অধ্যাপক আবু সাইয়িদ : সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) জন্য প্রধান বিচারপতির অনুপস্থিতি আইনি কোনো বাধা নেই। তিনি অসুস্থতার জন্য ছুটিতে আছেন। আইন অনুযায়ী, এক মাসের মধ্যে যেকোনো সময় রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করা যাবে। এক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতির থাকা, না থাকা কোনো বাধা হতে পারে না। সরকার এক মাসের মধ্যে রিভিউ করার যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা যথার্থই নিয়েছে। কিন্তু এই রিভিউ পিটিশনের মাধ্যমে মূল রায় পরিবর্তন, পরিমার্জন, পরিবর্ধন করা খুব কষ্টকর। কেননা, যে আদালতের বিচারকরা ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করেছেন, সেই আদালতের সেই একই বিচারকরা যদি পুনরায় নিজেদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন, তাহলে বিচার বিভাগের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা এবং বিশ্বাস শিথিল হবে। তাই মূল রায় পরিবর্তন হওয়া সহজ বিষয় হবে না। প্রাচীন কাল থেকে একটা প্রবাদ আছে, হাকিম নড়ে কিন্তু হুকুম নড়ে না। কাজেই যারা এই রায় দিয়েছেন তারা এই রায় পরিবর্তন করবে কিভাবে? পরিবর্তন করলে সাংবিধানিক কোনো জটিলতা দেখা দেয় কি না? বিচার বিভাগের ওপর আস্থাহীনতা সৃষ্টি হয় কি না? এই রকম নানা বিষয় লক্ষণীয়। তবে লক্ষ করলে যা দেখা যায় তা হলোÑ এই রায় যতখানি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি বিতর্কিত হয়েছে রায়ের পর্যবেক্ষণ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে নিয়ে এই রায়ে যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন, তা একেবারেই অনৈতিক এবং অগ্রহণযোগ্য। বাংলাদেশের ভিত্তিটা ভিত্তিহীন করার অপচেষ্টা করা হয়েছে এই পযর্বেক্ষণে। সাধারণ মানুষের ঐতিহাসিক বিশ্বাসের উপরও হস্তক্ষেপ হয়েছে। তাই অবিলম্বে এই রায়ের পর্যবেক্ষণ পরিবর্তন করা উচিত। আর সরকার যদি সম্পূর্ণ রায় পরিবর্তন করা প্রয়োজন মনে করে, তাহলে সাংবিধানিক পদ্ধতিতে সংসদে এই আইন বাতিল করে নতুন আইন করতে পারে। তার জন্য সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন পড়বে। যে শক্তি সাংবিধানিকভাবে সংসদের হাতে আছে।
পরিচিতি : রাজনীতিক ও কলামিস্ট
মতামত গ্রহণ : লিয়ন মীর
সম্পাদনা : খন্দকার আলমগীর হোসাইন
আপনার মতামত লিখুন :