লায়ন এম, কে বাশার : মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় আমরা যে সিলেবাস ফলো করে লেখাপড়া শিখাচ্ছি সেটার মান নিয়ে একটা বড় প্রশ্ন আছে। আমাদের ছেলে-মেয়েরা দেশে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করার পর ব্যাচলর ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তি নিচ্ছে না। কারণ, তারা মনে করে এটা এ্যাপ্রোভাল মার্ক না। এটি আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অন্যদিকে, পরিবর্তিত সিলেবাসের উপর শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ হচ্ছে না। যার ফলে ক্লাসে শিক্ষকরা সঠিকভাবে পাঠদান করতে পারছে না। শিক্ষকরা যেহেতু ভাল পাঠদান করতে পারছে না, সেহেতু শিক্ষার্থীরা ভাল শিক্ষা পাচ্ছে না। অন্যদিকে সরকার কিছু আইন করেছিল, যেমন: স্কুলে কোনো রকম শাস্তি নিষিদ্ধ, যার ফলে এই সুযোগটা ছেলে মেয়েরা কাজে লাগিয়ে ক্লাসে অমনোযোগী হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষক সেখানে শাসন করতে পারছে না। পড়া আদায় করতে পারছে না, যার ফলে ছেলে মেয়েরা রিয়েল শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
কোথাও একটা ল্যাপটপ আর প্রজেক্টর দিয়ে একটা রুমকে মালটিমিডিয়ার আওতায় আনা হয়েছে। কিন্তু সেখানে পড়ানোর জন্য সিলেবাস অনুযায়ী যে লেকচারগুলো তৈরী করা হয়েছে, সেগুলো তো মাল্টিমিডিয়ায় দেখানোর মতো উপযুক্ত হতে হবে। এখন যেখানে আমাদের দেশের বেশিরভাগ শিক্ষকেরই ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ ফ্যাসিলিটি নাই, সেখানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস ব্যবহার করা সম্ভব নয়। অন্যদিকে একটা স্কুলে একটা ক্লাস রুমকে মাল্টিমিডিয়ার আওতায় আনা হয়েছে। এখন একজন শিক্ষক যদি একটা ক্লাস মাল্টিমিডিয়ায় নেন, বাকি সবগুলোই কিন্তু ম্যানুয়ালী নিতে হচ্ছে। গভরমেন্ট ৩৭ হাজার ৫শ স্কুলে মাল্টিমিডিয়া করেছে। তাহলে ৩৭ হাজার ৫‘শ স্কুলের একটা ক্লাসরুমে শুধু শুরু হয়েছে। একটা স্কুলে ৫, ১০, ২০টা ক্লাসরুম থাকে। এট-এ টাইম সবগুলো ক্লাস চলতে থাকে। এটা সিস্টেমের কারণেই প্রযোজ্য হচ্ছে না। কারণ, মাল্টিমিডিয়ায় চালাতে হলে প্রত্যেকটা ক্লাসরুমকে মাল্টিমিডিয়ার আওতায় আনতে হবে। প্রত্যেক শিক্ষককে মাল্টিমিডিয়ার ব্যবহার নিশ্চিতভাবে জানতে হবে। সারা বাংলাদেশে মাত্র ২০ হাজার শিক্ষককে মাল্টিমিডিয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েদের উচ্চ শিক্ষা শেষ করে বিদেশে কর্মসংস্থান করতে হবে কিংবা দেশে করতে হবে, আর সারা পৃথিবী প্রযুক্তির দিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। কারণ, উন্নত দেশগুলোতে চলছে প্রযুক্তি সম্পৃক্ত শিক্ষা। আর আমাদের হচ্ছে প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা। আমাদেরকে প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে প্রযুক্তির উপর সম্পৃক্ত হতে হবে। ক্লাসরুমকে সম্পৃক্ত করতে হবে, আমাদের শিক্ষকদেরও সম্পৃক্ত করতে হবে।
পরিচিতি : বিএসবি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের কর্ণধার
মতামত গ্রহণ : গাজী খায়রুল আলম
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
আপনার মতামত লিখুন :