আবু সাইদ: বিধানসভা ভোটের আগে গুজরাত সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফের নিশানা করলেন কংগ্রেস সহ সভাপতি রাহুল গান্ধী। তাঁর দাবি, রাজ্যে ভোটের দিন শক লাগবে বিজেপির। এর পাশাপাশি ভরুচের জনসভা থেকে বিদ্যুত, সেচের জল ও কৃষকদের সমস্যা নিয়ে গুজরাতের বিজেপি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন রাহুল।
ভারুচে দাঁড়িয়ে কংগ্রেসে উন্নয়নের গুজরাত মডেলেরও তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই মডেল শিল্পপতিদের জন্য, গরিবদের জন্য নয়। তাঁর কটাক্ষ, গরিবের কাছ থেকে জমি, বিদ্যুত্ ও জল নিয়ে শিল্পপতিদের দাও-এটাই মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানির গুজরাত মডেল। চিকিত্সার জন্য টাকা দাও। টাকা না থাকলে চিকিত্সাও মিলবে না। এটাই গুজরাত মডেল’।
বিশ্বব্যাঙ্কের সহজে ব্যবসা করার মাপকাঠিতে এই প্রথম একশোর গণ্ডিতে পা রেখেছে ভারত। এই মাপকাঠিকে সরকারের সাফল্যের হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি। এ ব্যাপারে রাহুল বলেছেন, হাতেগোনা কয়েকজনের পক্ষেই ব্যবসা করা সহজ হয়েছে, ছোট ব্যবসায়ীদের নয়। তিনি বলেছেন, ছোট ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞাসা করলেই বোঝা যাবে ব্যবসা কতটা সহজ হয়েছে। নোট বাতিল ও জিএসটি-তে সমস্যার মুখে পড়েছেন ছোট ব্যবসায়ীরা। রাহুল আরও বলেছেন, কালো টাকা তো সুইস ব্যাঙ্কে রয়েছে। গত তিন বছরে মোদি সরকার কতজন সুইস ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট থাকা ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন রাহুল।
প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ঘনিষ্ঠ শিল্পপতিদের পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস সহ সভাপতি।
জাম্বুসরের জনসভায় ফের জিএসটি-কে ‘গব্বর সিংহ ট্যাক্স’ অ্যাখা দিয়েছেন রাহুল। নোট বাতিল ও জিএসটি নিয়ে এভাবেই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ফের তোপ দেগেছেন রাহুল।
মোদি সরকারের বিরুদ্ধে কর্মসংস্থান তৈরিতে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে ফের সরব হয়েছেন রাহুল। তিনি বলেছেন, ভারতে প্রতিদিন ৪৫০ জনের রোজগার মেলে। যেখানে চীনে দিনে ৫০ হাজার তরুণকে কাজ দেওয়া হয়।
মোদির মেক ইন ইন্ডিয়া প্রকল্পের ব্যর্থতার অভিযোগও তুলেছেন রাহুল। তিনি বলেছেন, ‘আপনার ফোনটা উল্টে দেখুন—সেখানে কি মেক ইন ইন্ডিয়া লেখা রয়েছে? না, লেখা রয়েছে মেড ইন চায়না। ফোনের কোনও বোতামে যখনই হাত দেন, চীনের এক তরুণ তখন কাজ পান’।
৯ ডিসেম্বর গুজরাত বিধানসভা ভোটের প্রথম দফা। তার আগে আজ থেকে তিন দিনের সফরে গুজরাতে কংগ্রেস সহ সভাপতি রাহুল গান্ধী। সকাল ১১টায় ভারুচে সভা দিয়ে নবসৃজন যাত্রা শুরু করেন রাহুল। ভরুচ ছাড়াও মূলত দক্ষিণ গুজরাতের তাপি, বলসার, নবসারি ও সুরাতে একাধিক সভা ও সমাবেশ রয়েছে রাহুলের। কথা বলবেন কৃষক ও শিল্পপতিদের সঙ্গেও। নয়ের দশকে দক্ষিণ গুজরাতের একটা বড় অংশই কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি ছিল, ধীরে ধীরে যা চলে যায় বিজেপির দখলে।এবার সেই গড়ই পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে ঝাঁপাচ্ছেন কংগ্রেসের সহ-সভাপতি।
ভরুচ জেলাতেই শৈশব কেটেছিল রাহুলের দাদু ফিরোজ গান্ধীর। এখান থেকেই মুম্বইতে এসেছিলেন ফিরোজ। ভরুচ কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেলেরও জেলা।সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
আপনার মতামত লিখুন :