ন ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। এবং বর্তমান পরিস্থিতি সেটারই বহিঃপ্রকাশ। এসবের কারণে সৌদি বাদশাহী যে নিয়ম, সেটি দুর্বল হচ্ছে। বাদশাহী প্রথা ভেঙে পড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
পরিচিতি : নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
মতামত গ্রহণ : সাগর গনি
সম্পাদনা : আশিক রহমান