শিরোনাম
◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো

প্রকাশিত : ০১ নভেম্বর, ২০১৭, ০১:০১ রাত
আপডেট : ০১ নভেম্বর, ২০১৭, ০১:০১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রোহিঙ্গা নিয়ে রাজনীতি

মামুন : রোহিঙ্গা নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের মধ্যে চলছে পাল্টাপাল্টি দোষারোপের রাজনীতি। বিএনপি বলছে, রোহিঙ্গাদের জন্য বর্তমান সরকার কিছুই করেনি। সরকার রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে ব্যর্থ হয়েছে। কূটনৈতিকভাবেও সরকার চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।

এদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে, নির্যাতিত ও মানবেতর জীবনযাপনকারী রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার পর থেকে তাদের থাকা, খাওয়া, চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ সব রকম সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়েছে। এজন্য শেখ হাসিনা বিশ্ববাসীর কাছে শান্তির কন্যা ও মানবতার মা উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। সারাবিশ্ব তার প্রশংসা করছে।

 

মিয়ানমারে সেনা অভিযানের মুখে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার বিষয় নিয়ে সরকারও দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিল। একপর্যায়ে সব মহল থেকেই দাবি ওঠে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার বিষয়ে। প্রাণভয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা যখন নৌকা নিয়ে দিনের পর দিন ভাসছিল নদীতে। নদীর মধ্যে দিনের পর দিন যখন না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন শুরু করে তখন মানবতার বিষয় বিবেচনা করে সরকার তাদের আশ্রয় দেয়।

বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘের অধিবেশনে বক্তব্য দিয়ে তাদের দেশে ফেরত নিতে জোরালো ভূমিকা পালন করার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ বাহবাও কুড়িয়েছেন। বিশ্ব নেতাদের প্রশংসা পেয়েছেন। বিশ্বের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা শেখ হাসিনাকে মাদার অব হিউম্যানিটি, শান্তির কন্যা ও মানবতার মা উপাধিতে ভূষিত করেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার পর থেকে সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা মানবিক দিক বিবেচনা করে সাহায্য সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। তাদের থাকা, খাওয়া, চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ সব রকম সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় আশ্রিত রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের তুলনায় ভালো জীবনযাপন করছে। কিন্তু এটাকে নিয়ে কিছু রাজনৈতিক দল রাজনীতি করার চেষ্টা করছে। এটা রোহিঙ্গাদের জন্য মোটেই কল্যাণকর হবে না। সবাই মিলেই রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য আন্তর্জাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করতে হবে।

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রথমেই বলেছিলেন রোহিঙ্গা নিয়ে কোনো রাজনীতি চলবে না। মানবিক সাহায্য নিয়ে রাজনীতি চলবে না। বিপন্ন মানুষের সঙ্গে রাজনীতির খেলা চলবে না। আমরা রোহিঙ্গা নিয়ে রাজনীতি করিনি এবং কাউকে করতেও দেব না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, রোহিঙ্গাদের মধ্যে সবাই নিরাপদ নয়। এর মধ্যে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী থাকতে পারে। রোহিঙ্গারা ইয়াবা নিয়ে ঢুকছে। অস্ত্রও থাকতে পারে। রোহিঙ্গাদের স্রোতের ঢলে বিপথগামী মানুষও থাকতে পারে। এটি অসম্ভব নয়। এত রোহিঙ্গা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ নয়। এজন্য সরকারি বিভিন্ন দফতর, বিভাগ, প্রশাসনকে সচেতন থাকতে হবে। সম্প্রতি খালেদা জিয়ার বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়া আসলে মানবতার জন্য কক্সবাজার যাননি, রাজনৈতিক শো-ডাউনই ওনার প্রধান উদ্দেশ্য।

মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, হত্যা-নির্যাতনের শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসার তিন মাস পর খালেদা জিয়া দরদ দেখাতে কক্সবাজার গিয়েছিলেন। উনি তো আসলে মানবতার জন্য যাননি, রাস্তায় রাস্তায় ফুলের শুভেচ্ছা আর রাজনৈতিক শো-ডাউন করেছেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সোমবার কক্সবাজারে ত্রাণ দিতে গিয়ে বলেছেন, এ সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য কিছুই করেনি। রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত পাঠাতে কুটনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এরা দেশ পরিচালনায় যেমন ব্যর্থ, রোহিঙ্গাদের সাহায্য সহযোগিতা করতেও ব্যর্থ।

এছাড়া বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রায় প্রতিদিনই নয়া পল্টনে বিএনপি অফিসে বসে সংবাদ সম্মেলন করে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের সমালোচনা করছেন এবং সরকারকে এজন্য দোষারোপও করছেন।

রোহিঙ্গাদের বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সোমবার আমাদের নেত্রী বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের যা করা উচিত ছিল, তারা তা করতে পারেনি। সরকার ব্যর্থ হয়েছে। আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, এদের আশ্রয় দিয়ে তাদের খাওয়া-পরার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি কূটনৈতিক চাপও তৈরি করতে হবে, যার মাধ্যমে সরকারের হাত শক্তিশালী হয় এবং জাতীয় ঐক্য তৈরি করে এই সমস্যাকে মোকাবিলা করা যায়। সেটা সরকার করেনি, তারা জাতীয় ঐক্যের ডাক নাকচ করে দিয়েছে।

ফখরুল আরও বলেন, ‘দেশনেত্রী আহ্বান জানিয়েছেন, সব মানুষকে আজ এক হয়ে এই সংকট মোকাবিলা করতে হবে। আন্তর্জাতিক যেসব সংস্থা রয়েছে, কূটনৈতিকভাবে তাদের ওপর আরও চাপ বাড়াতে হবে, যেন তারা মিয়ানমারের সরকারকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করে।’

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক এ বিষয়ে জাগো নিউজকে বলেন, শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের জন্য কী করেছে এটা সারাবিশ্ব দেখেছে। সারাবিশ্বের বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় শেখ হাসিনার প্রশংসা করে এডিটরিয়াল লেখা হয়েছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম শেখ হাসিনাকে মাদার অব হিউম্যানিটি উপাধি দিয়েছে। সুতরাং বিশ্ব যেখানে দেখেছে, সেখানে খালেদা জিয়ার না দেখলেও চলবে। মিয়ানমার সরকারের অত্যাচার নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে বাবা, মা, সন্তান হারিয়ে যারা বাংলাদেশে অবস্থান নিয়েছে, তাদের খাদ্য, বস্ত্র, আশ্রয়, চিকিৎসাসহ সব ব্যবস্থাই করা হয়েছে। এমনকি ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের সমস্যা একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। রাতারাতি এ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব না। তারপরও তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে কূটনৈতিক চাপ অব্যাহত রয়েছে। জাগোনিউজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়