মতিনুজ্জামান মিটু : মেয়ে চারার অভাবে সংকটে বাংলাদেশে আরবী খেজুর চাষ কার্যক্রম। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় আরবের খেজুর উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। এমন ধারণায় ১৫-২০ বছর ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকার কিছু আগ্রহী চাষি বীজ থেকে তৈরি চারা দিয়ে খেজুর গাছের বাগান তৈরি করেন। কিন্তু মেয়ে চারার দেখা না মেলায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা হতাশ হন। দুই একটি ছাড়া বীজ থেকে তৈরি চারার বেশিরভাগই পুরুষ গাছ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু গাছে ফুল ও ফল ধরলেও তা বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক নয়।
এমন পরিস্থিতির মুখে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সরকারিভাবে এই প্রথম আরব দেশ থেকে উন্নত জাতের খেজুর কলম ও চারা আমাদানি করে বিভিন্ন জেলার হর্টিকালচার সেন্টারগুলোতে বাগান সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছেন। এর মধ্যে কিছু সংখ্যক গাছে ফল ধরেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প সুত্রে জানা যায়, আরবদেশে আগে পছন্দমত গাছের কান্ড থেকে গজানো সাকার বা চারা দিয়ে বাগান সৃষ্টি করা হতো। এছাড়া বীজের চারা দিয়েও বাগান সৃষ্টির প্রচলন ছিল। এখন টিসুকালচার পদ্ধতিতে খেজুরের উন্নত জাতগুলোর প্রচুর চারা তৈরি করা হচ্ছে। টিসুকালচার পদ্ধতিতে খেজুরের উন্নত জাতগুলোর চারা এনেই বাংলাদেশে আরবী খেজুর চাষের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হর্টিকালচার উইং এর উপ পরিচালক ( ফুল ও ফল) এ কে এম মনিরুল আলম বলেন, বাংলাদেশের আবহাওয়া ও বাণিজ্যিকভাবে উপযোগিতা যাচাইয়ের জন্য ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে লাগানোর উপযোগি আনবারাহ ও আজুয়াসহ ২০ জাতের ৪১০টি জীবন্ত খেজুরের চারা এনে গাজিপুরের মৌচাকের জার্মপ্লাজম সেন্টার, দিনাজপুর ও বরিশালসহ বিভিন্ন হর্টিকালচার সেন্টারে প্রদর্শনী প্লট তৈরির জন্য দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ব্যর্থতা যাই থাক আমরা আশাবাদি এদেশে আরবের খেজুর চাষে সাফল্য আসবে।
এব্যাপারে হর্টিকালচার উইং এর সাবেক পরিচালক সুনিল চন্দ্র ধর বলেন, আমাদের দেশে আরবী খেজুর চাষে সাফল্য ধরা দেবে বলে মনে হয়না। এখানে আরবের খেজুর চাষ কখনোই লাভজনক হবেনা। ইতিপূর্বে যারা অনেক আশা নিয়ে খেজুরের বাগান করেছিলেন, তাদের অনেকেই এখন হতাশ।
অনেক চেষ্টা করেও মেয়ে গাছ তৈরি না হওয়ায় তাদের অনেকে গাছ কেটে ফেলেছেন। শুধু আমরা না ভারত এবং মালয়েশিয়াতেও আরবী খেজুর চাষে কোনো সাফল্য আসেনি।
আপনার মতামত লিখুন :