শিরোনাম
◈ অবশেষে মার্কিন সিনেটে সাড়ে ৯ হাজার কোটি ডলারের সহায়তা প্যাকেজ পাস ◈ কক্সবাজারে ঈদ স্পেশাল ট্রেন লাইনচ্যুত, রেল চলাচল বন্ধ ◈ ইউক্রেনকে এবার ব্রিটেননের ৬১৭ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা ◈ থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ◈ জিবুতি উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকাডুবিতে ৩৩ জনের মৃত্যু ◈ লোডশেডিং ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে, চাপ পড়ছে গ্রামে ◈ এফডিসিতে মারামারির ঘটনায় ডিপজল-মিশার দুঃখ প্রকাশ ◈ প্রথম ৯ মাসে রাজস্ব আয়ে ১৫.২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন ◈ প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাত চেয়ারম্যানসহ ২৬ জন নির্বাচিত ◈ বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগ আহ্বান রাষ্ট্রপতির

প্রকাশিত : ০৬ নভেম্বর, ২০১৭, ০৪:৫২ সকাল
আপডেট : ০৬ নভেম্বর, ২০১৭, ০৪:৫২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার শিক্ষক

ড. এএসএম আতীকুর রহমান : জোড়া খুনের ঘটনা, এটা সমাজ চক্রের স্বাভাবিক ঘটনা। এটা এ কারণেই যে, এ ধরনের ঘটনা আগেও ছিল, এখনো আছে । এটা আমরা পত্র-পত্রিকায় দেখি অনৈতিক সম্পর্কের কারণে, যদিও আমাদের একটা অভ্যাস হলো নারী সর্ম্পকিত কোনো তথ্য আসলেই এ সম্পর্কে উল্টা পাল্টা কথা বলতে আমাদের একটুও বাধে না। কারণ, নারীর প্রতি আমরা ততটা শ্রদ্ধাশীল নয়। যদি আমরা শ্রদ্ধাশীল হতাম, তাহলে পূর্ণ তদন্ত না করে এ সমস্ত কথাগুলো মিডিয়াতে প্রকাশ করতাম না। যেখানে নারী ও শিশু জড়িত আছে, এ ধরনের ঘটনাগুলো আগেও ছিল, এখনো আছে । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, অন্যান্য পরিবর্তন বা যে রকম আমরা বলি, নারী শিক্ষা কিন্তু বেড়েছে। নারীরা কাজ করছে। পারিবারিক প্রেক্ষাপটে নারীর অবস্থান কিন্তু জোরালো হয়নি। এ কারণে নানা ধরনের প্রলোভন, নানা ধরনের প্রতারনার শিকার হচ্ছে নারীরা । এর থেকে রক্ষা পেতে সামাজিক বা রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রচারণা নাই। শিক্ষক হিসেবে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা সফল নয়। ক্লাস রুমে ছেলে মেয়েদের যদি শেখাতে পারতাম, তাহলে মনে হয় এই সহিংসতা কমতো। এখন আমাদের একটা সুসংবাদ হলো, গণমাধ্যম আগের থেকে অনেক সোচ্চার। যে কারণে খবরগুলো বের হয়ে আসছে। এটি পজিটিভ। এগুলো যত বের হবে তত ভালো।
আগের থেকে এসব ঘটনা বেড়ে গেছে, কথাগুলো ঠিক। আগের থেকে আমরা সচেতন হচ্ছি। গণমাধ্যমকে আরো বলিষ্ট ভূমিকা রাখতে হবে। শিক্ষককে বলা হয় সমাজ গড়ার কারিগর। স্কুল কলেজ মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষককে জোরদার ভূমিকা রাখতে হবে। তাহলে পরিবার, নারী, শিশুকে আমরা সুরক্ষিত রাখতে পারবো। আসলে যদি সার্বিকভাবে দেখা হয়, ঢাকা শহরে প্রায় দুই কোটি জনসংখ্যা। এর মধ্যে যে দুই একটা ঘটনা ঘটছে এবং সেগুলো যে মিডিয়াতে আসছে। আমরা যদি পৃথিবীর অন্য কোনো দেশ দেখি সেখানেও কিন্তু অনেক বেশি ক্রাইম হয়। বাংলাদেশের মানুষ পারিবারিকভাবে অনেক সহনশীল। কিন্তু তারপরেও ঘটনাগুলো কেন ঘটবে? ঘটে এ কারণেই যে, আমাদের সামাজিক এবং নৈতিক শিক্ষা গুলোর বাস্তবায়ন ঘটছে না। আগে যেমন পাড়া মহল্লায় পঞ্চায়েত সিস্টেমের মত ব্যবস্থা ছিল, এখন তা নেই। মসজিদগুলোর মাধ্যমে যদি আরো প্রচারণা করা যায়, প্রতি সপ্তাহে দেড়-দুই কোটি লোক মসজিদে যায়, তারা জানতে পারে। ইমাম সাহেবদের মাধ্যমে আমরা নৈতিক শিক্ষা দিতে পারি। মন্দির, গীর্জার মাধ্যমেও দিতে পারি। যে ধরনের ঘটনাগুলো ঘটছে ঘটনাগুলো আমাদেরকে নাড়া দিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনাগুলো আতঙ্কিত হওয়ার মত নয়। এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তারপরও আমরা মনে করি, আমাদের সমাজকে সুস্থ রাখতে হলে এ ঘটনাগুলোকে কন্ট্রোল করতে হবে। একটা কথা হল, সরকার কি করতে পারে? সরকার তো আমাদের দ্বারাই গঠিত। জনগন যদি সহযোগিতা না করে, সরকার একলা কিছু করতে পারে না। বাংলাদেশের আইন শৃংখলা বাহিনীর ক্ষমতা আরো বাড়ানো দরকার। নতুন ধরনের ক্রাইমকে কিভাবে ডিটেক্ট করা যায় সে ব্যবস্থা জোরদার করা দরকার। পুলিশ বাহিনীর ক্ষমতা যদি আরো বাড়ানো যায়, আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে তাহলে এই হত্যাযজ্ঞ আরো কম হতো। সমাজ যতদিন আছে ততদিন পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটবেই। একদম নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে না। এগুলো স্বাভাবিক । তবে আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। যাতে করে আমরা এই সমস্যা গুলো নারী , শিশু, প্রতিবন্ধীদের জন্য আমরা যাতে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। সেজন্য সরকারকে ও আইনকে মেনে চলতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে যদি আমরা এগিয়ে আসি, তাহলে এই হত্যাযজ্ঞ ও অপরাধগুলো হ্রাস পাবে।

পরিচিতি : অধ্যাপক, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢা.বি.
মতামতগ্রহণ : সানিম আহমেদ
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়