জাফর আহমদ : লিঙ্গ সমতায় বাংলাদেশ ২৫ ধাপ এগিয়েছে। আগে ছিল ৭২তম। এখন ২৫ ধাপ এগিয়ে ৪৭তম স্থানে অবস্থান করছে। যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম। ওয়ার্ল্ড ইকোনিমক ফোরামের গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ র্যাংকিং ২০১৭-তে এ তথ্য উঠে এসেছে। তবে বাংলাদেশের এই উন্নতিতে তুষ্ট হওয়ার কিছু নেই বলে মনে করেন অথনীতিবিদরা। তারা বলেন, লিঙ্গ সমতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থা খুবই খারাপ। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের অবস্থা আরও খারাপ হওয়ার কারণে এমন মনে হচ্ছে। বাংলাদেশে নারীরা এখনো ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে বৈষম্যের শিকার। লিঙ্গ সমতায় বাংলাদেশকে কার্যকরভাবে এগুতে হলে ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতা টপকাতে হবে।
লিঙ্গ সমতায় বাংলাদেশের এই উন্নতির পেছনে শিক্ষা ও গ্রামীণ দরিদ্র নারীমুখী ক্ষুদ্রঋণ ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় নারীর অবস্থা এমনিতেই খারাপ। এ অবস্থায় বাংলাদেশ যেটুকু করেছে তাতেই বেশি বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু সর্বোপরি আমরা যদি দেখি, আমাদের অনেক ক্ষেত্রে অসমতা রয়ে গেছে। পুরুষের কর্মে নিয়োজিতের হার যেখানে ৮৩ শতাংশ, নারীরা সেখানে ৩৪ শতাংশ। কাজের ক্ষেত্রে ও একই কাজে নারী এবং পুরুষের মজুরির ক্ষেত্রে বৈষম্য রয়েছে। উচ্চশিক্ষা এবং কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রেও নারীরা পিছিয়ে। তবে আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। এজন্য সমতার ক্ষেত্রে যে উন্নতি হয়েছে, তা প্রশংসনীয়। তবে আত্মতুষ্টি করার কিছু নেই।
সরকারের নানা উদ্যোগের ফলে নারীরা এগিয়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গর্ভনর ইব্রাহিম খালেদ। তিনি বলেন, আমাদের মৌলভী সাহেবরা নারীদের ঘরের মধ্যে আটকে রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সরকারের নানামুখী উদ্যোগের ফলে কাজে নিয়োজিত হওয়ার ক্ষেত্রে নারীরা কারো বাঁধা মানেনি। শিক্ষা ক্ষেত্রে মেয়েদের বৃত্তিসহ সুযোগ-সুবিধা থাকার কারণে স্কুলে উপস্থিতির হার বেড়েছে। নারীদের মাঝে শিক্ষার হার বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে তাদের কেউ ঘরে আটকে রাখতে পারছে না। কোন না কোনভাবে তারা মুল্যায়িত হচ্ছে। তিনি বলেন, লিঙ্গ সমতার ক্ষেত্রে সরকার বর্তমান ও আগের মেয়াদে যেসব উদ্যোগ নিয়েছে, বাংলাদেশের সামাজিক জীবনে ধর্মীয় প্রভাব প্রবল না হলে লিঙ্গ সমতার জায়গায় আমরা বিশ্বের প্রথম সারির দেশ হতাম।
আপনার মতামত লিখুন :