ইসমাঈল হুসাইন ইমু : আরাম আয়েশে নির্ঝঞ্জাট যাত্রার জন্য লঞ্চে দক্ষিণাঞ্চলে বেশিরভাগ লোক যাতায়াত করে থাকে। নতুন নতুন লঞ্চও বেড়েছে এই নৌ রুটে। তবে অত্যাধুনিক এসব লঞ্চে সেবার নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। মোটা অংকের টাকা ভাড়া নিয়ে লঞ্চের দোতলা ও তিনতলায় কেবিনের সামনের ফ্লোরে যাত্রীদের ঢালাও বিছানায় পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এতে লঞ্চ ভ্রমনকারি অনেকেই এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে পটুয়াখালীর উদ্দেশ্যে ‘সুন্দরবন-৮’ এ রওয়ানা হন মুবিন ও মামুন নামের দুই যাত্রী। তারা জানান, চাঁদপুর লঞ্চঘাট পার হওয়ার পরপরই দেখা যায় দোতলা ও তিন তলার ফ্লোর দখল হয়ে গেছে। কেবিনে থাকা যাত্রীরা পায়ে হাঁটার পথও পাচ্ছে না। এ অবস্থায় লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে তাদের সোজা উত্তর- মানুষকে সেবা দিচ্ছে। ২ হাজার টাকা দিয়ে কেবিন ভাড়া নিয়েছেন ওই দুই যাত্রী। অথচ ফ্লোরের ভাড়া মাত্র আড়াইশ’। জড়োসড়ো হয়ে ফ্লোরে বিছানা করে শুয়ে থাকতে দেখা যায় অনেক যাত্রীকে। এসব যাত্রী সাধারনত নিচতলায় বিছানা পেতে শুয়ে থাকে। লঞ্চের কিছু অসাধু কর্মচারীর সহায়তায় লঞ্চ ছাড়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে দোতলা তিন তলায় উঠে পড়ে। এতে কেবিনে থাকা যাত্রীদের অনেক সময় লাগেজসহ মূল্যবান জিনিষপত্র চুরির ঘটনাও ঘটছে।
এদিকে তিনদিন পর ঢাকায় ফেরার সময় ওই দুই যাত্রী লঞ্চ পাল্টে ওঠেন ‘কীর্তনখোলা-২’ এ। এ লঞ্চেও প্রায় একই অবস্থা লক্ষ্য করেন তারা। বরিশাল-২ এর থেকেও বেশি যাত্রী দোতলা ও তিনতলার কেবিন ফ্লোরে শুয়ে থাকতে দেখেছেন তারা। এ দুই যাত্রী ছাড়াও অনেকেই জানান, আরামে যেতে লঞ্চে চড়েন সকলে। কেবনি ভাড়া নেওয়া মানেই আরও নির্ঝঞ্জাট যাত্রা। তবে কেবিন ছাড়া বাড়তি যাত্রী বোঝাই করে নিলে আরামের বদলে আতঙ্কে কাটে তাদের। বেশিরভাগ সময়ই চুরির ঘটনা ঘটছে। তাছাড়া মহিলা যাত্রীরা রাতে বাথরুমে যেতেও ভয় পান। কারণ ফ্লোরে অপরিচিত লোকেরা চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকেন। সরু রাস্তা দিয়ে লঞ্চের অপর মাথায় বাথরুমে যেতেও বেশকিছু সময় লাগে। রিভার সাইডের কেবিন গুলোতে রাতে লাইটও বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে বারান্দা দিয়ে বাথরুমে যাবার সময় ভুতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়। আনন্দের বদলে নিরানন্দের যাত্রায় পরিনত হয়েছে এখন লঞ্চ।
আপনার মতামত লিখুন :