অরিজিৎ দাস চৌধুরি, কলকাতা থেকে: মুসলিম মহিলারা যোগাসন শেখাতে পারবে না- এমন ফতোয়া জারির অভিযোগ উঠেছে মুসলিম সংগঠনের এক মৌলবির বিরুদ্ধে।
যোগাসন শেখালে হত্যা করার হুমকি দিয়েছে বলে ঝাড়খণ্ডের রাফিয়া নাজ নামে এক জনপ্রিয় মহিলা যোগাসন শিক্ষিকা অভিযোগ করেছেন। ওই শিক্ষিকা বাবা রামদেবের সঙ্গে একইমঞ্চে যোগাসন শেখান।
ওই যোগাসন শিক্ষিকার অভিযোগ, যোগাসন শেখানো থামাতে তার বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করেছেন মুসলিম সমাজেরই একাংশ। তাদের দাবি, মহিলাদের যোগাসন শেখানোর অনুমতি দেয় না ইসলাম।
রাফিয়া তার অভিযোগ জানিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস ও মুখ্যসচিব সঞ্জয় কুমারের কাছে। প্রশাসনের নির্দেশ মতো রাফিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। রাঁচি পুলিশের এসএসপি কুলদীপ দ্বিবেদীর নির্দেশে পুলিশের একটি দলকে রাফিয়ার বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। এবার থেকে তার সঙ্গে সর্বক্ষণ এক মহিলা ও এক পুরুষ পুলিশকর্মী থাকবেন বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। রাঁচির দোরান্দা এলাকার বাসিন্দা রাফিয়ার সংসারই চলে তার যোগাসন শেখানোর অর্থে। স্থানীয় কলেজ থেকে এম.কম পাশ করার পর থেকেই পরিবারের ভাইবোনেদের মধ্যে সবচেয়ে বড় রাফিয়া যোগাসন শিখিয়ে সংসার চালান।
যোগগুরু রামদেব সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডে এলে তার সঙ্গে একই মঞ্চে রাফিয়া যোগাসন শিখিয়েছেন। কিন্তু এখন ফতোয়া জারি হওয়ায় আতঙ্কে ভুগছেন রাফিয়া ও তার পরিবার। মুসলিম ওই যোগাসন শিক্ষিকা বলছেন, ‘মুসলিম সমাজ আমার যোগাসন শেখানো নিয়ে প্রথম থেকেই প্রবল আপত্তি তুলছিল। কিন্তু এবার রীতিমতো ফতোয়া জারি করে আমাকে প্রাণে ও ভাতে মারার পরিকল্পনা হচ্ছে।’ তার আক্ষেপ, এমনিতেই তিনি মুসলিম বলে সমাজের অনেকেই তাদের সন্তানদের রাফিয়ার কাছে যোগাসন শেখাতে পাঠান না। এখন আবার ফতোয়া জারি হওয়ায় তার ক্লাসে কেউই আসবেন না ভেবে সর্বক্ষণ আতঙ্কে রয়েছেন তিনি। তবে প্রাণ থাকা পর্যন্ত তিনি যোগাসন চালিয়ে যাবেন বলেও মৌলবির বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়েছেন এই শিক্ষিকা।
আপনার মতামত লিখুন :