এম এম লিংকন: ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিতর্ক তুঙ্গে। এমন বিতর্কিত সময়ে সম্প্রতি বেশকিছু ইভিএম আগুনে পুড়ে এবং চুরি হয়ে খোয়া গেছে প্রায় ১২০ টি ইভিএম। মঙ্গলবার নিজ কার্যালয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ রাকিবুল হাসান।
ইভিএম পিডি রাকিবুল হাসান বলেন, কয়েকদিন আগে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে কিছু ইভিএম আমাদের নষ্ট হয়েছে। যেখানে রাখা হয়েছিল সেই গোডাউনে আগুন লেগে যায়। ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রনে আনলেও পানিতে এসব মেশিন নষ্ট হয়েছে। সেখানে ২০০ ইভিএম রাখা হয়েছিল তারমধ্যে ৫০ থেকে ৭০ টার মতন নষ্ট হয়েছে ।
এছাড়া ব্রাক্ষ্মবাড়িয়া কসবায় একটা চুরির ঘটনা ঘটে। উপজেলা অডিটরিয়ামের স্টোর রুমে সে ইভিএম রাখা হয়েছিল। সেখান থেকে যেটা হয় সেটা হলো আমাদের মনিটর চুরি হয়। এছাড়া ঝিনাইদাহ বয়েজ স্কুলে রাখা ছিল কিছু ইভিএম। সেখানে প্রাথমিকের বই রাখা ছিল। বই চুরি হয়। সাথে মনিটর চুরি হয়ে যায়।' কসবা থেকে মনিটর ব্যাটারি চুরি হয়ে যায় বলে যোগ করেন তিনি। দুইটা মিলিয়ে চুরি যাওয়ার সংখ্যা প্রায় ৫০ এর বেশি।
তিনি আরও বলেন,এ ব্যাপারে নির্বাচনী কর্মকর্তারা থানায় মামলা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে পরবর্তী নির্দেশনা সচিবলায় থেকে থানাকে দেয়া হয়েছে। ইভিএম চুরির কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্টোরেজ বা ওয়্যার হাউজ যেটা দরকার সেটা না করে বিভিন্ন জায়গা যেটা পাওয়া যাচ্ছে সেটাতে রাখছে। সেটার প্রোপার সিকিউরিটি বলতে যা বুঝায় সে ধরনের সিকিউরিটি আসলে কোথাও নাই। যার ফলে এই জিনিসগুলো ঘটছে বলে যোগ করেন তিনি। মনটির ব্যাটারি সেটসহ হারাইছে বলে জানান তিনি।
নির্বাচন কমিশনের কাছে ১ লাখ ৫০ হাজারের মতন ইভিএম সংরক্ষণ রয়েছে। তবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৯৩ হাজার মতন ইভিএম রাখা হয়েছে। যেখানে যখন ইলেকশন হয় ওখান থেকে পাঠানো হয়। ইভিএম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ) প্রায় ৫৫ হাজারের মতন ইভিএম সংরক্ষিত রয়েছে।
চুরি এবং নষ্ট ঠেকাতে কি ধরণের ব্যবস্থা নেয়া যায় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,সঠিক গুদাম থাকতে হবে। প্রস্তুকারী প্রতিষ্ঠান যেভাবে রাখছে ওখানে কোনো সমস্যা হয় নাই। পাচঁ বছর ধরে তারা রাখছে। চার্জ দিয়ে স্ট্যন্ডার্ড বজায় রেখে যদি ১০ টা গুদাম করা যায় তাহলে সেটা নিরাপদে রাখা সম্ভব।না হলে এটা সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দিয়ে রাখা সম্ভব না। বাসা বাড়িতে রেখে এটা সম্ভব না।
নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে কনসার্ণ জানিয়ে তিনি বলেন,কমিশন জানে। তারা সাধ্যমতো চেষ্টা করছে এটাকে ভালোভাবে রাখার। ত্রিশটা জেলায় বাসা বাড়িতে রাখা হচ্ছে। এসব জেলায় ঝুকি নিয়েই রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি। বর্তমানে যে ইভিএম রয়েছে তা দিয়ে ৭০ থেকে ৮০ টি সংসদীয় আসনে ভোট করা সম্ভব বলে জানান তিনি। মাঠে যে ইভিএম রয়েছে তার কন্ডিশন যাচাই করলে আরো সঠিকভাবে বলা যাবে বলে মনে করেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :