শিরোনাম
◈ গাজীপুরে হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু  ◈ বিশৃঙ্খলার পথ এড়াতে শিশুদের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সেই সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও)

প্রকাশিত : ০৬ নভেম্বর, ২০১৭, ০৮:২৭ সকাল
আপডেট : ০৬ নভেম্বর, ২০১৭, ০৮:২৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যুবরাজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার কৌশল!

ডেস্ক রিপোর্ট : দুর্নীতির অভিযোগে প্রিন্স আলওয়ালিদ বিন তালালসহ ১১ যুবরাজ ও ৪ মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে সৌদি আরবের কর্তৃপক্ষ। বরখাস্ত করা হয়েছে নৌবাহিনীর প্রধানকে। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রীও গ্রেপ্তার হয়েছেন। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, শাসনব্যবস্থায় যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতেই এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর পেছনে দুর্নীতি দমনের লক্ষ্যকে ছাপিয়ে আরও কিছু রয়েছে। বিশেষ করে, যুবরাজের সম্ভাব্য বিরোধীদের সরিয়ে দিতেই পদক্ষেপটি নেওয়া হয়েছে।

গতকাল রোববার সৌদি আরবের দুজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, গত শনিবার গ্রেপ্তার হওয়া প্রিন্সদের মধ্যে দেশটির শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা প্রিন্স মিতেব বিন আবদুল্লাও রয়েছেন। দেশটির ক্ষমতাধর ন্যাশনাল গার্ডের মন্ত্রীর পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে প্রিন্স খালেদ বিন আয়াফকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। আর এর মাধ্যমে আসলে ৩১ বছর বয়সী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানেরই নিয়ন্ত্রণ বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ এত দিন সৌদি রাজপরিবারের অন্য একটি শাখার নিয়ন্ত্রণে ছিল এই মন্ত্রণালয়। প্রিন্স মিতেব হলেন প্রয়াত বাদশাহ আবদুল্লাহর ছেলে। একসময় তাঁকেই সৌদি সিংহাসনের উত্তরাধিকারী বলে মনে করা হতো।

১১ যুবরাজ ও চার মন্ত্রীর গ্রেপ্তার হওয়ার খবরটি আসে গতকাল দিনের শুরুতে। এর আগে বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ নতুন একটি দুর্নীতি দমন কমিটির ঘোষণা দেন। এই কমিটির প্রধান যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। নতুন এই কমিটিকে তদন্ত, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও সম্পদ জব্দের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। বাদশাহর জারি করা ডিক্রিতে বলা হয়, দুর্নীতির মূলোৎপাটন ছাড়া সৌদি আরব টিকতে পারবে না।

যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বাবা সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ ২০১৫ সালে সিংহাসনে আরোহণ করেন। এর আগ পর্যন্ত বহির্বিশ্বে বর্তমান যুবরাজকে খুব কম লোকই জানতেন। তাঁর ক্ষমতায় আরোহণ মূলত শুরু হয় তিন বছর আগে থেকে। এরই মধ্যে তিনি বেশ কিছু উচ্চাকাঙ্ক্ষী সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন। গত সেপ্টেম্বর মাসে তিনি ঘোষণা দেন, নারীর গাড়ি চালানোর ওপর যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তাঁর দেশে, তা তুলে নেওয়া হবে। সে সময় তিনি আরও বলেন, সৌদি আরবে দশকের পর দশক ধরে চলে আসা রক্ষণশীল ঐতিহ্যকে ভাঙার চেষ্টা করছেন তিনি। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তিনি কিছু খাতে রাষ্ট্রীয় ব্যয় কমিয়ে এনেছেন। গত জুন মাসে সাবেক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফকে সরিয়ে নিজের সন্তান মোহাম্মদ বিন সালমানকে যুবরাজ ঘোষণা করেন বাদশাহ সালমান।

সাম্প্রতিকতম এই গ্রেপ্তারের ব্যাপারে সিঙ্গাপুরের এস রাজারত্নম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো জেমস ডরসে বলেন, মিত্রের সংখ্যা বাড়ানোর চেয়ে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান রাজপরিবারে তাঁর ক্ষমতা আরও নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে, সেনাবাহিনী ও ন্যাশনাল গার্ডকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া।

উপসাগরীয় অঞ্চলের একটি বড় ব্যাংকের একজন অর্থনীতিবিদ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, সৌদি আরবে কেউই বিশ্বাস করছে না, দুর্নীতিই ওই প্রিন্সদের গ্রেপ্তারের মূল কারণ। এটা পুরোটাই ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা।

বরখাস্ত হওয়ার তালিকায় রয়েছেন সৌদি নৌবাহিনীর কমান্ডার অ্যাডমিরাল আবদুল্লাহ বিন সুলতান বিন মোহাম্মদ আল-সুলতানও।
প্রিন্স তালাল ও প্রিন্স মিতেব ছাড়াও গ্রেপ্তার হয়েছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী ইব্রাহিম আল-আসাফ। তিনি সৌদি জ্বালানি কোম্পানি আরামকোর পরিচালনা পর্ষদেরও সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া অর্থমন্ত্রী আদেল ফাকিয়েহ, রিয়াদের সাবেক গভর্নর প্রিন্স তুর্কি বিন আবদুল্লাহ, বিচার বিভাগের সাবেক প্রধান খালিদ আল-তুওয়াইজিরি, সৌদি নির্মাণপ্রতিষ্ঠান বিন লাদেন কনস্ট্রাকশন গ্রুপের চেয়ারম্যান বকর বিন লাদেনও গ্রেপ্তার হয়েছেন।

সরকারি সূত্র বলেছে, গ্রেপ্তার হওয়া কয়েকজনকে রিয়াদের কূটনৈতিক এলাকায় অবস্থিত রিজ-কার্লটন হোটেলে অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের অবস্থান ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদার নিরিখে তাঁদের কোনো বিশেষ সুবিধা দেবে না সৌদি আরব। প্রথম আলো

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়