শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ০৪ নভেম্বর, ২০১৭, ০৪:৪০ সকাল
আপডেট : ০৪ নভেম্বর, ২০১৭, ০৪:৪০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশের মানবিকতা এবং রোহিঙ্গাদের অপরাধ

ডা. জাকির হোসেন : বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারেরই একটি রাজ্যের নাম রাখাইন। এই ভু-খ-ে বসবাসরত জনগোষ্ঠী হিসেবে রোহিঙ্গা হিসেবে পরিচিত। রাখাইনকে নাফ নদী বাংলাদেশ থেকে পৃথক করে রেখেছে। রাখাইন রাজ্যটি বাংলাদেশের সীমানার খুব নিকটবর্তী হওয়ায় সেখানে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর সেদেশের সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে প্রায় সকল রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা কক্সবাজারের বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমার স্বাধীনতা লাভের পর বিশেষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী সেদেশের সংখ্যা গরিষ্ঠ বৌদ্ধদের মতামতকে উপেক্ষা করে বৃটিশদের পক্ষালম্বন করার পর থেকে রোহিঙ্গাদের উপর যে অভিশাপের খরা নেমে আসে তা চলছে এখনো। নানা ছুঁতোর বাহানায় কিছুদিন পর পর সেদেশের বৌদ্ধ ভিক্ষুদের অত্যাচার, সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়ে রাখাইন এখন প্রায় রোহিঙ্গা শূন্য করে ফেলেছে। প্রতিবার নির্যাতনের শুরু হলেই নির্যাতিতরা নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে আশ্রয় গ্রহণ করে। তবে স্মরণকালের সকল নির্যাতনে রেকর্ড ভেঙে এবার মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের ভয়াবহতা এত বেশি ছিল যে পুরো আরাকান এখন রোহিঙ্গা শূন্য। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে প্রায় পনেরো লক্ষ রোহিঙ্গা আশ্রয় গ্রহণ করেছে। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঢল এখনো থেমে নেই। প্রতিদিনই তারা সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এই সকল নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়াতে বাংলাদেশ সরকার শুরু থেকেই ছিল মানবিক। তাদের অধিকার নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের বিভিন্ন ফোরভমে কূটনৈতিক লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের এই উদার মানবিকতার বিপরীতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী দিনের পর দিন নানা রকম অপরাধমূলক কর্মকা-ের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। খবরের কাগজ খুললেই তাদের বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা-ের খবরের শিরোনাম চোখে পড়ছে। কিছুদিন আগে কক্সবাজারের রামুতে এক বাংলাদেশি নাগরিক কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে এক রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করেছে পুলিশ। রোহিঙ্গারা এর মধ্যেই সেখানে দায়িত্বরত পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে মারধর করেছে। এছাড়াও মাদক আর ইয়াবা পাচারের সাথে রোহিঙ্গা নামটি অনেক আগে থাকেই জড়িয়ে আছে। প্রশ্ন হলো বাংলাদেশের এই উদার মানবিকতার বিপরীতে রোহিঙ্গাদের এই ধরনের অপরাধ কতটুকু বাংলাদেশীদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে? উত্তর হবে একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশকে তাই রোহিঙ্গা ইস্যুটি নিয়ে দলমত নির্বিশেষে এক হয়ে কাজ করা অতীব জরুরি। বাংলাদেশের সর্বাগ্রে ভাবতে হবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নির্যাতিত হচ্ছে বহু বছর ধরে। কিন্তু এতদিনেও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ের জন্য কেনো রাজনৈতিক নেতৃত্ব তৈরি হয় নি। এই নেতৃত্বহীন জনগোষ্ঠীকে অপরাধপ্রবণ থেকে বিরত রাখা বাংলাদেশের জন্য অনেক বেশি কষ্টসাধ্য হবে। তাই বাংলাদেশ সরকারের উচিত হবে সময় থাকেতে এই মানবিকতার সঙ্গে সঙ্গে কী করে তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো যায় কিংবা জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থাগুলোর সাথে সমন্বিতভাবে কাজ করে তৃতীয় কোনো দেশে তাদেরকে বসবাসের সুযোগ করে দেওয়া যায় কি-না, সে বিষয়ে তৎপরতা চালানো।
লেখক : চিকিৎসক ও কলামিস্ট
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়