শিরোনাম
◈ ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহতদের ৬ জন একই পরিবারের ◈ গাজীপুরের টঙ্গি বাজারে আলুর গুদামে আগুন ◈ রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনোয়ারুল হক মারা গেছেন ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শনিবার ঢাকা আসছেন ◈ দুই এক পশলা বৃষ্টি হলেও তাপদাহ আরো তীব্র হতে পারে  ◈ এথেন্স সম্মেলন: দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ◈ কেএনএফ চাইলে আবারও আলোচনায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে: র‌্যাবের ডিজি ◈ ওবায়দুল কাদেরের হৃদয় দুর্বল, তাই বেশি অবান্তর কথা বলেন: রিজভী ◈ মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী ◈ বাংলাদেশ সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৮ নভেম্বর, ২০১৭, ০৭:১৭ সকাল
আপডেট : ০৮ নভেম্বর, ২০১৭, ০৭:১৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

স্বচ্ছ অবাধ নির্বাচন ও একটি পাগলের প্রলাপ

ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা : হ্যাঁ, পাগলের প্রলাপই বলতে পারেন। কারণ অনেক দিন ধরেই আমি এই প্রলাপ বকে আসছি। আর যদি এই প্রলাপেই সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকার অপচয় বন্ধ হয় আর ক্ষমতাসীন সরকার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা সহায়ক সরকারের বিতর্কের অবসান হয়, তাহলে কেন এই প্রলাপকে সিরিয়াসলি গ্রহণ করা হবে না। আজ যদি নিশ্ছিদ্রভাবে স্বচ্ছ একটি ভোটার তালিকা ১০ দিনের মধ্যে প্রণয়ন করা সম্ভব হয় এবং নিশ্ছিদ্রভাবে স্বচ্ছ ভোটার তালিকার ভিত্তিতে প্রত্যেকটি ভোটারকে একটি জবাবদিহিমূলক ভোটার আইডি কার্ড তুলে দেওয়ার মাধ্যমে স্থায়ীভাবে ভোট কারচুপি, ভোট সন্ত্রাস, ব্যালট বাক্স ছিনতাই কিংবা ভোটকেন্দ্র দখল চিরতরে বন্ধ করা সম্ভব হয়, তাহলে কেন নির্বাচন কমিশন বা সরকার সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না, একজন সাধারণ সচেতন নাগরিক হিসেবে আমার কাছে তা বোধগম্য নয়।

বার বার বলছি আবারও বলছি, দয়া করে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার দায়িত্বটা একটি ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ের ‘ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ কমিটি’র কাছে অর্পণ করুন। ওয়ার্ডের নির্বাচিত সদস্যকে সভাপতি করে তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বিগত ওয়ার্ড নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকটি প্রার্থীকে সদস্য করে ওয়ার্ডের গড় ২৫০০-৩০০০ ভোটারের তালিকা হালনাগাদ করার দায়িত্ব এই কমিটির হাতে ন্যস্ত করুন। ওয়ার্ডের বিগত নির্বাচনের পর কতজন ভোটার নতুন যোগ হতে পারে এবং কতজন বাদ পড়তে পারে এ বিষয়ে নিশ্ছিদ্র স্বচ্ছভাবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তো এ কমিটিই সর্বসম্মতভাবে দিতে পারে। তুলে দেন না স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে এ কমিটির হাতে কিছু খরচের টাকা। ১০ দিনের মধ্যে কি পারবে না এই কমিটি তার ওয়ার্ডের গড় ২০০০-৩০০০ ভোটারের তালিকা হালনাগাদ করতে? কিছু দিন আগে বিগত ওয়ার্ড নির্বাচনে এরাই তো ঘরে ঘরে গিয়ে ওয়ার্ডের ভোটারদের ভোট ভিক্ষা চেয়েছে। এ তালিকা প্রস্তুত করতে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর লাগবে কেন? আর হাজার হাজার টাকার বাজেটই বা লাগবে কেন? দেশব্যাপী এ ভোটার তালিকা কি নিশ্ছিদ্র ও স্বচ্ছভাবে ১০ দিনে প্রস্তুত করা সম্ভব নয়? নির্বাচন কমিশন এ ব্যবস্থা না গ্রহণ করলে কোটি কোটি টাকার অপচয় কিংবা আত্মসাতের দায়িত্ব (দায়) তাদেরই বহন করতে হবে।

হয়তো নির্বাচন কমিশনকে পরামর্শ দেওয়ার মতো রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আমাদের নেই, তাই তাদের সাক্ষাৎকার আমাদের ভাগ্যে ঘটেনি কিন্তু পত্রিকান্তরে প্রকাশিত এ প্রতিবেদনের প্রতিপাদ্য বিষয় অনুধাবন করার প্রজ্ঞা তো নিশ্চয়ই নির্বাচন কমিশন অর্জন করেছে!

