আন্তর্জাতিক ডেস্ক:ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী ইসরাইলের বিরুদ্ধে নানা কৌশলে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
লেবাননের প্রতিরোধকামী আলেমদের আন্তর্জাতিক জোটের দ্বিতীয় সম্মেলন উপলক্ষে সংস্থার মহাসচিব শেখ মাহের হামুদের কাছে পাঠানো বার্তায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ওই আহ্বান জানান। তিনি তার বার্তায় আরো বলেছেন, 'মুসলিম দেশগুলোর ধর্মীয় নেতারা, বুদ্ধিজীবী, চিন্তাবিদ ও রাজনীতিবিদরা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে পারেন।' তিনি বলেন, 'ইসরাইল বিরোধী পবিত্র সংগ্রামের ভবিষ্যত উজ্জ্বল।'
দখলদার ইসরাইলের বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং এ ক্ষেত্রে ধর্মীয় নেতাদের ভূমিকা আগ্রাসন মোকাবেলায় প্রতিরোধের বীরত্বগাথা হিসেবে এমন এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে যেখানে শয়তানী শক্তির সঙ্গে আপোষ করার কোনো সুযোগ থাকবে না। এ কারণেই ইসরাইল মধ্যপ্রাচ্যে তৎপর প্রতিরোধ সংগ্রামীদের ব্যাপারে প্রচণ্ড আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে এবং নানা কৌশলে ইসরাইল বিরোধী শক্তিকে দুর্বল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ইসরাইলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র ২০১৬ ও ২০১৭ সালে লেবাননের হিজবুল্লাহকে ইসরাইলের জন্য প্রধান হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ইসরাইলের ওই গবেষণা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের কঠিন মনোবল ছাড়াও তাদের রয়েছে নিখুঁত ও ব্যাপক ধ্বংস ক্ষমতা সম্পন্ন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, পাইলটবিহীন বিমান, ভূমি থেকে সমুদ্রে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এ ছাড়া, ইসরাইলের বিভিন্ন শহর দখল করে নেয়ার মতো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চৌকশ বাহিনী রয়েছে হিজবুল্লাহর।
বর্তমানে আমেরিকা ও ইসরাইলের প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিরোধকামী শক্তিগুলোকে দুর্বল করে দেয়া। প্রতিরোধ শক্তিগুলোর ওপর মার্কিন চাপ ও নিষেধাজ্ঞা, অপপ্রচার এবং সৌদি আরবসহ রাজতন্ত্রশাসিত আরো কয়েকটি আরব দেশের সহযোগিতায় ইসরাইল তার ওই লক্ষ্য বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। ইসরাইলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান আমুস ইয়াদলিন ইন্টারনেট ভিত্তিক একটি সাইটে প্রকাশিত নিবন্ধে সৌদি আরব, তুরস্ক, জর্দান, মিশরসহ আরো কয়েকটি মিত্র দেশকে সঙ্গে নিয়ে কৌশলগত আঞ্চলিক জোট গঠনের জন্য ইসরাইলের নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু এতো চেষ্টার পরও এ অঞ্চলের প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলো শত্রুর মোকাবেলায় দিনকে দিন শক্তিশালী হচ্ছ।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ১৯৬৭ সালে ছয়দিনে যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জেনারেল এভিগডোর কোহলানি বলেছেন, "তেলআবিবের এটা স্বীকার করা উচিত এ অঞ্চলের প্রতিরোধকামী শক্তিগুলোর সঙ্গে যুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে তারা কোনো শিক্ষা নেয়নি।" তিনি বলেন, " প্রতিরোধ শক্তিগুলোর কাছে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে এটা জানার পরও আমরা যুদ্ধ শুরু করেছিলাম যা করা উচিত হয়নি।"
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিরোধ শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইসরাইলের পরাজয় থেকে বোঝা যায়, নানা উপায়ে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে সবসময়ই সাফল্য ও বিজয় অর্জন সম্ভব। এ কারণে ইসরাইল অসংখ্যবার বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে।
যাইহোক, এইসব বাস্তবতার আলোকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতাও ইসরাইলের বিরুদ্ধে নানা কৌশলে সর্বাত্মক সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। - পার্সটুডে।
আপনার মতামত লিখুন :