শিরোনাম
◈ গাজীপুরে হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু  ◈ বিশৃঙ্খলার পথ এড়াতে শিশুদের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ সৃষ্টি করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ◈ তাপপ্রবাহের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসও বন্ধ ঘোষণা ◈ সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৮৪০ টাকা ◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সেই সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও)

প্রকাশিত : ০২ নভেম্বর, ২০১৭, ০৮:১২ সকাল
আপডেট : ০২ নভেম্বর, ২০১৭, ০৮:১২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আবার যে কোনো সময় শুরু হতে পারে রোহিঙ্গা ঢল

শিমুল : মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে এখনো অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে অন্তত অর্ধলাখ রোহিঙ্গা। আবারও যে কোনো সময় নামতে পারে আরও একটি রোহিঙ্গার ঢল।

বিশেষ করে উখিয়ার আঞ্জুমানপাড়া ও উলুবনিয়া সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গার এই ঢল বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করবে বলে ধারণা করছে বিজিবি ও স্থানীয় প্রশাসন। এজন্য সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি ও পুলিশ প্রশাসন। নাফ নদ পার হয়ে গত দুই দিনে নৌকাযোগে আরও সহস্রাধিক রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুর অনুপ্রবেশ ঘটেছে। এদিকে পাল্লা দিয়ে চলছে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের স্থল ও সমুদ্র সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা মুসলিমদের অনুপ্রবেশ। গত চার দিনে সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে নতুন করে আরও অন্তত অর্ধলাখ রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটেছে বাংলাদেশে। বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে উখিয়ার লম্বাবিল, আঞ্জুমানপাড়া, থাইংখালী, টেকনাফের হ্নীলার উনছিপ্রাং, দক্ষিণপাড়া সীমান্ত দিয়ে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে অন্তত অর্ধলাখ রোহিঙ্গা। উখিয়ার আঞ্জুমানপাড়ার বিপরীতে ওপারে মিয়ানমার সীমান্তের কোয়ানসিবং, নাইছাদং, দংখালী, কুমিরখালী, মংডুর সর্বদক্ষিণে নাইক্যনদিয়ায় মাসাধিক কাল ধরে অপেক্ষায় রয়েছে এসব রোহিঙ্গা। সুযোগ পেলেই বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করবে— এ প্রত্যাশায় ভিটেবাড়িছাড়া এসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশ সীমান্তের কাছেই মানবেতর জীবনযাপন করছে। একই সঙ্গে সমুদ্র সীমান্তের নাফ নদের ওপার থেকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ও উখিয়ার ইনানী বিচ সমুদ্রসৈকত দিয়ে নৌকা ও ট্রলারযোগে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুর অনুপ্রবেশ ঘটছে। সমুদ্রসৈকত দিয়ে নির্জন রাতের আঁধারে শাহপরীর দ্বীপের পাশাপাশি ইদানীং কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ও ইনানী বিচ হয়ে রোহিঙ্গাদের আগমন ঘটতে শুরু করেছে। এ ক্ষেত্রে বেশ কয়েকবার নৌকাডুবির ঘটনায় একশ্রেণির দালালের খপ্পরে পড়ে অকালমৃত্যুর শিকার হচ্ছে রোহিঙ্গারা। দুই দিন আগে শাহপরীর দ্বীপ হয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করা কয়েকজন রোহিঙ্গার সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, দেশ ত্যাগ করে পালিয়ে আসার সময়ও তারা নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। জাহাঙ্গীর হোসেন নামে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তির সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, মিয়ানমারের বুসিদং থানার নাইরের খোয়া গ্রাম থেকে হেঁটে আট দিন পর বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশ করেন তিনি। সঙ্গে স্ত্রী, চার সন্তানসহ সহযাত্রী ছিল প্রায় এক হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু। পথে মিয়ানমারের মগ ও চাকমাদের হাতে দুই দফা লুটপাটের শিকার হন তারা। অস্ত্রের মুখে তার স্ত্রী হোসনে আরার কাছ থেকে টাকা-পয়সা, গয়নাগাটিসহ সর্বস্ব লুটে নেয় বর্বর মগরা। এভাবে প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের নানাভাবে নির্যাতন করে সব ছিনিয়ে নেয় মিয়ানমারের মগ-মুরংরা। তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে উচ্ছেদ করার পর পালিয়ে আসার পথেও নির্যাতন-নিপীড়ন থেকে রক্ষা পাচ্ছে না রোহিঙ্গারা।

এদিকে মিয়ানমারে যে গুটিকয় রোহিঙ্গা নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করে রয়ে গেছে, তাদের এমপিসি কার্ড (মিয়ানমার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স কার্ড) নিতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে দুই দিন আগে পালিয়ে আসাদের সূত্রে জানা গেছে। এমপিসি কার্ডে থেকে যাওয়া রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে দেখানো হচ্ছে। মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে তাদের স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে না। যারা এই এমপিসি কার্ড ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছে, তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। অনেকেই মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানা দিয়ে পুলিশের হাত থেকে সাময়িক মুক্তি পেলেও অবৈধ অভিবাসী তকমা থেকে তাদের মুক্তি মিলছে না। এভাবে এখন নতুন কৌশলে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। জানা যায়, বাংলাদেশে আসা এত বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসনও। বিশেষ করে বিজিবি, পুলিশ, এমনকি নতুন করে দায়িত্ব দেওয়া সেনাবাহিনীর সদস্যরাও রোহিঙ্গাদের সামলাতে ঘাম ঝরাচ্ছেন। রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন, ত্রাণ বিতরণসহ সামগ্রিকভাবে দেখভাল করতে হচ্ছে প্রশাসনকে। টেকনাফ ও উখিয়ায় আগের প্রায় পাঁচ লাখের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। এর পরও প্রতিদিনই কিছু না কিছু রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটছে। যারা এপারে এসেছে তাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এর ওপর রয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ গর্ভবতী নারী। ইতিমধ্যে গত দুই মাসে দেড় সহস্রাধিক নবজাতকের জন্ম হয়েছে উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। গর্ভবতী নারী ও শিশুর জন্য নিতে হচ্ছে আলাদা প্রস্তুতি। এ ছাড়া অধিকাংশ শিশু এখন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। ফলে একদিকে বিপুল এই রোহিঙ্গা আশ্রিতের খাদ্যের জোগান দিতে হচ্ছে, অন্যদিকে বাসস্থান, চিকিৎসাসেবাও দিতে হচ্ছে সেনাবাহিনী, বিজিবি এবং এখানে দায়িত্বরত দেশি-বিদেশি এনজিও সংস্থাগুলোকে।

সূত্র : বিডি-প্রতিদিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়