হালনাগাদকৃত এ ভোটার তালিকার ভিত্তিতে একটি জবাবদিহিমূলক ভোটার আইডি কার্ড হিসেবে কেন জাতীয় পাসপোর্টটি একজন ১৮ বছর বয়স্ক ভোটারের হাতে তুলে দেবেন না? কে বুঝে স্মার্টকার্ড, জাতীয় পরিচয়পত্রের কার্যকারিতা ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে তো আমরা দেখেছি।

কিসের
ঊঠগ পদ্ধতি— আমি তো বুঝি না জিনিসটা কি! একজন অনভিজ্ঞ, অশিক্ষিত বা অর্ধশিক্ষিত বা মূর্খ ভোটার কীভাবে বুঝবে এর মর্ম। পাসপোর্ট তো ঘরে ঘরে পরিচিত। পাসপোর্টের একটি পৃষ্ঠা কি সংরক্ষিত থাকতে পারে না নির্বাচন কর্মকর্তার

endorsement বা স্বাক্ষরের জন্য? ব্যালট পেপার হস্তান্তরের আগে সংশ্লিষ্ট ভোটারদের পাসপোর্টের সংরক্ষিত পৃষ্ঠায় নির্বাচন কর্মকর্তা তার স্বাক্ষর-তারিখসহ প্রদান করলে সংশ্লিষ্ট ভোটারের পাসপোর্টেই তো প্রমাণ রয়ে গেল তার ভোটকেন্দ্রে উপস্থিতির! পাসপোর্টে

endorsement নেই অথচ দেখা গেল ভোটকেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট ভোটারের নাম প্রকাশিত হয়েছে তিনি ভোট দিয়েছেন, এই কারচুপি তো সহজেই শনাক্ত করা যাবে পাসপোর্টের মাধ্যমে। তাহলে কেন এই জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না? এ ব্যবস্থা তো ভোট কারচুপি বন্ধ করবে। ভোট সন্ত্রাস তথা ব্যালট বাক্স ছিনতাই এবং ভোটকেন্দ্র দখল বন্ধ করবে, কারণ একজন ভোটার সহজেই প্রমাণ বা শনাক্ত করতে পারবেন তিনি ভোট দেননি এবং পাসপোর্টে নির্বাচন কর্মকর্তার স্বাক্ষর বা

endorsement নেই। এ ব্যবস্থায় একজন আনসারের অধীনেই তো ভোটকেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ লাইনের মাধ্যমে ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন। ক্ষমতাসীন সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা সহায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা কি এক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক!

জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে নির্বাচনের রায়ে, প্রতিষ্ঠিত হবে জনগণের সংসদ, ক্ষমতায় আসবে জবাবদিহিমূলক জনগণের সরকার! এই পাসপোর্টে তো অনেক ভিসার পাতা সংযোজনের প্রয়োজন নেই। শুধু পরিচয় সম্মিলিত এই চার বা পাঁচ পৃষ্ঠার পাসপোর্টে যারা ভিসার পাতা সংযোজন করতে চান, তারা তো অবশ্যই অতিরিক্ত খরচ দিয়ে তা সংযোজন করতে পারবেন।

আমাদের পবিত্র সংবিধানের বিধান ‘রাষ্ট্রের ক্ষমতার মালিক জনগণ’। জনগণের এই মালিকানার নিশ্চয়তায় একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন যদি এভাবেই নিশ্চিত করা যায়- রাষ্ট্র কেন অগ্রাধিকার দেবে না এর ওপর প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দে আর এই ৫ পৃষ্ঠায় পাসপোর্ট ১০ কোটি ভোটারের জন্য নিশ্চিত করতে এবং আমাদের দেশে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে আমাদের রয়েছে জাতিসংঘের

UNDP ইত্যাদি সংস্থা, তারা কি পারবে না এই অর্থের সংস্থান করে দিতে!

লেখক : রাজনীতিক।

সূত্র : বিডি প্রতিদিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়