উমর ফারুক : কমবেশি প্রতিদিনই হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনসহ নানা কারণে তাজাপ্রাণ ঝরে যাওয়ার খবর শিরোনাম হচ্ছে গণমাধ্যমে । বিশ্লেষকরা বলছেন, নগরায়নসহ বিভিন্ন কারণে সমাজে বেড়েছে বঞ্চনা ও বৈষম্য । সেই সঙ্গে বিচার বিভাগের প্রতি অনাস্থা, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া আর মূল্যেবোধের অবক্ষয়ের কারণে বাড়ছে অপরাধ।
সম্প্রতি রাজধানীতে সড়কে সন্তান প্রসব পরে নবজাতকের মৃত্যু । কাছাকাছি সময়ে গণমাধ্যমে উঠে আসে সাস্থ্যসেবায় একটি অদক্ষতার অধ্যায়।কুমিল্লায় সন্তান গর্ভে রেখেই ঘটে সেলায়ের ঘটনা, আইসিইউ রোগীকে ছাড়পত্র দিয়ে এবং মৃত্যুর ঘটনাটি ও বেশ সমালোচিত হয় বগুড়াসহ সারা দেশে ।
মাবিপ্রবির ক্রিমিনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের ভিতরে মুনাফা কেন্দ্রিক যে ধরনের লাভ ইমিডিয়েট সুবিধা কেন্দ্রিক যে মানসিকতা তৈরি করে সেটারই একটি বহিঃপ্রকাশ । সামগ্রিকভাবেই এটি ঘটছে, মানুষ মারা যাচ্ছে কিন্তু একজন ডাক্তার চিন্তা করছে টাকাটা সে পাবে কিনা । ক্লিনিকের টাকা স্যুট করতে পারবে কিনা ।
লক্ষীপুরে মোবাইলের এ্যাপ ডিলেট করে ফেলায় চরম নিষ্ঠুরতার শিকার হন চার বছর বয়সের পিয়াস । রাজশাহীর তরুণ-তরুণীর মৃত্যু ভাবনায় ফেললেও উন্মোচন হয়নি রহস্যের । বন্ধুকে হত্যা ও গণধর্ষনের পর অপরাধ ঢাকতে খুন করা হয় প্রেমিকাকেও ।
মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন , সংকীর্ণ জবাবদিহিতায় বাড়াচ্ছে অপরাধ প্রবণতা ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবীদ আক্তার বানু বলেন, যদি আমি জানি এই ধরনের কোন কিছু করলে পরবর্তীতে আমি শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে তাহলে আমি আমার কাজে আরো বেশি সতর্ক হব ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সমাজের নানা স্তরে বেড়েছে বঞ্চনা ও বৈষম্যর মাত্রা, বিচার বিভাগের প্রতি অনাস্থা, অপরাধ দমনে উদাসীনতা । মূল্যেবোধের অবক্ষয় সহ নানা কারণেই আইন হাতে তুলে নিচ্ছেন অনেকে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক সাদেকুল আরেফিন বলেন, অস্থিরতা, বঞ্চিত হওয়া বা অতি আবেগ জনিত কারণ এসব গুলো মিলিয়ে কিন্তু আজকে এই ধরনের অপরাধ গুলো এবং নৃশংস অপরাধ গুলো ঘটছে ।
এই সংকট থেকে উত্তরণের উপায় কি? সমাজ বিশ্লেষকরা বলছেন, শিশু শ্রেণি থেকেই দিতে হবে সামাজিক মূল্যেবোধের শিক্ষা । এর সাথে অপসংস্কৃতি রোধেও সরকারকে নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।
সূত্র : যমুনা নিউজ ।
আপনার মতামত লিখুন :