ফরহাদ আমিন, টেকনাফ(কক্সবাজার: এবার প্লাষ্টিক জারের উপর বাঁশ দিয়ে নাফ নদীতে ভেলা ভাসিয়ে এপারে আসলো মিয়ানমারের ৫২ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু। আজ বুধবার সকাল ৯ টার দিকে শাহপরীরদ্বীপ পয়েন্ট দিয়ে তারা এপারে আসে। তাদের মধ্যে ২২ শিশু, ১৭ জন নারী ও ১৩ জন পুরুষ রয়েছে। তারা সকলে রাখাইনের বুছিডং থানার বাসিন্দা।
ভেলায় ভেসে আসা রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করে হেফাজতে রেখেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বিজিবি শাহপরীরদ্বীপ কোম্পানী কমান্ডার আব্দুল জলিল সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বিজিবি হেফাজতে রয়েছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ভেসে আসা বুচিডং থানার হামপ্রাং গ্রামের বাসিন্দা রহমত উল্লাহ বলেন, গত দুই মাস যাবৎ ডংখালী চরে তাবু বানিয়ে অবস্থান করছিলাম। টাকা পয়সা না থাকায় নৌকা ভাড়া করতে না পেরে বাংলাদেশে আসতে পারছিলাম না। দুই মাস যাবৎ অনাহারে অর্ধাহারে দিন কেটেছে তাদের। শেষে গ্রাম থেকে প্লাস্টিক জার ও বাঁশ সংগ্রহ করে ভেলা তৈরী করি।
পরে নিজ পরিবারের ৮ জনসহ ৫২ জন রোহিঙ্গা ওই ভেলা নিয়ে মিয়ানমারের মংডু শহরের ডংখালির বালুচর সীমান্ত থেকে বুধবার ভোর ৩ টার দিকে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দিই। বইঠা চালিয়ে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে সকাল ৯ টার দিকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ায় পৌঁছান।
এদিকে আগত রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, গত দুই মাস যাবৎ দলে দলে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটলেও গত কয়েকদিন ধরে এপার থেকে রাখাইন সীমান্তে কোন নৌকা না যাওয়ায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা এখনো সেখানে জড়ো হয়ে আছে।
এছাড়া মিয়ানমার থেকে পালাতে নৌকার সংকট দেখা দেওয়ায় এপর্যন্ত প্রায় ৫১ জন যুবক ও কিশোর প্লাষ্টিকের জার দিয়ে সাঁতার কেটে এপারে আসে। কিন্তু এবার প্রথম নারী-শিশু ও পুরুষ ভেলায় ভেসে এসেছে।
এছাড়া এদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গারা মোবাইল যোগাযোগের মাধ্যমে রাখাইনে থাকা রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন তথ্য আদান প্রদান করে প্রলোভন দিয়ে যাচ্ছে। যাতে তারাও এদেশে পালিয়ে আসে। শিগগিরই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে নিয়ে না গেলে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ থামানো দুরহ হয়ে উঠবে বলে মত প্রকাশ করেন স্থানীয় সচেতনমহল। সম্পাদনা: মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মজুমদার
আপনার মতামত লিখুন :